সর্বশেষ সংবাদ :

কবরস্থান না থাকায় ৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে লাশ দাফন করছেন গ্রামবাসী!

চারঘাট প্রতিনিধি 

আমার স্বামী মারা যাওয়ার সময় তাকে দাফন নিয়ে অনেক চিন্তিত ছিলাম কারন আমাদের গ্রামে গোরস্থান নাই । । পাশের গ্রামে কবর দেওয়ার জন্যও ওই কবরস্থান কমিটিকে টাকা দিতে হয়েছে। এখন স্বামীর কবর দেখতে ইচ্ছে হলেও ৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে দেখে আসতে হয়। এভাবেই কান্নাজড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার শলুয়া গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধা মর্জিনা বেগম। নিজ গ্রামে কবরস্থান না থাকায় কেউ মারা গেলে দাফন নিয়ে অনেকটাই বিপাকে পড়েন এই শলুয়া গ্রামের বাসিন্দারা।

 

গ্রামবাসীরা জানায়, আমাদের গ্রামে কবরস্থান না থাকায় লাশ দাফন নিয়ে অনেক বিপাকে পড়তে হয়। আমাদের কবরস্থান করার মত প্রায় ৩৯ শতক একটি জায়গা রয়েছে এবং এলাকাবাসী মিলে কবরস্থানের একটি কমিটিও করেছি। এই ৩৯ শতক জমিটি মুসলমান সাধারণের পক্ষে জিম্বা দং জেকের মন্ডল দিং, পিতা- বাছের মন্ডল সহ ৪ জনের নামে চার আনা করে আর এস রেকর্ড চুরান্তভাবে প্রকাশিত হয়। কিন্তু এই জমিটির কিছু অংশ ক্রয় সূত্রে এক ব্যক্তি খারিজ করে। আমরা তার খারিজ বাতিলের জন্য আবেদন করেছি। খারিজ বাতিল হলেই আমরা কবরস্থানের কাজ শুরু করতে পারবো। গ্রামবাসীরা সেই স্থানে গোরস্থান করার জোর দাবি জানিয়েছেন।

গোরস্থান সম্পর্কে সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে, শলুয়া উত্তরপাড়া কবর খনন কমিটির সভাপতি শরিফুল ইসলাম বলেন, গোরস্থান না থাকায় লাশ দাফন নিয়ে নানা অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয় আমরা। জমি থেকেও ওই স্থানে গোরস্থান তৈরি করতে পারছিনা আমরা। একদিকে আর্থিক সংকট অন্যদিকে কাগজত্রের সমস্যা নিয়ে আমরা সমস্যায় আছি। এছাড়াও কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য ওই স্থানে গোরস্থান তৈরিতে নানা ভাবে বাঁধা সৃষ্টি করে আসছে। আমরা ভূমি অফিসে আবেদন করেছি অনুমতি পেলেই গোরস্থান তৈরির অন্যন্য কাজ শুরু হবে। গোরস্থান তৈরি হলে এই কবরস্থানে লাশ দাফন করতে কমিটিকে কোনো অর্থ প্রদান করতে হবে না।

শলুয়া পুকুরপাড়া গ্রামের ওই খতিয়ানের জমি সম্পর্কে রাজশাহী জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আ্যাডভোকেট মামুন অর রশিদ জন বলেন, শলুয়া মৌজার ১৭৫ নম্বর খতিয়ানটি মুসলমান সাধারণের পক্ষে জিম্বা দং জেকের মন্ডল দিং নামে রয়েছে। এই সম্পত্তি হস্তান্তর যোগ্য না বা কেউ ক্রয় বিক্রয় করতে পারবে না। ওই এলাকার মুসলমান বা জনগণ ধর্মীয় কাজে এই সম্পত্তি ব্যবহার করতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চারঘাট উপজেলার সহকারী কমিশনা (ভূমি) মানজুরা মুশাররফ বলেন, গ্রামবাসীর আবেদন পেয়েছি তহশীলদার প্রতিবেদনও দাখিল করেছে। কাগজপত্র যাচাই বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: নভেম্বর ২০, ২০২২ | সময়: ৭:৪৯ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine