বাগাতিপাড়ায় সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ 

বাগাতিপাড়া প্রতিনিধিঃ

নাটোর জেলার বাগাতিপাড়া উপজেলার এক কর্মকর্তা ও এক কর্মচারির দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন এক ব্যক্তি। অভিযোগে জানা যায়,একজন ১০ বছর আরেকজন ৬ বছর ধরে একই অফিসে চাকুরি করছেন। চাকুরি বিধি লঙ্ঘন করে একই অফিসে দীর্ঘদিন কর্মরত থাকায় নানা অনিয়ম করছেন তারা। সম্প্রতি এনিয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন মুনছুর রহমান নামের স্থানীয় ভুক্তভোগী।

 

 

বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপ প্রশাসনিক কর্মকর্তা জীবন কৃষ্ণ দাস ও অফিস সহকারী(স্ট্যানো টাইপিস্ট)আলমগীর হোসেন’র বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতি অভিযোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার অভিযোগের অনুলিপি সকল গণমাধ্যমকে জানানো হয়।

 

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তথ্যসেবা অফিসের এক নারী সাথে জীবন কৃষ্ণর অবৈধ পরকীয়া সম্পর্ক চলছে। হিন্দু হয়ে মুসলিম ওই নারী সাথে অবৈধ পরকীয়া প্রেমের কেলেস্কারীর কথা উপজেলার সকলের মুখে মুখে ভাইরাল। তাছাড়া জীবন কৃষ্ণ ও আলমগীর দৈর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে আসছে। তারা প্রজান্ত্রের কর্মচারী হয়ে সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে নামে-বেনামে নিজেরাই ঠিকাদারির কাজ করে। তার মধ্যে অন্যতম নারী উন্নয়ন ফোরামের ঘর, আদিবাসীদের ঘর ও ইউএনওর বাংলোর সীমানা প্রাচীর নির্মাণ। যা তাদের চাকুরীরবিধী বৈহিভূত। উপজেলা পরিষদের আওতাধীন সকল বিল্ডিং(অফিস ও আবাসিক) এর সংষ্কার কাজ নিদিষ্ট মিস্ত্রি দ্বারা নিদিষ্ট দোকান থেকে কমিশনের মাধ্যমে এরা দু’জনই করে।

 

উপজেলার বিভিন্ন ধানী ও ভিটা জমিতে পুকুর কাটার অনুমোদন করে দিয়ে ঐ জমির মালিকদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় উৎকচ গ্রহণ করে থাকে জীবন ও আলমগীর। প্রশাসনের বিভিন্ন ক্রয়কৃত সামগ্রীর ভুয়া বিল-ভাউচার করে থাকে। গুচ্ছ গ্রামের যে ঘর গুলো নির্মাণ করা হয়েছে তাতে যা উন্নত মানের সামগ্রী দেয়ার কথা থাকলেও তা না দিয়ে পি.আই.ও অফিসের সেলিমের সহযোগীতায় জীবন ও আলমগীর নিম্ন মানের ইট, রড, সিমেন্ট, কাঠ, টিন, বালি ও জানালা-দরজার স্টিলের র্শীট ব্যবহার করে দূর্নীতির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। যা নিয়ে এর আগে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশও হয়েছে। উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসনের সকল অনুষ্ঠানে যে ব্যানার-ফেসটুন তৈরি করা হয় তা, এই উপজেলার কোনো দোকানে না করে জেলা শহরের একটা নির্দিষ্ট দোকানে তৈরি করা হয়।

 

কারণ, প্রতিটা কাজ থেকে একটা নিদিষ্ট পরিমাণ কমিশন বানিজ্য করে জীবন বাবু। উপজেলা পরিষদ এলাকায় বিদুৎতের লোড বৃদ্ধি না করার ফলে মিটার পুড়ে যেতো। বিদুৎ অফিস বার বার বলার পরেও জীবন বাবু লোড বৃদ্ধির আবেদন না করে রাষ্ট্রের অর্থ তছুরপাত করে একাধিকবার নতুন মিটার লাগিয়েছে।

 

 

অভিযোগপত্র থেকে নম্বর পেয়ে মোবাইলে ওই অভিযোগকারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ২০১৬সনে জীবন কৃষ্ণ ও ২০১২ সনে আলমগীর এখানে যোগদান করেন। এর আগের ইউএনও প্রিয়াংকা দেবী পালের ব্যাক্তিগত ঘনিষ্ট পরিচয়ে সুযোগে অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে। আপনি কিভাবে জানলেন এসব? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অনেক আগে থেকে শুনে আসছি কিন্তু বিশ্বাস করিনি। উপজেলার নতুন ভবনে কাজের সুবাদে প্রতিদিন সেখানে যেতে হতো, তখন এর সত্যতা পাই। তাদের ভয়ে কেউ অভিযোগ করতে সাহস পাইনি এতোদিন তাই অভিযোগ করেনি। এ সংক্রান্ত বিল ভাউচার যাচাই করলে এর প্রমাণ মিলবে বলে আবারও দাবি করেন তিনি।

 

 

 

নির্বাহী কর্মকর্তার উপ প্রশাসনিক কর্মকর্তা জীবন কৃষ্ণ দাস ও স্ট্যানো টাইপিস্ট আলমগীর হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, কেউ তাদের হয়রানি করতে এমন মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। এ অভিযোগের সত্যতা নেই বলেও দাবী করেন তারা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারঃ) সুরাইয়া মমতাজ বলেন, আমি সবে মাত্র যোগদান করেছি। তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা আমি শুনেছি। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, জীবন কৃষ্ণ ও আলমগীর হোসেন’র বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগটি ডাকযোগে পেয়েছি। যার সত্যতা আছে কি-না তা নিশ্চতের জন্য তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

 

সানশাইন/তৈয়ব


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৩, ২০২২ | সময়: ১০:৪২ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine