লিটনের উন্নয়ন চিত্র : নগরজুড়ে রাস্তা-ড্রেন নির্মাণে বেড়েছে নাগরিক সুবিধা

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের মেয়াদকালে ‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে রাস্তা, ড্রেন, ফুটপাত নির্মাণ করা হয়েছে। রাস্তা, ড্রেন ও ফুটপাত নির্মাণের কারণে নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারছেন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ওয়ার্ড পর্যায়ে নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বস্তিতে নগরবাসী।
রাসিকের প্রকৌশল বিভাগসূত্রে জানা যায়, ‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় গত ৫ বছরে ৩০টি ওয়ার্ডে ১৬৯ দশমিক ০৮৬ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তা, ১৭৬ দশমিক ৯৩২ কিলোমিটার সিসি রাস্তা, ১৮৫ দশমিক ১৭৪ কিলোমিটার ড্রেন, ৭০ দশমিক ৫ কিলোমিটার ফুটপাত নির্মাণ করা হয়েছে। আরো অনেক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে।
‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ১নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৭ দশমিক ৮৭৮ কি.মি., সিসি রাস্তা ৮ দশমিক ২৬১ কি.মি., ড্রেন ১০ দশমিক ৮৯ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি., ২নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৭ দশমিক ০০৭ কি.মি., সিসি রাস্তা ৮ দশমিক ৫৮১ কি.মি., ড্রেন ১৩ দশমিক ৫৮৪ কি.মি., ফুটপাত ৩ কি.মি., ৩নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৫ দশমিক ০৩ কি.মি., সিসি রাস্তা ১১ দশমিক ০৩১ কি.মি., ড্রেন ৯ দশমিক ৭৫৮ কি.মি., ফুটপাত ২ দশমিক ৫ কি.মি., ৪নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৬ দশমিক ৯২৭ কি.মি., সিসি রাস্তা ৫ কি.মি., ড্রেন ৬ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি., ৫নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৪ দশমিক ৯২৭ কি.মি., সিসি রাস্তা ৯ কি.মি., ড্রেন ২দশমিক ৮৩৩ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি.,, ৬নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৪ দশমিক ৭৭ কি.মি., সিসি রাস্তা ২ দশমিক ৮৮৭ কি.মি., ড্রেন ৩ দশমিক ৪৫৮ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি., ৭নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৪ দশমিক ৩৪ কি.মি., সিসি রাস্তা ২ দশমিক ৩৮ কি.মি., ড্রেন ২ কি.মি., ফুটপাত ১ কি.মি.,৮নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৭ কি.মি., সিসি রাস্তা ৬ কি.মি., ড্রেন ৫ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি.,৯নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৫ দশমিক ২২৭ কি.মি., সিসি রাস্তা ৪ কি.মি., ড্রেন ১ দশমিক ৭৭ কি.মি., ফুটপাত ১ কি.মি.,১০নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৫ কি.মি., সিসি রাস্তা ১ দশমিক ৮০৯ কি.মি., ড্রেন ১ দশমিক ৬৭২ কি.মি., ফুটপাত ১ কি.মি., ১১নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৪ কি.মি., সিসি রাস্তা ৪ কি.মি., ড্রেন ৪ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি., ১২নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৪ কি.মি., সিসি রাস্তা ৩ কি.মি., ড্রেন ৩ কি.মি., ফুটপাত ১ কি.মি., ১৩নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৪ কি.মি., সিসি রাস্তা ২ কি.মি., ড্রেন ৩ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি., ১৪নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৫ দশমিক ১৯৫ কি.মি., সিসি রাস্তা ৬ দশমিক ০৪ কি.মি., ড্রেন ১৪ দশমিক ১২৫ কি.মি., ফুটপাত ৫ কি.মি., ১৫নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৪ দশমিক ৫ কি.মি., সিসি রাস্তা ৩ দশমিক ৫৪৯ কি.মি., ড্রেন ৩ দশমিক ৩৯৪ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি., ১৬নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৭ দশমিক ৩৬৫ কি.মি., সিসি রাস্তা ১৩ দশমিক ৯৮২ কি.মি., ড্রেন ৬ কি.মি., ফুটপাত ৪ কি.মি., ১৭নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৫ দশমিক ০৯ কি.মি., সিসি রাস্তা ৯ দশমিক ৩৭১ কি.মি., ড্রেন ১৫ দশমিক ৬৯৯ কি.মি., ফুটপাত ৬ কি.মি., ১৮নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৫.৬ কি.মি., সিসি রাস্তা ৩.৬৫ কি.মি., ড্রেন ৫.৬৭ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি., ১৯নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৭ কি.মি., সিসি রাস্তা ৩ দশমিক ৮ কি.মি., ড্রেন ৫ দশমিক ৭১ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি., ২০নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৪ কি.মি., সিসি রাস্তা ২ কি.মি., ড্রেন ২ কি.মি., ফুটপাত ১ কি.মি., ২১নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৭ কি.মি., সিসি রাস্তা ২ কি.মি., ড্রেন ৩ কি.মি., ফুটপাত ১ কি.মি., ২২নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৬ কি.মি., সিসি রাস্তা ৩ কি.মি., ড্রেন ২ কি.মি., ফুটপাত ১ কি.মি., ২৩নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৭ কি.মি., সিসি রাস্তা ৬ কি.মি., ড্রেন ৩ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি., ২৪নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৮ কি.মি., সিসি রাস্তা ৫ কি.মি., ড্রেন ২ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি., ২৫নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৫ দশমিক ৩৮ কি.মি., সিসি রাস্তা ২ দশমিক ৫৩৭ কি.মি., ড্রেন ৩ দশমিক ২২৭ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি., ২৬নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৫ দশমিক ০৬ কি.মি., সিসি রাস্তা ১৫ দশমিক ৬০৮ কি.মি., ড্রেন ১৯ দশমিক ৮৬৫ কি.মি., ফুটপাত ৫ কি.মি., ২৭নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৬ কি.মি., সিসি রাস্তা ২ দশমিক ৩৫ কি.মি., ড্রেন ২ দশমিক ৯০ কি.মি., ফুটপাত ১ কি.মি., ২৮নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৪ দশমিক ৭৩২ কি.মি., সিসি রাস্তা ৫ দশমিক ০৪৬ কি.মি., ড্রেন ৫ দশমিক ৫৫৫ কি.মি., ফুটপাত ২ কি.মি., ২৯নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৬ কি.মি., সিসি রাস্তা ১৫ দশমিক ৮১৬ কি.মি., ড্রেন ১৪ দশমিক ৭১৩ কি.মি., ফুটপাত ৫ কি.মি., ৩০নং ওয়ার্ডে কার্পেটিং রাস্তা ৫ দশমিক ৯৮৫ কি.মি., সিসি রাস্তা ৯ দশমিক ২৩৪ কি.মি., ড্রেন ৯ দশমিক ৩৫১ কি.মি., ফুটপাত ৪ কি.মি.।
এছাড়া ‘রাজশাহী মহানগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ৩০টি ওয়ার্ডের ক্ষতিগ্রস্থ ও নতুন কার্পেটিং সড়ক নির্মিত হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় নগরীর বিলসিমলা থেকে কাশিয়াডাঙ্গা সড়ক ফোরলেনে উন্নীত করা হয়েছে, সাথে ড্রেন, ফুটপাত ও বাই সাইকেল লেন নির্মিত হয়েছে। সড়কটিতে দৃষ্টিনন্দন প্রজাপতি সড়কবাতি স্থাপন করা হয়েছে। মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর সরণি সড়কটির রক্ষণাবেক্ষণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও প্রকল্পের আওতায় ৩৬.৮১ কিলোমিটার নতুন সড়ক, রাস্তা সংস্কার ৫৮.৬৯ কি.মি. ড্রেন ৩৩.৬০ কি.মি এবং ফুটপাত ১২.৪৩ কি.মি কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে।
‘রাজশাহী মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ডে ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক ও নর্দমা সমূহের উন্নয়ন’ শীর্ষক প্রকল্পের মহানগরীর সোনাদীঘি মোড় হতে সদর হাসপাতাল মোড় পর্যন্ত সড়কটির দুই পাশে দৃষ্টিনন্দন ফুটপাথ নির্মাণ এবং প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় কার্পেটিং নতুন সড়ক ৪.৩২ কি.মি. কার্পেটিং রাস্তা সংস্কার ১.৪২কি.মি এবং সিসি রাস্তা ৫৩.২৯ কি.মি. এবং ৩৬.৭২ কি.মি. ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে।
‘রাজশাহী মহানগরীর জলাবদ্ধতা দূরীকরণার্থে নর্দমা নির্মাণ (৩য় পর্যায়)’ প্রকল্পের আওতায় ৬.৩৬ কিলোমিটার প্রাইমারী, ১৯.২৯ কিলোমিটার সেকেন্ডারি এবং ৬৭.৭৫ কিলোমিটার টারশিয়ারি নর্দমা নির্মিত হয়েছে। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে স্বল্প সময়ের মধ্যে নর্দমার কাঁদামাটি অপসারণে ৯টি প্রাইমারি নর্দমার পাশে মোট ৮.৬৭ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পটির আওতায় নির্মিত নর্দমাসমূহে মহানগরীর পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থায় ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে।
মেহেরচণ্ডী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আল মামুন বলেন, ২৬নং ওয়ার্ড পিছিয়ে পড়া ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে একটি ওয়ার্ড ছিল। সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন পিছিয়ে পড়া ওয়ার্ডগুলোতে রাস্তা, ড্রেন, ঈদগাহ, গোরস্থান ইত্যাদির চমৎকার উন্নয়ন কাজ করেছেন। ২৬নং ওয়ার্ডে কিছু এলাকা ছিল আগে যেখানে ৯ মাস মানুষকে পানিতে চলাফেরা করতে হতো। সেখানে রাস্তা ও ড্রেন হয়েছে। ফলে আগের মতো জলাবদ্ধতা নেই, কমে গেছে মানুষের দুর্ভোগ। ওয়ার্ডের উন্নয়নে এলাকাবাসীও অনেক খুঁশি।
১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কুদ্দুস খান বলেন, গত ৫ বছরে রাজশাহীতে যে উন্নয়ন হয়েছে, আমি আমার ৬৩ বছর বয়সে এমন উন্নয়ন আগে দেখিনি। ১নং ওয়ার্ডে এমন কিছু এলাকা যে আমরা কখনো ভাবিনি সেগুলোতে রাস্তা হবে, ড্রেন হবে। ওয়ার্ড পর্যায় থেকে শুরু করে পুরো সিটি কর্পোরেশনের দিকে তাকালে সাধারণ মানুষ হিসেবে মানুষ হিসেবে আমাদের মন ভর যায়। শহরটি দেখি মনে হয় এটি বিদেশের কোন শহর। প্রশস্ত রাস্তা, আলোকবাতি, ফুলে ফুলে সাজানো সড়ক বিভাজক-এসব দেখে আমরা মুগ্ধ হই।
সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নগরীর প্রধান প্রধান প্রতিটি সড়ক প্রশস্তকরণের পাশাপাশি ওয়ার্ড পর্যায়ে ব্যাপক উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ড্রেন, রাস্তা ও ফুটপাত নির্মাণ করা হয়েছে। নাগরিকরা যাতে বাড়ি থেকে বের হয়েই পাকা সড়কে উঠতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। পিছিয়ে পড়া ওয়ার্ডগুলোতে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়ন করা হয়েছে। এখনো কিছু কাজ বাকি আছে। আমি আগামীতে নির্বাচিত হলে অসমাপ্ত কাজগুলো সমাপ্ত করবো। পিছিয়ে পড়া ওয়ার্ডগুলোতেও উন্নত নাগরিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে চাই।


প্রকাশিত: জুন ১৩, ২০২৩ | সময়: ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ