ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে রাবি শিক্ষার্থীকে মারধর করে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

দাবিকৃত চাঁদা না দেওয়ায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে মারধর করে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হল ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এসময় ওই শিক্ষার্থীর সাথে থাকা প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে হুমকি দিয়ে বলা হয়েছে, হলে থাকতে হলে আরও টাকা দিতে হবে। আর এ কথা কেউ জানতে পারলে তার লাশও পরিবার খুঁজে পাবে না বলে হুমকি দেন ওই ছাত্রলীগ নেতা।

 

বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ মখদুম (এসএম) হলে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম মো. সামিউল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি শাহ মখদুম হলের ২১৪ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শাহ মখদুম হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তাজবিউল হাসান অপূর্ব।
লিখিত অভিযোগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে হল সভাপতি অপূর্ব তাঁর অনুসারীদের নিয়ে তাঁর কক্ষে প্রবেশ করে ১০ হাজার টাকা দাবি করে তাৎক্ষণিক সেই টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেন। একপর্যায়ে তাঁর ম্যানিব্যাগে থাকা ৩ হাজার ৭৭৫ টাকা জোর করে ছিনিয়ে নেন। এবং অপূর্ব বলেন, ‘এই সিটে থাকতে হলে আজকেই বাকি টাকা যেভাবইে হোক ম্যানেজ করে দিতে হবে।

 

 

অভিযোগপত্রে সামিউল আরও বলেন, টাকা দিতে না পারায় অপূর্ব তাঁর মা-বাবা তুলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে অপূর্ব উত্তেজিত হয়ে তাঁর গায়ে হাত তোলেন। এরপর অপূর্বের অনুসারীরা তাঁকে মেঝেতে ফেলে এলোপাতাড়ি কিল, ঘুষি মারতে থাকেন। যাওয়ার আগে আগামীকালের (শুক্রবার) মধ্যে বাকি টাকা দিতে না পারলে দুপুরের মধ্যে হল থেকে চলে যেতে বলেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এসময় সামিউলকে হুমকি দিয়ে তাঁরা বলেন, ‘এসব বিষয় কেউ জানতে পারলে তোর লাশও তোর পরিবার খুঁজে পাবে না। এ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে যতগুলো মার্ডার হইছে সব ফাও।’ এর আগেও ওই রুমে থাকার জন্য সামিউলের কাছ থেকে তিন হাজার টাকা নিয়েছিল বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন তিনি।

 

 

তবে অভিযোগের বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা অপূর্ব বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ এসেছে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমার প্রতিপক্ষরা এসব মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে।’

 

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, ‘যতটা অভিযোগ করা হ”েছ আসলে বিষয়টা ততটাও না। রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের বিষয় থেকে এমনটা ঘটতে পারে। তবে আমরা দুইপক্ষকে ডেকে তদন্ত শুরু করেছি। আশা করছি তদন্তের মধ্য দিয়ে মূল ঘটনা বেড়িয়ে আসবে। আর তখন আমরা দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২০, ২০২৩ | সময়: ১০:০৫ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine