সর্বশেষ সংবাদ :

ঘাসমারা বিষ দিয়ে ধান পোড়ানোয় গ্রেফতার ১

ভোলাহাট প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার বিলভাতিয়া বুড়িডোবা মাঠে পূর্বশত্রুতার জেরে সাড়ে চার বিঘা জমির ফুটন্ত বোরো ধান ঘাস মারা বিষ (আগাছানাশক) দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় আব্দুল আওয়াল বাদী হয়ে ১৫ এপ্রিল ভোলাহাট থানায় এজাহার দায়ের করেন। এজাহারনামীয় আব্দুস সামাদকে ১৫ এপ্রিল রাতে গ্রেফতার করেছে ভোলাহাট থানা পুলিশ।
পুড়ে যাওয়া ধান বুকে জড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকের কান্নায় আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। আর মাত্র কদিন পরে বাড়ীতে উঠতো ধান। কিন্ত সে স্বপ্ন পূরণ হতে দিলো না দুর্বৃত্তরা। এখন শুধুই দুস্বপ্ন আর চোখে মুখে অন্ধকার দেখছেন কৃষক আব্দুল আওয়াল।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষক উপজেলার নামোমুশরীভূজা গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে আব্দুল আওয়াল জানান, ভোলাহাট উপজেলার বিলভাতিয়ায় রোপন করা সাড়ে চার বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করেন। এখন ধান ফুটা শুরু করেছে। আর কদিন পরে পাকা ধান ঘরে তুলতে পারতাম। কিন্তু পূর্ব শত্রুতার জেরে মঙ্গলবার বিকেলে একই উপজেলার ইমামনগর গ্রামের মন্তাজ আলীর ছেলে আলাউদ্দি (৫০), আব্দুস সামাদ (৪০), আজাদ আলী(৪২), ফারুক হোসেন (৩৮), হুমায়ন কবির বকুল(৩৫), আজিজুল হক(৩০), শামসুল হক(২৯), আব্দুল করিম (২৬) সহ আরো অনেকে বিষাক্ত কীটনাশক প্রয়োগ করে পুড়িয়ে সব ধান নষ্ট করে দিয়েছে।
এসব জমিতে বিঘা প্রতি প্রায় ২৫ মণ করে মোট ১১২ মণ ধান উৎপাদিত। যার বর্তমান বাজার মূল্য ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। ধান ও খড় দিয়ে প্রায় ২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারনায় তিনি জানান। তিনি আরো বলেন, ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ভোলাহাট থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। এ ঘটনায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুলতান আলী সরজমিন পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলার পাঁচটিকরি গ্রামের আব্দুস সাত্তারের ছেলে কৃষক মোসলেম উদ্দনি জানান, আমি ঘাস কাটার সময় সামাদসহ তার ভাইয়েরা ঘাস মারা বিষ (বিষাক্ত কীটনাশক) প্রয়োগ করতে দেখি।
ক্ষতিগ্রস্থ জমির নিকটবর্তী বিএমডিএর ২৬ নম্বর গভীর নলকূপ ড্্রাইভার পাঁচটিকরি গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে সানাউল জানান, রাস্তার পাশে আমার ডিপ। বিকেলে ডিপের ঘরের সামনে বটের গাছের নিচে বসে ছিলাম। সামাদসহ তার ভাইয়েরাকে জারকিন নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ জমির দিকে যেতে দেখে সন্দেহ হয়। ওরা চলে যাওয়ার পর চুপচুপ করে নতুন বিজিবি ক্যাম্পের আড়ালে থেকে তাদেরকে জমিতে ঘাস মারা বিষ ছিটাতে দেখি।
গ্রেফতার হওয়ার পূর্বে অভিযুক্ত আব্দুস সামাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ধান পুড়ার ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। মানুষের মুখে ধান পুড়ার কথা শুনেছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সুলতান আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা জানান, এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে। এজাহার নামীয় আব্দুস সামাদকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।


প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২৩ | সময়: ৫:৪৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ