ওয়ানডে সিরিজে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের হারানোর আশা খালেদ মাহমুদের

স্পোর্টস ডেস্ক: ওয়ানডে ক্রিকেট সমীহ জাগানিয়া দল বাংলাদেশ। খেলা নিজ দেশে হলে রীতিমতো অজেয় বলা যায় তাদের। প্রায় এক দশক ধরে ঘরের মাঠকে দুর্গ বানিয়ে ফেলা বাংলাদেশ দল সাফল্য পায়নি শুধুমাত্র ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। সামনে এবার আরেকটি সুযোগ। চ্যালেঞ্জটি সহজ নয় অবশ্যই। তবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের নিজ আঙিনায় পেয়ে সিরিজ জয়ের ছবি আঁকছেন টিম ডিরেক্টর ও বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ।
২০১৪ সালের জুনের পর বাংলাদেশের মাটিতে ওয়ানডে সিরিজ জয়ী একমাত্র দল ইংল্যান্ড। এই সময়ে ঘরের মাঠে ১৪টি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলে স্রেফ একটি হেরেছে বাংলাদেশ। ২০১৬ সালে ২-১ ব্যবধানে স্বাগতিকদের হারিয়েছিল ইংলিশরা। প্রায় ৬ বছর পর আবার বাংলাদেশ সফরে আসছে তারা। বিশ্বকাপ সুপার লিগের ৩ ওয়ানডের পাশাপাশি সমানসংখ্যক টি-টোয়েন্টিও খেলবে ইংল্যান্ড।
যদিও দুই দলেরই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হওয়ায় সুপার লিগে কোনো প্রভাব ফেলবে না এই সিরিজ। তবে স্বাগতিকদের জন্য সিরিজটি একরকম চক্রপূরণের সুযোগ। গত ১০ বছরে ঘরের মাঠে খেলা সব প্রতিপক্ষের বিপক্ষেই সিরিজ জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছে বাংলাদেশ। এই স্বাদ পাওয়া হয়নি শুধু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
এবার সেই সুযোগ দেখছেন খালেদ মাহমুদ। বিসিবিতে সোমবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, বাংলাদেশ যে আসলেই ওয়ানডেতে ভালো দল, তা প্রমাণের সুযোগ এবার। “ইংল্যান্ড বিশ্বসেরা দল, তাই চ্যালেঞ্জ তো সবখানেই। নিশ্চিতভাবেই, আমাদের মেনে নিতে হবে যে ওরা আমাদের থেকে ভালো দল। ঘরের মাঠে আমরা যে ভালো, তা সব সময় প্রমাণ করেছি। কিন্তু এটা মুখে বললে হবে না, কাজেও করতে হবে।”
“শুধু এই কন্ডিশন না, আমরা গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছি। ওয়ানডে সংস্করণে নিশ্চিতভাবে আমরা শক্তিশালী দল এবং (ইংল্যান্ডের বিপক্ষে) একটা সিরিজ জয়ের আশা করতেই পারি। সত্যি কথা বলতে আমি সিরিজ জয়ের আশা করি।”
ওয়ানডের ক্ষেত্রে খালেদ মাহমুদের কণ্ঠে যে জোর, টি-টোয়েন্টির ক্ষেত্রে তা অনেকটাই ম্রিয়মান। তবে বিপিএলে বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের ভালো খেলার ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চমকপ্রদ কিছুর আশা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিসিবির এই পরিচালক।
“টি-টোয়েন্টিতে বলব, নিশ্চিতভাবে আমরা এই সংস্করণে এখনও একটু পিছিয়ে আছি। তবে এবারের বিপিএলটা আমার কাছে অনেক অর্থবহ। অনেকেই বলেছে, হয়তো অনেক কোয়ালিটি বোলিং ছিল না, ফাস্ট বোলার আসেনি… কিন্তু আমি এগুলো নিয়ে ভাবছি না।”
“ছেলেরা যে সাহস করে ব্যাটিং করেছে, আমাদের অনেক তরুণ ক্রিকেটার এবার ভালো ক্রিকেট খেলেছে, এটা আমাদের জন্য একটা ইতিবাচক দিক। এটিকে পুঁজি করে আমরা চাই, সেরা টি-টোয়েন্টি দল হতে। আমরা আরও ভালো ক্রিকেট খেলতে পারব, জেতা-হারাটা এটা নির্ভর করবে আমরা কতটা ভালো খেলি। তবে আমি বিশ্বাস করি আমরা ভালো খেলব।”
বাংলাদেশ সফরের ইংল্যান্ড দলে আছেন জ্রফা আর্চার, মার্ক উড, রিস টপলির মতো গতিময় পেসাররা। যারা প্রত্যেকেই গড়পড়তা ১৪০ কিমি. প্রতি ঘণ্টায় বোলিং করতে পারেন। তাদের এই গতি বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ আরও বাড়িয়ে দেবে কি না জানতে চাইলে সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমদের সামর্থ্যের প্রতি আস্থা রাখার কথা বলেন মাহমুদ।
“এখন তো আমরা ১৪০-৪৫ কিমি গতির বল খেলে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। জাতীয় দলে যদি দেখেন… লিটন দাস বলেন কিংবা সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম বলেন টপ অর্ডারে যারা ব্যাটিং করে, তারা ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে পারে না- কথাটা কিন্তু ভুল। তারা দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশনে ওরকম উইকেটেও ভালো ব্যাটিং করেছে, প্রমাণ করেছে।”
“আমি মনে করি না যে খুব কঠিন হবে। আর আমাদের উইকেট থেকে পেসাররা যে খুব একটা বাড়তি সুবিধা পাবে, তা-ও কিন্তু হবে না। যেহেতু আমাদের হোম কন্ডিশন, কোচ-অধিনায়ক আছে, তারা চিন্তা করবে যে কোন রকমের উইকেট আমাদের জন্য মানানসই হবে, আমরা কোন ধরনের উইকেটে ওদের চেয়ে ভালো খেলব।”


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩ | সময়: ৭:১০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর