সর্বশেষ সংবাদ :

রামেক হাসপাতালে রোগি ও স্ত্রীকে পিটিয়েছে কর্মচারি

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে এক রোগি ও অভিভাবক দৈনিক মজুরী ভিত্তিক কর্মচারির মারপিটের শিকার হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রামেক হাসপাতালের ৪নং ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগি রোগি রামেক হাসপাতালের পরিচালক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, শারীরিক সমস্যার জন্য নগরীর তেরখাদিয়া ডাবতলা এলাকার রোগি রিপন (৪৫) গত ১৬ মে রামেক হাসপাতালের ৪ নং ওয়ার্ডে ভর্তি হন। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে রিপন ওয়ার্ডের বাইরে বের হওয়ার সময় দেখতে পান রামেক হাসপাতালের দৈনিক মজুরী ভিত্তিক কর্মচারি শামীমের বোন শামিমা খাতুন বেসিন নোংরা করে সেখানে থালা বাসুন ধোয়ার কাজ করছেন। এসময় রোগি রিপন তাকে বেসনে থালা বাসন ধুতে নিষেধ করেন। তিনি বলেন, এখানে হাসপাতালের রোগি ও অভিভাবকরা হাতমুখ ধোয়ার কাজ করেন। সেখানে থালা বাসসন ধুলে বেসিন নোংরা হবে।
এ কথা বলার পর কর্মচারি শামীমের বোন শামিমা খাতুন রোগি রিপনকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। পরে শামিমা তার ভাই দৈনিক মজরুরী ভিত্তিক কর্মচারি শামীমকে ডেকে এনে রিপনকে লাঞ্ছিত করেন। ঘটনাটি জানতে পেয়ে রোগি রিপনের স্ত্রী ওয়ার্ড থেকে দ্রুত এসে স্বামীকে রক্ষা করতে গেলে কর্মচারি শামীম ও তার বোন শামিমা দুজন মিলে রিপনের স্ত্রী আয়শা বেগমকে মারপিট করে। তাদের মারপিটে আয়শা বেগমের চোখে প্রচণ্ড আঘাতপ্রাপ্ত হন। পরে রোগি রিপন তার স্ত্রীকে রামেক হাসপাতালের বর্হিবিভাগে চিকিৎসা করান। একই সাথে তিনি রামেক হাসপাতালের পরিচালক বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন।
রোগি রিপন জানান, হাসপাতালে এসেছি চিকিৎসা নিতে। কিন্তু হাসপাতালের কর্মচারিরা তার বোন মেরে রোগী বানিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, দৈনিক মজুরী ভিত্তিক কর্মচারি শামীম দাম্ভিকতার সাথে ভয় দেখান যে, এই হাসপাতাল আমাদের। এখানে আমরা যা ইচ্ছে তাই করবো, তিনি বলার কে।
এদিকে, এর আগেও কর্মচারি শামীম রোগিকে মারপিট করেছিল। সেই অভিযোগে তাকে হাসপাতালের চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়েছিল। শামীমের বোন শামিমা রামেক হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রাসেলের স্ত্রী। যার কারণে শামীম একের পর এক হাসপাতালে অপকর্মের করে গেলেও কেউ কিছু বলার সাহস পায় না। শামীম বেশ কয়েকবার রোগি পেটানোর দায়ে চাকরিচ্যুত হয়েছে। রোগি ও অভিভাকদের পেটানোর দায়ে রামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শামীমকে চাকরি থেকে বাদ দিলেও ওয়ার্ড মাস্টার রাসেল পুনরায় পরিচালকের হাতে পায়ে ধরে তাকে চাকরিতে রাখেন এমন অভিযোগ রয়েছে।
এব্যাপারে রামেক হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার অফিসের ইনচার্জ মোসাররফ হোসেন জানান, বিষয়টি জানার পর সেখানে গিয়েছিলাম। রোগির অভিভাবকরা এব্যাপারে শামীমের বিরুদ্ধে পরিচালকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন। পরিচালক ঢাকায় আছে। পরিচালক এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। এব্যাপারে ওয়ার্ড মাস্টার রাসেল আলীর সাথে তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করায় মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এব্যাপারে রামেক হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জানি। ঘটনার পর সেখানে লোক পাঠানো হয়েছিল। রোগির পক্ষে পরিচালক বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়েছে। পরিচালক ঢাকা থেকে এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


প্রকাশিত: মে ২১, ২০২৩ | সময়: ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ