সর্বশেষ সংবাদ :

বালুমহাল ইজারা নিয়ে কাটা হচ্ছে বাঁধের মাটি

মান্দা প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় ইজারা নেওয়া আত্রাই নদ থেকে বালু উত্তোলন না করে অবৈধভাবে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংলগ্ন এলাকার মাটি কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইজারাদারের বিরুদ্ধে। ইজারা নীতিমালা লঙ্ঘন করে মাটি কেটে নেওয়ায় ত্রিমোহনী এলাকায় নদের গতিপথ পরিবর্তন হয়ে ভাঙনের কবলে পড়েছে পাড় সংলগ্ন ফসলি জমি, ফলদ ও বনজ বাগান।
চরম হুমকিতে রয়েছে শশ্মানঘাট, খেয়াঘাট, বাজার রক্ষা বাঁধ, নুরুল্লাবাদ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজ, বসতবাড়ি, মাদ্রাসা, ঈদগাহসহ বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ। এছাড়া ফকিন্নি নদীর ওপর নির্মিত সেতুও হুমকির মুখে পড়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, কোনো বাধাই তোয়াক্কা করছে না ইজারাদার। এ অবস্থায় অবৈধভাবে মাটি কাটা বন্ধের দাবিতে নওগাঁ জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেন নুরুল্লাবাদ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ ফজলে রাব্বী তারেক।
অধ্যক্ষ ফজলে রাব্বী তারেক বলেন, দরপত্রের মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে আত্রাই নদের ভাটি অংশের বালুমহাল ইজারা নেন নকিব এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী রহমতুল্যা মোল্লা। ইজারা নেওয়ার পর থেকে নদ থেকে বালু উত্তোলন না করে খননযন্ত্র দিয়ে পাড় সংলগ্ন ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে আশপাশের ফসলি জমি, ফলদ ও বনজ বাগান, ফকিন্নি নদীর সেতুসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান চরম হুমকির মুখে পড়েছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, বাধা নিষেধ করার পরও গায়ের জোরে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছেন ইজারাদার। এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মিলছে না। ভূমি মালিক আল মামুন বলেন, ‘অবৈধভাবে মাটি কেটে নেওয়ায় এরই মধ্যে আমার ফসলি জমির বেশকিছু অংশ নদী গর্ভে চলে গেছে। আগামি বর্ষা মৌসুমে পুরো ফসলি জমিই নদীতে বিলিন হয়ে যাবে।’
নুরুল্লাবাদ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী হালিমা আক্তার শান্ত জানায়, বিদ্যালয় থেকে মাত্র ৫০ গজ দুরে ফসলি জমির মাটি কাটা হচ্ছে। মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের অবাধ চলাচলে বিদ্যালয় চত্বরের পুরো এলাকা ধুলোতে অন্ধকার হয়ে থাকে। এতে শিক্ষার্থীরা শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে ইজারাদার রহমতুল্যা মোল্লা বলেন, দরপত্রের মাধ্যমে আত্রাই নদের ভাটি অংশের বালুমহাল ইজারা নেওয়া হয়েছে। নীতিমালা অনুয়ায়ী বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বিদ্যালয়ের সম্পত্তি দখল করে মাটি কেটে বিক্রি করার অভিযোগ সঠিক নয়। মান্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু বাক্কার সিদ্দিক বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য এসি ল্যান্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


প্রকাশিত: অক্টোবর ২৯, ২০২২ | সময়: ৬:৩৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ