শেষের হাসি কেড়ে নিলেন ভারত

স্পোর্টস ডেস্ক: হোয়াইওয়াশের অপেক্ষায় ছিল গোটা দেশ। আরেকটি জয়েই ইতিহাসের পাতায় নিজেদের আটকে নিতে পারত বাংলাদেশ। হলো না। উল্টো পয়মন্ত ভেন্যুতে মিলল পরাজয়ের গ্লানি। যেনতেন পরাজয় নয়। নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসের দ্বিতীয় বড় ব্যবধানে হার। বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে শেষ ওয়ানডে হেরেছে ২২৭ রানের বিশাল ব্যবধানে।
প্রথম ইনিংসেই ম্যাচটা হাতছাড়া হয়ে যায় স্বাগতিকদের। পরপর তিন ম্যাচে টস জয় লিটনের। এবার অতিথিদের আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে রান তাড়া করার চ্যালেঞ্জ নেন তিনি। কিন্তু সিদ্ধন্তটা হিতে বিপরীত হয়ে যায়। ইশান কিশানের দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির কীর্তি ও বিরাট কোহলির সেঞ্চুরিতে ফেরার দিনে ভারতের রান ৮ উইকেটে ৪০৮। এমন পাহাড় সমান রান তাড়া করার অভিজ্ঞতা একদমই নেই বাংলাদেশের। ফলাফলও হাতের মুঠোয়। ১৮২ রানেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস। ট্রফি জয়ে বেশ আনন্দিত লিটন।
সিরিজ শুরুর আগে ট্রফি নিজেদের কাছে রাখতে চেয়েছিলেন। তবে আজকের পরাজয়ে মন ভাঙেনি লিটনের। স্কোরবোর্ডে চারশর বেশি রান হওয়ায় মনোবল নষ্ট হয়ে যায়। ৩৫০-৩৬০ হলে রান তাড়া সহজ হতো বলে ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন অধিনায়ক,‘চারশ রান করার অভিজ্ঞতা আমাদের নেই। সেখানে ৩৫০-৩৬০ রান হলে ভালো হতো। আমরা সেটা করতে পারতাম।’
বাংলাদেশের থেকে ম্যাচটা ইশান ছিনিয়ে নিয়েছে বলে মনে করছেন লিটন। ১২৬ বলে ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করা ইশান থেমেছেন ২১০ রানে। ১৩১ বলে ২৪ চার ও ১০ ছক্কায় সাজিয়েছেন বিস্ফোরক ইনিংস। সঙ্গে বিরাট খেলেছেন ৯১ বলে ১১৩ রানের ইনিংস। দুজনের ২৯২ রানের জুটিই বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে বলতে দ্বিধা করেননি লিটন,‘ইশান অবিশ্বাস্য ইনিংস খেলেছে। দিনটা আজ তার ছিল। বিরাটও একই। অসাধারণ খেলেছে। এরকম ইনিংস খেললে আসলে দিনটা তাদেরই হয়ে যায়।’
স্বাগতিকদের বোলিংয়ে তেমন ধারও ছিল না। নির্বিষ। এরকম ফ্ল্যাট উইকেটে যেভাবে বুদ্ধি খাটিয়ে বৈচিৎর‌্য এনে বোলিং করা দরকার ছিল সেরকম কিছুই করতে পারেননি তাসকিন, ইবাদত, মিরাজ, সাকিবরা। লক্ষ্য নাগালের বাইরে চলে গেলেও জয়ের চিন্তা করেই মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। লিটনের মতে,‘স্কোর বড় হয়ে গেলেও আমাদের লক্ষ্য ছিল জয়ের জন্য ব্যাটিং করা। আমরা ৩০০-৩২০ রান করলেও তেমন কিছু হতো না। এজন্য আমরা রান তাড়া করার জন্যই খেলেছি। তবে স্কোরটা আরেকটু কম হলে ভালো হতো।’
বাংলাদেশের ব্যাটিং ভালো হয়নি। লিটন এনামুল ঝড়ো শুরু করলেও বেশিক্ষণ তারা কেউই টেকেননি। সাকিব তিনে নেমে করেছেন ৪৩ রান। এছাড়া ইয়াসির, মাহমুদউল্লাহরাও মাঝারি মানের রান করেছেন। তাতে পরাজয়ের ব্যবধানই কমেছে শুধু।
শেষ ম্যাচে বাংলাদেশের হাসি টেকেনি। দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে হোয়াইটওয়াশ এড়িয়েছে ভারত। তবে এই পরাজয়ই সব শেষ নয়। আবার প্রথম দুই ম্যাচ জেতা হয়েছে মানেই সব পাওয়া হয়নি বাংলাদেশের। চট্টগ্রামের মতো উইকেটে কিভাবে ভালো ব্যাটিং করতে হবে, বোলিং করতে হবে সেসবে উন্নতি চান তামিমের পরিবর্তে অধিনায়কত্ব করা লিটন, ‘আমাদের টপ অর্ডারে যারা ব্যাটিং করেছে প্রত্েযকেই কিছু না কিছু অবদান রেখেছে। তবে উন্নতি আরো করতে হবে। আবার এমন উইকেটে বোলিংয়েও উন্নতি করতে হবে। এরকম ম্যাচ জিততে আমাদের কি করতে হবে সেদিকেও ভাবতে হবে।’ লিটন ১ রানে বিরাটের ক্যাচ ছেড়েছিলেন। সেই ক্যাচটা ছাড়ায় নিজেকে কাঠগড়ায় দাড় করিয়েছেন। তবে ফিল্ডিংয়েও সামগ্রিক উন্নতি তার চাওয়া। সিরিজ জয়ের আনন্দের সঙ্গে মেহেদী হাসান মিরাজের প্রথমবারের মতো ম্যান অব দ্য সিরিজ নির্বাচিত হওয়া প্রাপ্তির খাতার ওজন বাড়িয়েছে।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১১, ২০২২ | সময়: ৬:১১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ