বিনা দোষে অপবাদ নেব না : প্রধানমন্ত্রী

সানশাইন ডেস্ক: বিনা দোষে অপবাদ নিতে রাজি নন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেকে অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। সেটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। কারণ দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করতে ক্ষমতায় আসিনি। জনগণের ভাগ্য গড়তে এসেছি। তাই কেউ যখন মিথ্যা অপবাদ দেয়, বিনা দোষে সে অপবাদ নিতে আমি রাজি না। বিশ্ব ব্যাংক অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সফল হয়নি।’
বিএনপি দলের গঠনতন্ত্র মানে না, আইন মানে না, তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তুলনা হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, “অনেকে অনেক কথা বলেন, দুই দল। আবার কেউ কেউ আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তুলনা করেন। বিএনপি নিজেদের দলের গঠনতন্ত্র মানে না। আইন মানে না। তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের তুলনায় হয় কীভাবে?”
বিএনপি দেশের মানুষের কল্যাণ চায় না, মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে, মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০০৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি পেয়েছিল ৩০ আসন; ৩০০ সিটের মধ্যে। আর আওয়ামী লীগ মহাজোট করেছিল। বিএনপির ছিল ২০ দলীয় জোট। বিএনপি পেল ৩০ আসন। বাকি সব আসন পেয়েছে আওয়ামী লীগ। তাহলে দুই দল একপর্যায়ের হয় কীভাবে?”
শনিবার গোপালগঞ্জের তালিমপুর তেলিহাটি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রায় চার বছর পর নিজের নির্বাচনী এলাকায় গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ৪৮টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং পাঁচটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ছিল বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা; এলাকায় ছিল সাজ সাজ রব।
কোটালীপাড়ায় প্রবেশ পথের সড়কগুলোতে নির্মাণ করা হয় অসংখ্য তোরণ এবং দুই পাশে টাঙানো হয়েছে ডিজিটাল পোস্টার-ব্যানার ও বর্ণিল পতাকা। নেতাকর্মীরা রাস্তার দুপাশে দাঁড়িয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতিকে স্বাগত জানান। এদিন প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু অতিক্রম করে কোটালীপাড়ায় যান।
নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, “পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে অনেক অপবাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, সেটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। কারণ, দুর্নীতি করে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করতে আসিনি। জনগণের ভাগ্য গড়তে এসেছি। তাই কেউ যখন মিথ্যা অপবাদ দেয়। বিনা দোষে সে অপবাদ নিতে আমি রাজি না।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশ্ব ব্যাংক অপবাদ দিতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। আমরা নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি বলেই আজ এত দ্রুত কোটালীপাড়া, গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গীপাড়া এবং দক্ষিণ অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পেরেছি।”
বিশ্ববাজারে সব কিছুর দাম বেড়েছে; তারপরও দেশে ভর্তুকি অব্যাহত রাখা হয়েছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, “বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে তাই বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। লন্ডনে দেড়শ ভাগ পর্যন্ত বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। আমরা কথা দিয়েছিলাম দেশে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করব, সেটা আমরা করেছি।”
জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সন্তানের দিকে খেয়াল রাখার জন্য অভিভাবকদের আহ্বান জানান। এ সময় সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, “শত সড়ক, শত সেতু চালু হয়েছে একদিনে। যা কোনো সরকার করতে পারেনি। একমাত্র আওয়ামী লীগ সরকারই তা করে দিয়েছে।
“দেশের একটি পরিবারও ভূমিহীন থাকবে না। কেউ বাদ পড়লে ঘর করে দেওয়া হবে। এক ইঞ্চি জমিও যেন খালি না থাকে, খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে। কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাসের সভাপতিত্বে জনসভায় স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বক্তব্য দেন।
এদিকে সকাল থেকে গোপালগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে জনসভা মাঠে জড়ো হন বিপুল সংখ্যক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনতা। জনসভা মাঠে তৈরি করা হয় নৌকা আকৃতির বিশাল মঞ্চ। কোটালীপাড়ায় জনসভা শেষে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়ায় যান।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩ | সময়: ৬:৪৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ