প্রত্যাশা-স্বর্ণার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের দুইয়ে দুই

স্পোর্টস ডেস্ক: আগের ম্যাচে আফিয়া প্রত্যাশা ও স্বর্ণা আক্তারের ব্যাটে দেখা গিয়েছিল কিছুটা ঝলক। সেদিন যেখানে থেমেছিলেন, এবার সেখান থেকেই যেন শুরু করলেন দুজন। নিজেদের এগিয়ে নিলেন তারা আরও অনেকটা দূর। সেই পথ ধরে আরেকটি জয়ের দেখা পেল দল। দুই ম্যাচে দুই জয়ে বাংলাদেশ নিশ্চিত করে ফেলল সুপার সিক্সে।
আইসিসি উইমেন’স অনূর্ধ্ব-১৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কাকে ১০ রানে হারাল বাংলাদেশ। দক্ষিণ আফ্রিকার বেনোনিতে সোমবার বাংলাদেশের ১৬৫ রান তাড়ায় লঙ্কানরা যেতে পারে ১৫৫ পর্যন্ত। ব্যবধান খুব বড় না হলেও আদতে রান তাড়ায় কখনও জয়ের মতো অবস্থায় মনে হয়নি শ্রীলঙ্কাকে। ম্যাচের শেষ তিন বলে তিনটি বাউন্ডারিতে তারা ব্যবধান কমায় কিছুটা।
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ৭ উইকেটে হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে। বাংলাদেশকে এ দিন জয়ের মতো স্কোর এনে দেন প্রত্যাশা ও স্বর্ণা। আগের ম্যাচে দুটি করে চার ছক্কায় ২৪ করে আউট হয়েছিলেন প্রত্যাশা। এবার তিনি খেলেন ৪৩ বলে ৫৩ রানের ইনিংস। যেখানে ৫ চারের সঙ্গে ছক্কা ছিল ৩টি।
স্বর্ণা আগের ম্যাচে বিশাল এক ছক্কায় ১৮ বলে ২৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে দলকে জেতানো স্বর্ণা আরও একবার অপরজিত থাকেন ২৮ বলে ৫০ রান করে। তার ইনিংসে চার তিনটি, ছক্কা দুটি। দুর্দান্ত পায়ের কাজ, হাতের জোর আর দারুণ অভিপ্রায় দেখান ফিফটি করা দুই ব্যাটারই।
উইলোমুর পার্কে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ বড় স্কোরের ভিত পায় উদ্বোধনী জুটিতেই। প্রত্যাশা ও মিষ্টি সাহা দলকে এনে দেন ৭৫ রানের শুরুর। তবে জুটিতে দুই ওপেনারের ভূমিকা ছিল পুরো দুইরকম। প্রত্যাশার ব্যাট ছিল উত্তাল, অন্য প্রান্তে মিষ্টি ছিলেন দর্শক।
৭৫ রানের জুটিতে মিষ্টি করেন ২৪ বলে মাত্র ১৪ রান। দ্বিতীয় ওভারে রাশমি নেত্রাঞ্জলিকে ফ্লিক করে দারুণ টাইমিংয়ে চার মেরে প্রত্যাশার শুরু। পরের ওভারে দুটি চার মারেন পামোদা শাইনিকে। চতুর্থ ওভারে স্পিন আক্রমণে আনেন লঙ্কান অধিনায়ক। তাতেও কাজ হয়নি। অফ স্পিনার ভিহারা সেভান্দিকে লং অনের ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারেন প্রত্যাশা।
সেভান্দির পরের ওভারে আরও বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন প্রত্যাশা। এবার দুটি চারের সঙ্গে ওভারে মারেন আরেকটি ছক্কা। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তোলে ৫২ রান। পরের চার ওভারে বাউন্ডারি আসেনি। রানের গতিও কমে আসে কিছুটা। একাদশ ওভারে দুলাঙ্গা দিসানায়েকের বলে ছক্কায় প্রত্যাশা ফিফটি পা রাখেন ৪১ বলে।
প্রত্যাশার ইনিংস থেমে যায় পরের ওভারে। সঙ্গীকে হারানোর পর ওই ওভারে রান আউটে বিদায় নেন মিষ্টিও। তবে জোড়া উইকেটের পরের ওভারেই ছক্কা মারেন স্বর্ণা। এর পরের ওভারে ছক্কা আসে দিলারা আক্তারের ব্যাট থেকেও। চাপ সরে যায় তাই নিমিষেই।
এই দুজনের জুটিতেই ইনিংস শেষ করে বাংলাদেশ। ৩৯ রানে থেকে শেষ ওভার শুরু করেন স্বর্ণা। সেই ওভারে দুটি চার ও শেষ বলে দুই নিয়ে তিনি পূর্ণ করেন ফিফটি। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৮৬ রান আসে ৫১ বলে। আগের ম্যাচের প্লেয়ার অব দা ম্যাচ দিলারা এবার অপরাজিত থাকেন ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৭ বলে ৩৬ রান করে।
রান তাড়ায় শ্রীলঙ্কা প্রথম ওভারেই হারায় উইকেটে। মারুফা আক্তারের বলে নেথমি সেনারাত্নার কাট শটে পয়েণ্টে দারুণ রিফ্লেক্স ক্যাচ নেন রাবেয়া খান। তিনে নামা ভিস্মি গুনারাত্নে পাল্টা আক্রমণ করে চার-ছক্কা মেরে। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক দিশা বিশ্বাসের বলে ক্রস খেলে বোল্ড হয়ে যান লঙ্কানদের আরেক ওপেনার সুমুদু নিসানসালা।
এরপর বড় জুটি গড়েন গুনারাত্নে ও দেউমি ভিহাঙ্গা। তবে রানের প্রত্যাশিত গতির সঙ্গে তাল মেলাতে পারেননি তারা। ৯৬ রানের এই জুটি থামে সপ্তদশ ওভারে। ৪৪ বলে ৫৫ রান করে ভিহাঙ্গা এলবিডব্লিউ হন মারুফার দুর্দান্ত এক ইয়র্কারে।
রান-বলের সমীকরণ তখন অনেক কঠিন। লঙ্কান অধিনায়ক গুনারাত্নে অপরাজিত তঅকেন ৫৪ বলে ৬০ রান করে। শেষ তিন বলে দিশার বলে তিনটি বাউন্ডারিতে পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়ে আনেন দিসানায়েকে। গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের শেষ ম্যাচ বুধবার, যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৭, ২০২৩ | সময়: ৫:৪৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর