ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণার দায়ে তিনজনের জেল-জরিমানা

স্টাফ রিপোর্টার : ঋণ দেওয়ার নামে প্রতারণা করে ১৪ লাখ ৩৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অপরাধে তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁদের জরিমানাও করা হয়েছে। আজ রোববার সকালে রাজশাহী সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন।
কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া তিনজন হলেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তাড়াশ খাঁপাড়া গ্রামের রাব্বি শাকিল ওরফে ডিজে শাকিল (৩২) ও একই উপজেলার কুসুমবি গ্রামের হুমায়ুন কবীর (২৮) এবং নওগাঁর মান্দা উপজেলার গাড়ীক্ষেত্র গ্রামের হারুন রশিদ ওরফে সাইফুল (২৬)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ইসমত আরা। তিনি বলেন, ‘আসামি শাকিলকে একটি ধারায় পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেছেন আদালত। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ। আরেকটি ধারায় শাকিলকে একই জেল-জরিমানা করা হয়েছে।’
আসামি হারুন ও হুমায়ুনকে একটি ধারায় এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানার অর্থ অনাদায়ে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ। আরেকটি ধারায় আদালত তাঁদের একই কারাদণ্ডাদেশ-জরিমানা করেছেন বলে জানান আইনজীবী ইসমত।
আসামিদের সাজা একটার পর অন্যটা কার্যকর হবে বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় শাকিল ও হারুন আদালতে হাজির ছিলেন। তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামি হুমায়ুন পলাতক, গ্রেপ্তারের পর তাঁর সাজা কার্যকর হবে।
মামলা থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর শাকিল ও হারুনের বিরুদ্ধে বগুড়া সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়। মামলার বাদী বগুড়ার বাসিন্দা আমানত উল্লাহ তারেক। তিনি অভিযোগ করেন, তিনি ও আশিক দৌলাতানা অভি নামের আরেক ব্যবসায়ী ‘ইন্টারন্যাশনাল লোন সার্ভিস’ নামে ফেসবুকে একটি পেজ থেকে ঋণ দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখেন। এরপর যোগাযোগ করলে তাঁদের সাড়ে চার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখানো হয়। এ জন্য ইন্টারন্যাশনাল লোন সার্ভিসের পক্ষ থেকে শাকিল ও হারুন তাঁদের বাড়ি পরিদর্শন করেন।
এরপর শাকিল ও হারুন ৫ শতাংশ কমিশনে ঋণ নিয়ে দিতে চান। এই প্রলোভন দেখিয়ে তাঁরা প্রায় ১৪ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। পরে ঋণ দেওয়ার জন্য তাঁরা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের বিভিন্ন কাগজপত্র এবং চেকের স্ক্যান কপি ই-মেইলে পাঠান। কিন্তু ওই চেকের টাকা তোলার মেয়াদ পার হয়ে গেলেও ভুক্তভোগীদের আসল কপি দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে সন্দেহ হলে যাচাই-বাছাই করতে গিয়ে তারেক ও আশিক প্রতারিত হওয়ার বিষয়টি বুঝতে পারেন। এ নিয়ে প্রথমে দুজনের নামে মামলা করা হয়। পরে পুলিশের তদন্তে আরেক আসামি হুমায়ুন কবীরকে শনাক্ত করা হয়। দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আদালত তিন আসামিকেই কারাদণ্ডাদেশ-জরিমানা করেছেন।


প্রকাশিত: জুন ৫, ২০২৩ | সময়: ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ