‘ইভিএম সোজাসাপটা ব্যাপার’

স্টাফ রিপোর্টার : প্রথম বারের মত রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ব্যালেটে সিল মারার বদলে প্রথম বারের মত নগরের বাসিন্দারা ইভিএমে ভোট দিয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। সব বয়সী নারী ও পুরুষ ভোটাররা কোনো বিঘ্ন ছাড়াই ভোট দিতে পেরছেন বলে জানিয়েছেন।
প্রথমবার ভোট দিতে পেরে তরুণ ভোটাররাও বেশ উচ্ছ্বসিত। তবে নির্বাচনকালীন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যানবাহন চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করায় কেন্দ্রে ভোট দিতে গিয়ে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে সিটির ভোটারদের। বয়স্করা বলছেন, খুব সাবধানে ভোট দিচে হচ্ছে।
রাজশাহী নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের ইসলামিয়া কলেজে হাসিমুখে ভোট দিয়ে বের হলেন মো. আরিফুল ইসলাম। ভোট দেয়ার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, সুন্দর ভাবে ভোট দিয়েছি। ভোট দিতে কোনো সমস্যা হয় নাই। আগে ইভিএমে ভোট না দিলেও একদম সহজ পদ্ধতি। তবে যারা একটু বেশি বয়ষ্ক বা একেবারেই শিক্ষিত না তাদের জন্য মনে হয় কঠিন। তাছাড়া আমাদের মত ইয়াংদের জন্য কোনো ব্যাপারই মনে হয় নাই।
নগরীর মেহেরচণ্ডী এলাকার ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. হারু বলেন, এবার প্রথম ইভিএমে ভোট দিয়েছি। আগের বার ব্যালটে দিয়েছিলাম। প্রথমে ভাবছিলাম কঠিন হবে, পরে দেখি একেবারে সোজা-সহজ পদ্ধতি। মোবাইলের মত ছবি আসলো, বাটন চিপলাম। আর ভোট হয়ে গেলো।
নগরীর কাজলা এলাকার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ‘ইভিএম ভোট প্রথম দিনু। প্রথমে কঠিন মনে ইইচ্ছিলো। কিন্তু ভোট দিতে লাগি দেখনু কঠিন না। মেশিনে বলে দিচ্ছে যে আপনার ভোট রাইট হইছে। এই জিনিসটা খুব সুন্দর, ভালো লাইগলো। আগের সিল মারার চেয়ে এটা বেশি সহজ লাইগলো’।
বুধবার সকালে ভোট শুরু হওয়ার পর কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। নগরীর বিনোদপুর এলাকার বাসিন্দা আব্দুল লতিফ বলেন, সবাই ঠিকঠাক ভোট দিয়েছে। তবে সকালের দিকে ভোটার কম ছিলো। পরে ধীরে ধীরে মানুষ আসা শুরু করে।
স্বামীর সঙ্গে হুইল চেয়ারে ভোট দিতে এসেছিলেন আমেনা খাতুন। তিনি বলেন, ভালোই লাগলো ভোট দিতে। আগেরবার তো সিল দিসিলাম। এবার মেশিনে ভোট দিলাম। বেশ ভালইতো, একেবারে সোজাসাপটা। খালি বুঝে নিলেই হলো।
এদিকে নির্বাচনকালীন যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করায় নগরের ভেতরে যানবাহনের উপস্থিতি অনেক কম লক্ষ্য করা যায়। এতে ভোট কেন্দ্রে আসা যাওয়া নিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়েন ভোটাররা। তাদের মধ্যে অনেকে দূর থেকে হেঁটে এসে কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট দিয়েছেন। মির্জাপুর এলাকার মো. সালাম শেখ বলেন, ভোট তো সুন্দরভাবে দিছি। কিন্তু ভোটকেন্দ্রে আসতে একটু কষ্ট হইছে। রাস্তাঘাটে রিক্সা-অটো কিছু পাইনি। পায়ে হাঁইটে এসে ভোট দিছি।
জীবনে প্রথম ভোট দিলেন সদ্য ভোটার হওয়া কলেজ ছাত্র রিফাত আহমেদ। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি বলেন, প্রথমবার ভোট দেয়ার অনুভুতিটাই অন্যরকম। শুরু থেকে প্রার্থীর লোকজন এসে আমার কাছে ভোট চাইতো। আজকেও ভোট দিতে যাবার সময় ভোট আর সমর্থন চাইলো। হাসি মুখে কথা বললো। বিষয়টা খুব ভালো লেগেছে। মনে হয়েছে যেন আমি খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। ভোট দিতে পেরে আমি খুব খুশি। ইভিএম নিয়ে এ ছাত্র জানায়, আমিতো কখনো ব্যালটে সিল মেরে ভোট দেইনি। শুরুতেই ইভিএম। এটাই তো র্স্ম্টা পদ্ধতি। ভোটের পদ্ধতি তো এমন হওয়ায় ভালো।


প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৩ | সময়: ৪:১০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ