মাছ শিকারের চেষ্টায় ইজারাদারের ঘর পুড়িয়ে দিলেন কৃষকরা

তানোর প্রতিনিধিঃ

রাজশাহীর তানোর উপজেলার সীমান্তবর্তী নওগাঁ জেলার মান্দা উপজেলার ভারশোঁ ইউনিয়নের আন্ধারসুরিয়া বিলের বন্যা নিয়ন্ত্রিত বাঁধ কেটে পানি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে এক ইজারাদারের বিরুদ্ধে। এতে শত শত একর জমি অনাবাদি হয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এঘটনায় গত ২১ ডিসেম্বর ইজারাদারের বিল পাহারার ঘর আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছেন এলাকার বিক্ষুব্ধ কৃষকরা এবং কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দিয়েছেন। অভিযুক্ত ইজাদার চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নাচোল এলাকার শরিফুল ইসলাম। দক্ষিণ গোয়ালি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি থেকে তিনি সাব লীজ (পুনরায় লিজ নেওয়া) নিয়ে ওই বিলে মাছ চাষ করেন ।

 

 

কৃষকরা জানান, এ বিলের পানি ব্যবহার করে চারপাশের অন্তত ৩ হাজার বিঘা জমিতে বোরো ধানের আবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন বাঁকাপুর, ভেড়ি দুর্গাপুর, চাকদহ ও খাগড়াসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের কৃষকরা। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কেঁটে বিলের পানি সরিয়ে নেওয়া হলে এসব জমিতে বোরো ধানের চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়বে এবং তানোর উপজেলার শীবনদীর পানি বৃদ্ধি পাবে। এতে বর্ষা মৌসুমে শিবনদের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ঝুঁকিতে পড়বে।

 

 

 

বাকাপুর গ্রামের কৃষক কমল মন্ডল বলেন, খননযন্ত্র দিয়ে এরই মধ্যে বিলের ভেতর থেকে খাল খনন করে বাঁধ পর্যন্ত নিয়ে আসা হয়েছে। এখন বাঁধ কেটে সেই পানি শিবনদে নেওয়ার চেষ্টা করছেন ইজারাদার। পানি শুকিয়ে গেলে বিলে বোরো ধানের চাষ করতে পারবেন না তাঁরা।

 

 

 

চাকদহ গ্রামের কৃষক মুক্তিযোদ্ধা কামিজ উদ্দিন মন্ডল বলেন, বিলের পানি ব্যবহার করে আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ বোরো ধানের চাষ করে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন যুগযুগ ধরে। এটিই তাঁদের একমাত্র ফসল উৎপাদনের উপায়। আবার বর্ষা মৌসুমে বিলে থইথই করে পানি। তখন মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন এলাকার লোকজন। কিন্তু তাদের বাঁধা উপেক্ষা করে ইতোমধ্যে বিলের সেই পানি সরানোর পাঁয়তারা করছেন ইজারাদার ও তার লাঠিয়াল বাহিনী। এবিষয়ে ইজারাদার শরিফুল ইসলাম বলেন, বিলে এখনও অনেক পানি। পানি কমাতে না পারলে মাছ ধরা যাবে না। তাই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এতে বোরো আবাদে কোনো প্রভাব পড়বে না।

 

 

 

ইজারাদার অভিযোগ করে জানান, ‘বুধবার সকালে বিলের পাহারায় থাকা লোকজন চৌবাড়িয়া বাজারে নাস্তা করতে যান। এ সুযোগে এলাকার লোকজন পাহারাঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছেন। এতে অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এবিষয়ে আমি আইনি পদক্ষেপ নেবো।

 

 

নওগাঁর মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-আলম-সিদ্দিকী বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

 

সানশাইন/টিএ


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২৫, ২০২২ | সময়: ৭:৪৪ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর