রাজশাহীর সেই ভূমি কর্মকর্তা বরখাস্ত

স্টাফ রিপোর্টার : ঘুস লেনদেনের ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সরদহ ইউনিয়নের ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তারকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আদেশ থেকে জানা গেছে, রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার সরদহ ইউনিয়নের ভূমি অফিসের কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে শনিবার বিভিন্ন পত্রিকায় ‘চারঘাট তহশিলদার অফিসে ঘুষ লেনদেন’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়।
এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, সেবা প্রার্থীদের কাছে থেকে চারঘাট সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিস ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ক্ষেত্রে দাখিলার উল্লেখিত টাকার চেয়ে অধিক টাকা অনৈতিকভাবে দাবি ও আদায় করছেন। যা সরকারি কর্মচারি বিধিমালা অনুযায়ী অসদাচারণ ও দুর্নীতি পরায়নের শামিল। এতে জেলা প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে।
প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত কর্মচারিকে কর্মে নিয়োজিত রাখলে ভূমি প্রশাসনের সুনাম নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা, সরকারি স্বার্থ বিঘ্ন হওয়া ও ভূমি প্রশাসনের অন্যান্য কর্মচারিদের মধ্যেও এরূপ কর্মকান্ডে জড়িত হওয়ার আশঙ্কায় অভিযুক্ত চারঘাট সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিস ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, কার্যালয়ের ভেতরে ও বাইরে একই ব্যক্তির সঙ্গে ঘুসের টাকা নিয়ে দরকষাকষি করছেন ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার। এক পর্যায়ে টাকা পকেটে ঢোকান।
আরও দেখা যায়, টেবিলের সামনে টাকা হাতে নিয়ে বসে থাকা সেবাগ্রহীতাকে তিনি বলছেন, ‘৯০০ টাকা দিলে হবে। না না হবে না, এভাবে। আশ্চর্য তো। গরিব মানুষও দিছে। আর আপনি তো মার্চেন্ট মানুষ। ৯০০ টাকা গুনে দিছেন, এটা কেমন কথা হলো?’
তার টেবিলের সামনে বসে থাকা অপর সেবাগ্রহীতাকে চার হাজারের সঙ্গে আরও ৫০০ টাকা দিতে বলেন। তা নাহলে তিনি খাজনার চেক কাটবেন না বলে জানিয়ে দেন।
আরেক সেবাগ্রহীতাকে অফিসের বাইরে নিয়ে গিয়ে একটি গাছতলায় দাঁড়িয়ে কথা বলেন আব্দুস সাত্তার। এর ফাঁকে কয়েক দফায় তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে পকেটে রাখেন।
আব্দুস সাত্তার চারঘাট উপজেলার সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি রাজশাহী নগরীর হড়গ্রমা কোর্ট স্টেশন এলাকায়। এক মাস হলো তিনি সরদহ ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগদান করেছেন।
সেবাগৃহীতাদের অভিযোগ, টাকা ছাড়া কোনো কাজই করেন না আব্দুস সাত্তার। তার চাহিদার কানাকড়ি কম হলেও তিনি সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে অসদাচরণ করেন।
যোগাযোগ করা হলে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা আব্দুস সাত্তার বলেছিলেন, ‘আমি এই ভূমি অফিসে নতুন। মাত্র একমাস হলো যোগদান করেছি। এখানে কাউকে সেভাবে চিনি না। আমি কারও কাছ থেকে কীভাবে ঘুস নেবো? এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন।’


প্রকাশিত: নভেম্বর ২৭, ২০২২ | সময়: ৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ