সর্বশেষ সংবাদ :

ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন রাজশাহী, বাড়ছে শীতের দাপট

স্টাফ রিপোর্টারঃ

 

রাজশাহীতে সপ্তাহখানেক ধরে ঘন কুয়াশার সঙ্গে চলছে হিমেল হাওয়া। এতে বাড়ছে শীতের দাপট। এছাড়া গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সূর্যের কিছুটা দেখা মিললেও তার আগ পর্যন্ত ছিল ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন। আবার কোথাও কোথাও কুয়াশা পড়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির মতো। ফলে দিনের বেলাতেও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করেছে গাড়ি। এতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। সেই সাথে হতদরিদ্র ছিন্নমূল মানুষের শীতকষ্টও বেড়েছে।

 

 

 

জানা যায়, সোমবার বিকেল থেকে রাজশাহীতে শীতের দাপট বাড়ছে। সঙ্গে ঘন কুয়াশা ও বাতাসে রাজশাহীজুড়ে দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসে। আর এ কারণেই বেড়েছে শীতের দাপট। এদিকে, ঘনকুয়াশায় আচ্ছন্ন হওয়ায় দুর্ঘটনা ও উদ্ভুত পরিস্থিতি এড়াতে মহাসড়কেও যানবাহনগুলোকে লাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা গেছে। তবুও মহাসড়কের দূরপাল্লার যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। একই কারণে গতি কমেছে ট্রেনেরও। ফলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আন্তঃনগরসহ বিভিন্ন রুটের ট্রেনের শিডিউল ভেঙে পড়েছে। গত কয়েকদিন ধরেই রাজশাহী-ঢাকা, ঢাকা-রাজশাহী, খুলনা-রাজশাহীসহ বিভিন্ন রুটের আন্তঃনগর ট্রেনগুলোর শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এতে সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছেন না যাত্রীরা। আবার বৃষ্টির মতো গুঁড়ি গুঁড়ি কুয়াশায় জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ছেন হতদরিদ্র ছিন্নমূল মানুষ। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় দিনমজুরদের কাজে যেতে বিলম্ব হচ্ছে। চাকরিজীবীদের অনেকেও অফিসে যাচ্ছেন দেরিতে। আবার ব্যবসায়ীরাও দোকানপাট সঠিক সময়ে খুলতে পারছেন না। এদিকে, ফসলের বীজ তলা ঠিকমত পরিচর্যা করতে না পারায় ও কুয়াশায় চারা নষ্ট হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। এছাড়া বৃদ্ধ ও শিশুরাও শীতে কষ্ট পাচ্ছেন। তাদের মাঝে শীতজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

 

 

সোমবার সন্ধ্যার পর থেকেই ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো রাজশাহী। এতে সড়কবাতির আলো ছড়াতে পারেনি। এছাড়া বৃষ্টির মতো গুঁড়ি কুয়াশা পড়ায় সন্ধ্যার পর থেকেই রাজশাহীতে মানুষের চলাচল কমে আসে। রাত ৮টার মধ্যেই প্রায় ফাঁকা হয়ে যায় নগরের প্রধান প্রধান সড়ক। রাত যত গভীর হয় কুয়াশা ততই বাড়তে থাকে। ভোরে ঘন কুয়াশার সেই আস্তরণ আরও আচ্ছন্ন করে ফেলে চারপাশ। এর সঙ্গে যোগ হয় উত্তরের হিমেল হাওয়া। এতে তীব্র শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রাজশাহীবাসী।

 

 

 

রাজশাহী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক আবদুস সালাম বলেন, রাজশাহীতে মঙ্গলবার ভোর ৬টায় সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ১৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে আকাশ হালকা পরিষ্কার হওয়ায় তাপমাত্রাও বেড়েছে। গত কয়েকদিনে সকাল থেকে বেলা ১১টার মধ্যে তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের প্রথমদিন গত রোববার ১৩ দশমিক শূন্য ডিগ্রি ও সোমবার ১১ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এছাড়া গত ২৯ ডিসেম্বর রাজশাহীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা রাজশাহীতে চলতি মৌসুমের এখন পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। কুয়াশা কেটে গেলেই রাজশাহীতে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হবে জানিয়ে আবহাওয়া পর্যবেক্ষণগারের জ্যেষ্ঠ এই পর্যবেক্ষক বলেন, তখন রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা আবারও এক অংকে নেমে আসার আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহীতে চলতি মাসে দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামার আশঙ্কা নেই।

 

 

 

 

 

সানশাইন/টিএ


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৩ | সময়: ৯:০৮ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine