শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার: অবশেষে রাজশাহী মহানগরীর অদূরে খড়খড়ি মোড়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গায় নির্মাণ হওয়া অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন পবা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ সরকার।
সড়কের ওপর অবৈধভাবে নির্মিত মার্কেট, দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা উচ্ছেদ করে পবা উপজেলা প্রশাসন ও সড়ক বিভাগ। অভিযানে ৫০ টিরও অধিক দোকান ও ঘর উচ্ছেদ করা হয়। এতে স্বস্তি পেয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গা অবৈধভাবে দখল ও স্থাপনা নির্মাণ করে ব্যবসা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিলেন। এর কিছুদিনের মধ্যেই খড়খড়ি মোড়ে থাকা আনুমানিক সাত শতাংশ খাল ভরাট করেন স্থানীয় হারুন অর রশীদ, তার স্ত্রী রাবেয়া খাতুন এবং আরো ৪ জন। খালটি ভরাট শুরু করা হলে স্থানীয়দের পক্ষ থেকে সড়ক ও জনপথ বিভাগে অভিযোগ দেওয়া হয়। অভিযোগ পাওয়ার পর সওজের পক্ষ থেকে খাল ভরাট বন্ধে নোটিশ প্রদান করা হয়। তারপরও খাল ভরাটকারীরা সেটি আমলে না নিয়ে আবার ভরাট করলে পুনরায় স্থানীয়রা সওজে অভিযোগ দেয়। অভিযোগের পর সওজ কর্তৃপক্ষ খাল ভরাট করতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। নিষেধাজ্ঞার পরও খাল ভরাটকারীরা তাদের কাজ চালিয়ে যায়। ভরাট বন্ধ না হওয়ায় স্থানীয়রা আবার অভিযোগ দিলে সওজের পক্ষ থেকে মতিহার থানায় জিডি করেন। তারপরও ভরাটকারীরা অজ্ঞাত ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে খাল ভরাট করে সেখানে স্থাপনা নির্মাণ করেন।
সেখানে বেশ কয়েকটি দোকান নির্মাণ হলে অভিযোগের ভিত্তিতে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এ নিয়ে তখন সওজের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে এমন কথা জানানো হয়েছিল। সেই জায়গা দখল করার জন্য হারুন অর রশীদ ও রাবেয়া খাতুন বিভিন্ন মহলে তদবির করেন বিভিন্ন স্থানে। শুধু ওই জায়গায় নয় আশেপাশের অন্য দখল হওয়া জায়গাগুলোতে নির্মাণ হওয়া অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট চাইলে তিনি তা অনুমোদন দেন। এরপর সোমবার বেলা ১১টা থেকে পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ সরকারের নেতৃত্বে খড়খড়িতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। মোড় থেকে শুরু করে ভরাট হওয়া জায়গা এবং আশেপাশের ৫০টিরও বেশি অবৈধ স্থাপনা বুলডোজর দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
সেই সাথে ভরাট হওয়া জায়গাটি অবমুক্ত করার জন্য ভরাটকারীদের নির্দেশনা দেওয়া হয়। না হলে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয় সওজের পক্ষ থেকে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সওজের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহ মোহাম্মদ আসিফ ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নাহিদুর রহমান এবং সার্ভেয়ার মিল্লাত। অভিযান পরিচালনায় সহায়তা করেন আরএমপির একটি টিম।
সওজের সার্ভেয়ার মিল্লাত বলেন, সওজের জায়গায় অবৈধভাবে নির্মাণ করা স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ৫০ টিরও অধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। যে খালটি ভরাট করা হয়েছিল সেটাও অবমুক্ত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
উচ্ছেদ অভিযানের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পবা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অভিজিৎ সরকার বলেন, ‘সড়ক বিভাগের অধিগ্রহণকৃত জমিতে অবৈধভাবে স্থাপনা স্থাপনের ফলে প্রতিনিয়ত ব্যস্ততম এই মহাসড়কে দূর্ঘটনা ঘটছে। সাধারণত সড়কের উভয়পাশে ৯০ ফিট করে ১৮০ ফিট জায়গা সড়ক বিভাগের। এগুলো অবৈধভাবে দখল হওয়ায় সড়ক বিভাগ জেলা প্রশাসক, রাজশাহীর নিকট প্রতিকার চান। জেলা প্রশাসক রাজশাহী জনাব আব্দুল জলিল স্যারের নির্দেশনা মোতাবেক এই উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে’।