নওগাঁয় ক্লুলেস হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন, আসামি আটক

নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁ সদর থানার হাঁপানিয়া ইউপির উল্লাসপুর গ্রামের মাছ চাষী মোসলেম উদ্দিনের পুকুরে গতবছরের ১৪ জুন সকালে ভাসমান অবস্থায় অজ্ঞাত নারীর ভাসমান মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন থানায় সংবাদ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থালে থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।

 

উক্ত ঘটনায় হাঁপানিয়া ইউপি পরিষদের গ্রাম পুলিশ বাদী হয়ে নওগাঁ সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করলে পরিচয় সনাক্ত করে মোঃ ফারুক হোসেন (৫০) নামের এক যুবককে আটক করে। আটককৃত ফারুক হোসেন সদর থানার চকজাফরাবাদ গ্রামের মোঃ সামাদ মন্ডলের ছেলে। থানা সূত্রে জানা যায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমানের পরিকল্পনায় জেলা পুলিশের টিম নওগাঁ সদর থানার নিখোঁজ জিডি অনুসন্ধানে নেমে অজ্ঞাতনামা মৃত নারীর পরিচয় উৎঘাটন করে। তার পরিচয় উৎঘাটনের সাথে সাথেই তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকার কুড়িল এলাকা হতে গত ২৭ জুলাই নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করে অপরাধীর সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে তাকে আটকের জন্য অভিযান পরিচালনা করে। সে পুলিশের হাত হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য ঢাকা, ফরিদপুর এবং নওগাঁর বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে থাকা অবস্থায় রোববার ভোর সোয়া ৪টার দিকে তার মামা বাড়ী নওগাঁ সদর থানার চন্ডিপুর ইউনিয়নের শিমুলিয়া গ্রাম থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফৌজিয়া হাবিব খান এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আব্দুল গফুর, নওগাঁ সদর থানা এবং এসআই/মোঃ বদরুদ্দোজা জিমেল, ডিবি, নওগাঁসহ একটি চৌকস দল মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে। এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে সে বলে গতবছরের ১৩ জুন সকাল অনুমান সাড়ে ১১ টার দিকে মৃত কল্পনা চৌধুরীর সাথে নাটোর রেলস্টশনে দেখা হয়। দুপুর অনুমান দেড় টার দিকে সান্তাহার রেলস্টেশনে নেমে দুইজনের কথা বার্তার এক পর্যায়ে ফারুক হোসেন শারিরীক সম্পর্কের জন্য প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবে সম্মত হলে দুই জন কল্পনার কাছে থাকা মালামাল কল্পনার বাড়ীতে রেখে তারা বিকাল অনুমান সাড়ে ৪ টার সময় সদর থানার নুনিয়া পট্টিতে যায়।

 

 

 

 

 

 

সেখানে কল্পনা তার মেয়ের সাথে সাক্ষাত করার পরে ফারুকের সাথে সন্ধ্যা বেলা হাঁপানিয়া ইউপির উল্লাসপুর গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা করে। উল্লাসপুর গ্রামের মাছ চাষী মোঃ মোসলেম উদ্দিনের পুকুরের পূর্ব পার্শে নির্জন স্থানে কল্পনাকে নিয়ে ফারুক হোসেন শারিরীক সম্পর্ক করার সময় কল্পনা বাধা দেয়। সেসময় ফারুক হোসেন জোরপূর্বক শারিরীক সম্পর্ক করার চেষ্টা করলে কল্পনা চৌধুরী জোরে চিৎকার করার চেষ্টা করে। তখন ফারুক তার গলা চেপে ধরলে শ্বাসরোধ হয়ে কল্পনা মারা যায়। তার মৃত্যু হলে সে মরদেহ মোসলেম উদ্দিনের পুকুরে ফেলে দিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে বাড়ীতে চলে যায়। সত্যতা নিশ্চিত করে নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান বলেন, এঘটনায় এক যুবককে আটক করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালতে আসামীর জবানবন্দি ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় লিপিবদ্ধের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

 

সানশাইন/সোহরাব

 


প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২৩ | সময়: ৪:৩২ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine