অস্ট্রেলিয়াকে আবার হারিয়ে সিরিজ জিতল ইংল্যান্ড

স্পোর্টস ডেস্ক: জয়ের জন্য শেষ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ২২ রান। পেসার স্যাম কারানের প্রথম বলে বিশাল ছক্কা হাঁকালেন প্যাট কামিন্স। ম্যাচে ফিরল উত্তেজনা। তবে ওটুকুই, পরের পাঁচ বলে লড়াই আর জমল না তেমন। দাভিদ মালানের বিস্ফোরক ইনিংসের পর কারানের দারুণ বোলিংয়ে জিতে সিরিজ নিজেদের করে নিল ইংল্যান্ড।
ক্যানবেরায় বুধবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ইংল্যান্ডের জয় ৮ রানে। তিন ম্যাচের সিরিজে সফরকারীরা এগিয়ে গেল ২-০তে। অস্ট্রেলিয়ার মূল বোলিং আক্রমণের সবাই ফেরেন এই ম্যাচে। স্টার্ক-কামিন্স-হেইজেলউড-জ্যাম্পার সঙ্গে ফেরেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলও। তবে ভাগ্য ফিরল না স্বাগতিকদের। প্রথম ম্যাচেও তারা হেরেছিল ৮ রানে।
প্রথম ম্যাচে ২০৮ রান করা ইংল্যান্ড এবার করতে পারে ১৭৮ রান। বড় অবদান যেখানে মালানের। ইংল্যান্ডের হয়ে ৫০তম টি-টোয়েন্টিতে ৪৯ বলে ৮২ রানের খুনে ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। মইন আলি ২৭ বলে করেন ৪৪। জবাবে মিচেল মার্শ ও টিম ডেভিডের ঝড়ো দুটি ইনিংসে সিরিজে ফেরার আশা জাগায় অস্ট্রেলিয়া। তবে শেষ পর্যন্ত অল্পের জন্য পেরে উঠল না তারা, থামল ১৭০ রানে।
৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ম্যাক্সওয়েল, মার্কাস স্টয়নিস ও ডেভিডের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি উইকেট নেন কারান। ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ে নামে টস হেরে। আগের ম্যাচে ১৩২ রানের উদ্বোধনী জুটি উপহার দেওয়া জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলস এবার ফিরে যান প্রথম পাঁচ ওভারের মধ্যেই। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যর্থ হন বেন স্টোকস ও হ্যারি ব্রুক। তাদের কেউ যেতে পারেননি দুই অঙ্কে। নবম ওভারে ইংল্যান্ডের স্কোর তখন ৪ উইকেটে ৫৪।
এরপরই পঞ্চম উইকেটে ৫২ বলে ৯২ রানের অসাধারণ জুটি গড়েন মালান ও মইন। অবশ্য ১ রানেই মইনকে ফেরানোর সুযোগ এসেছিল। ক্যাচ নিতে পারেননি ম্যাক্সওয়েল। মালান ফিফটি পূর্ণ করেন ৩১ বলে। পঞ্চাশের কাছাকাছি গিয়ে লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পার বলে ক্যাচ দেন মইন। তার ৪৪ রানের ইনিংসটি গড়া ৪টি চার ও ২টি ছক্কায়। ৫৪ রানে আরেক দফা জীবন পাওয়া মালান থামেন শেষ ওভারে। ৭ চার ও ৪ ছক্কায় সাজানো তার ম্যাচ ৮২ রানের ইনিংস।
জশ হেইজেলউড ও মিচেল স্টার্ক ফিরলেও ম্যাচে তেমন প্রভাব রাখতে পারেননি। হেইজেলউড ৪ ওভারে দেন ৩৯ রান, স্টার্ক ৪২ রান দিয়ে পান একটি উইকেট। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৩৪ রানে ৩ উইকেট নেন স্টয়নিস। জ্যাম্পার প্রাপ্তি ২৬ রানে ২টি। রান তাড়ায় অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ভালো ছিল না। প্রথম পাঁচ ওভারের মধ্যে তারাও হারায় দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও অ্যারন ফিঞ্চকে। ওপেনিংয়ে ফিরে ফিঞ্চ ১৩ বলে করেন ১৩।
পাওয়ার প্লেতে অস্ট্রেলিয়ার রান ছিল ২ উইকেটে ৪১। ম্যাক্সওয়েলও টিকতে পারেননি। কারানের বাউন্সারে তিনি ক্যাচ ফিরে ফেরেন ১১ বলে ৮ রান করে। অবাক করা হলেও সত্যি, তার সবশেষ ছয় টি-টোয়েন্টি ইনিংসে এটিই সর্বোচ্চ! মার্শ ও স্টয়নিসের ব্যাটে এরপর এগিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। স্টয়নিসের ১৩ বলে ২২ রানের ইনিংস শেষ হয় কারানের বলে ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে। মার্শের ঝড় থামান স্টোকস। ৩ চার ও ২ ছক্কায় ডানহাতি ব্যাটসম্যান ৪৫ রান করেন ২৯ বলে।
শেষ ৩ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার দরকার ছিল ৩৪ রান। ২১ বলে ৪০ রানে ব্যাটিংয়ে তখন ডেভিড। সেই রানেই পরের ওভারে তাকে বোল্ড করে দেন কারান, রান দেন কেবল ৩। রিস টপলির পরের ওভারে আসে ৯। শেষ ওভারে প্রথম বলে কামিন্স ছক্কা মারলেও আর বাউন্ডারি আসেনি। ম্যাথু ওয়েড উইকেটে থাকলেও কিছু করে দেখাতে পারেননি। অস্ট্রেলিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে এটিই ইংল্যান্ডের শেষ সিরিজ। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে টানা দুই জয় নিশ্চিতভাবে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে ইংলিশদের। একই মাঠে শুক্রবার শেষ ম্যাচে স্বাগতিকদের সামনে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর চ্যালেঞ্জ।


প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২২ | সময়: ৬:১৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ