বৃহস্পতিবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, নাটোর: নাটোর সদর উপজেলার ছাতনীদিয়ার গ্রামে স্বামীকে ভাতের সাথে বিষ মিশিয়ে খাইয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে স্ত্রী উর্মি খাতুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার স্বামী শান্ত মন্ডলকে গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার স্থানীয়রা জানায়, নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী ইউনিয়নের ছাতনী দিয়ার গ্রামের ক্ষেতমজুর শান্ত মন্ডল এবং উর্মি খাতুন দম্পতির ৫ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের একবছর বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ১৭ দিন আগে পাশের বাড়িতে আসবাবপত্রের কাজ করতে আসে একই ইউনিয়নের মাঝদীঘা গ্রামের আব্দুস সালাম নামের এক যুবক। কাঠমিস্ত্রী ওই যুবক সালামের সাথে পরিচয় হওয়ার এক পর্যায়ে তার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে ওই গৃহবধূ।
১৭ দিনের প্রেমের সম্পর্কের এক পর্যায়ে উভয়ে সিদ্ধান্ত নেন বিয়ে করে সংসার করার। কিন্তু তাতে বাধ সাধে স্বামী শান্ত মন্ডল। পরকীয়া প্রেমিকের সাথে পরামর্শ করে পথের কাঁটা দূর করার জন্য মঙ্গলবার সকালে স্বামী কাজে যাওয়ার আগে টিফিন ক্যারিয়ারে ভাত সাজিয়ে দেয় উর্মি। বেঁধে দেয়া ভাতে ফসলের জমিতে পোকা নিধনে ব্যবহার করা ‘কারিনা’ নামে সাদা পাউডার জাতীয় বিষ মেশায় ওই গৃহবধূ। দুপুরে কাজের বিরতিতে সঙ্গীদের সঙ্গে ভাত খেতে খেতে অসুস্থ হয়ে পড়েন শান্ত।
এসময় অন্য ক্ষেতমজুরা ওই ভাতে সাদা পাউডার মেশানো দেখতে পায়। তারা ওই ভাত খেতে তাকে নিষেধ করেন। ধীরে ধীরে তার অবস্থা খারাপ হতে থাকলে তাকে ওই ভাতসহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। বাড়িতে আসার পর তার অবস্থা আরো খারাপ হতে থাকলে গ্রামের লোকজন তাকে নাটোর হাসপাতালে নিয়ে যায়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এ সময় গ্রামের লোকজন স্ত্রী উর্মিকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে এক পর্যায়ে খাবার ভাতে বিষ মেশানোর কথা স্বীকার করে। খবর পেয়ে পুলিশ গৃহবধূকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
ছাতনী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি দুলাল সরকার জানান, শান্ত মন্ডলের রাজশাহী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা চলছে। চিকিৎসকরা বলেছেন ৭২ ঘণ্টা পার না হলে তাকে শঙ্কামুক্ত বলা যাবে না। বুধবার গ্রাম ও এলাকার লোকজন অসহায় দিন মুজুর শান্ত মন্ডলের চিকিৎসার জন্য নিজেরা টাকা তুলে তার চিকিৎসার খরচ বহন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ঘটনার পর থেকেই প্রেমিক আব্দুস সালাম নিজ বাড়িতে তালা দিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন।
নাটোর সদর থানার ওসি নাছিম আহম্মেদ জানান, ওই ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় উর্মিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বুধবার বিকেলে উর্মিকে আদালতে হাজির করলে বিচারক তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন।