সর্বশেষ সংবাদ :

সাদমানের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি

স্পোর্টস ডেস্ক: শরিফল্লাহর ডেলিভারিটি ছিল একটু জোরের ওপর করা লেংথ বল। ক্রিজের অনেক গভীরে গিয়ে পুল শটে বল সীমানা ছাড়া করলেন সাদমান ইসলাম। ৯৮ থেকে পৌঁছে গেলেন শতরানে। তার উদযাপনে যতটা থাকল উচ্ছ্বাস, তার চেয়ে অনেক বেশি থাকল স্বস্তি। অবশেষে একটি সেঞ্চুরি। নিজেকে ফিরে পাওয়ার পথে বড় একটি পদক্ষেপ!
এক বছর আগের এই সময়টাতেও বাংলাদেশ টেস্ট দলের ওপেনার ছিলেন সাদমান। কিন্তু পাকিস্তান, নিউ জিল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ মিলিয়ে টানা ৫ টেস্টে ভালো করতে না পারায় একাদশে জায়গা হারান। পরে ছিটকে পড়েন স্কোয়াড থেকেও। এরপর চোটাঘাতের ধাক্কায় ক্রমে দূরে সরে যান আরও। গত অগাস্টে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেও ভালো করতে পারেননি। তবে ডিসেম্বরে ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে লড়িয়ে একটি ইনিংস খেলেন। সেবার তিনি ৯৩ রানে অপরাজিত থেকে যান সতীর্থদের ব্যর্থতায়। অবশেষে এবার শতরানের মুখ দেখলেন।
বগুড়ায় বিসিএলের তৃতীয় রাউন্ডের এই ম্যাচে সাদমানের সেঞ্চুরি আর ফজলে মাহমুদের ফিফটিতে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল পায় শক্ত ভিত। তবে শেষ বিকেলে আবু হায়দার ও সৌম্য সরকারের বোলিং ঝলকে লড়াইয়ে ফেরে বিসিবি মধ্যাঞ্চল। দিন শেষে দক্ষিণাঞ্চলের রান ৭ উইকেটে ২৮১। সাড়ে ৫ ঘণ্টার বেশি উইকেটে কাটিয়ে ১৩০ রানের ইনিংস খেলে সাদমান আউট হন শেষ বেলায়। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি তার একাদশ সেঞ্চুরি। তবে তিন অঙ্কের দেখা পেলেন তিনি প্রায় দেড় বছর পর।
বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে শনিবার টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণাঞ্চল ম্যাচের প্রথম বলেই হারায় উইকেট। আবু হায়দার ফিরিয়ে দেন পিনাক ঘোষকে। পরের জুটিতেই এই ধাক্কা সামাল দেন সাদমান ও এনামুল হক। তবে সম্ভাবনাময় এই জুটি শেষ হয় দলের জন্য হতাশাজনকভাবে। তৃতীয় রান নেওয়ার চেষ্টায় রান আউট হয়ে যান এনামুল (২৩)। জুটি অবশ্য গড়ে ওঠে তৃতীয় উইকেটেও। এবার সাদমানের সঙ্গী অমিত হাসান। এই জুটিতে আসে ৮১ রান।
অমিত বিদায় নেন ৩০ রান করে। বাঁহাতি স্পিনার রকিবুল হাসানের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল সজোরে চালাতে গেলে বল লাগে ব্যাটের কানায়। স্লিপে ভালো রিফ্লেক্স ক্যাচ নেন আরিফুল হক। এরপরই দক্ষিণাঞ্চল পান দিনের সেরা জুটি। সাদমান ও ফজলে মাহমুদ ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে এগিয়ে নেন দলকে। জুটির শতরান আসে ২০৯ বলে। সাদমান সেঞ্চুরি পা রাখেন ১৮৬ বলে। ফজলে মাহমুদের ফিফটি করতে লাগে ১৩২ বল।
দ্বিতীয় নতুন বল নিয়ে ১১০ রানের এই জুটি ভাঙেন সৌম্য। ৫০ রানেই তিনি থামিয়ে দেন ফজলে মাহমুদকে। দক্ষিণাঞ্চলের ছোট ধসের সূচনাও সেই উইকেট দিয়ে। সৌম্য ফিরিয়ে দেন নাহিদুল ইসলামকেও। আরেকপ্রান্তে ইমরানউজ্জামানকে এলবিডব্লিউ করে আবু হায়দার এনে দেন কাঙ্ক্ষিত উইকেটও। তার একটি ফুল লেংথ বলের লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান সাদমান। শেষ হয় তার ১৭ চার ও ১ ছক্কার ইনিংস।
১০ রানের মধ্যে দক্ষিণাঞ্চল হারায় ৪ উইকেট। তবে দিনের শেষভাগে আর উইকেট হারায়নি তারা। আট নম্বরে নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং করেন নাসুম আহমেদ। তাকে সঙ্গ দেন সুমন খান। দিনের শেষ ওভারেও মুশফিক হাসানকে স্লগ করে ছক্কা মারেন নাসুম। দুটি করে চার ও ছক্কায় অপরাজিত থাকেন তিনি ২৫ রান করে।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২৩ | সময়: ৬:৩৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ