সর্বশেষ সংবাদ :

খালেদার গাড়ির সামনে বিক্ষোভ করে নেতা হওয়া চাঁদ এখন লাপাত্তা !

নুরুজ্জামান,বাঘা : খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরের সামনে বিক্ষোভ করে নেতা হওয়া আলোচিত সন্ত্রাসী এখন রাজশাহী বিএনপির আহবায়ক। তার রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বিব্রত ক্ষোদ বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা। ইতোমধ্যে তাঁর কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন রাজশাহী মহানগর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে ফুসে উঠেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ ও তার সকল সহযোগী সংগঠন। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ। ফলে জনরস ও পুলিশের ভয়ে এখন তিনি লাপাত্তা ।

স্থানীয় লোকজন জানান, রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার শলুয়া ইউনিয়ন থেকে চেয়ারম্যান হয়ে উঠে আসা এই চাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগের অন্তনাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটূক্তির অভিযোগে গত বছরের ২৬ জুলাই আবু সাঈদ চাঁদের নামে মানহানির মামলা হয়। তার ওই বক্তব্য প্রচারের অভিযোগে আরও সাতজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছিল। রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার আদালতে এ মামলাটি করেছিলেন। এর আগে চারঘাট-বাঘার সাংসদ ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় তার কুশ পুত্তলিকাদাহ করা-সহ বাঘায় ঝাড়ু মিছিল করে তাকে অবাঞ্চিত ঘোষনা করেছিল উপজেলা আওয়ামীলীগ ও সকল সহযোগী সংগঠন।

দলীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চাঁদের বিরুদ্ধে বর্তমানে প্রায় অর্ধ শতাধিক মামলা-সহ অসংখ্য জিডি রয়েছে বিভিন্ন থানায়। তিনি ২০১৪ সালে ট্রেনের লাইনচ্যুত করা থেকে শুরু করে-গাড়ি পুড়ানো, নিজ ওয়ার্ডে নির্বাচনের মাঠ দখল, বোমা হামলা, সরকারি কর্মকর্তাকে মারপিট, ককটেল নিক্ষেপ, হত্যা, জঙ্গী প্রশ্রয় ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড-সহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকায় তার নামে বিস্ফোরক এবং সরকারি কাজে বাঁধা দান ও ২৭ জন নিরিহ বেকার যুবককে চাকরি দেয়ার নামে লক্ষ-লক্ষ টাকা আত্নসাত করার অভিযোগ রয়েছে ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯৬ সালে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছিলো আবু সাঈদ চাঁদ। রাজশাহী-৫ (তৎকালীণ চারঘাট-বাঘা) আসনে মনোনয়ন না দেওয়ায় রাজশাহীর জনসভা শেষে ঢাকায় ফেরার পথে বানেশ্বরে খালেদা জিয়ার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ করেছিলো চাঁদ। তারপর থেকে তিনি নেতা বনে যান। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় চারঘাট-বাঘায় ব্যাপক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানোর অভিযোগে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয় ।

অপর দিকে 2018 সালের জাতীয় নির্বাচনে রাজশাহী(6)চারঘাট-বাঘা থেকে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পান আবু সাঈদ চাঁদ। কিন্তু হলফ নামায় তথ্য গোপন করার অভিযোগে শেষ পর্যন্ত তার মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। সে বছর বিএনপি থেকেও অত্র আসনে আরো চারজনকে দলীয় মনোনয় দেন দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া সহ দলের কেন্দ্রীয় নেতারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিন-তিন বার নির্বাচিত শাহরিয়ারের দুর্গে ভোট করার সাহস করেনি কেউই।

সর্বশেষ গত শুক্রবার পুঠিয়ার শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে রাজশাহী জেলা বিএনপির সমাবেশ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে করবস্থানে পাঠানোর হুমকি দেন রাজশাহী বিএনপির আহবায়ক আবু সাইদ চাঁদ। এ সময় তিনি বলেন, ‘আর ২৭ দফা বা ১০ দফা নয়’। এখন থেকে এক দফা-এক দাবি শেখ হাসিনা কবরে যাবি। তার এ বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। আর তিনি হন ব্যপক আলোচিত। এরপর ক্ষোভে ফেটে পড়েন ক্ষমতাশীল দল আওয়ামী লীগের নেত্রীবৃন্দ। পরে সোমবার দেশব্যাপী চাঁদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে আওয়ামীলীগ। এরপর থেকে লাপাত্তা হন চাঁদ ।

চারঘাট থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মাহাবুবুল আলম বলেন, আবু সাঈদ চাঁদ প্রকৃত অর্থে একজন সন্ত্রাসী। তার নামে বিভিন্ন থানায় প্রায় অর্ধ শতাধিক মামলা এবং অসংখ্য জিডি রয়েছে। আমরা তাকে আটকের চেষ্টা চালাচ্ছি।


প্রকাশিত: মে ২৪, ২০২৩ | সময়: ৯:৫১ পূর্বাহ্ণ | সানশাইন

আরও খবর