সর্বশেষ সংবাদ :

বাংলাদেশের প্রথম ‘টার্গেট’ মালদ্বীপ ও পাকিস্তান

স্পোর্টস ডেস্ক: ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে থাকা মালয়েশিয়ার বিপক্ষে দুটি প্রীতি ম্যাচের প্রাপ্তির মধ্যেই সাফের অনুপ্রেরণা খুঁজছেন বাংলাদেশ কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন।
অনেক দৌড়ঝাঁপ করেও সাফের আগে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার চাওয়া পূরণ হয়নি। ফলে দলের শক্তি, দুর্বলতার সবশেষ অবস্থা জানতে না পারার খচখচানি আছে কিছুটা হলেও। তবে কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন গত ছয় মাসের প্রস্তুতি, গত জুনে ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকা মালয়েশিয়ার বিপক্ষে দুই প্রীতি ম্যাচের প্রাপ্তির মধ্যে খুঁজে নিচ্ছেন অনুপ্রেরণার রসদ। বললেন, মালদ্বীপ ও পাকিস্তানকেই হারানোই প্রাথমিক লক্ষ্য তার। এরপর ভাববেন বাকিদের নিয়ে।
নেপালের কাঠমান্ডুতে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর শুরু হবে মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ষষ্ঠ আসর। আগের পাঁচ আসরের সবগুলোতেই চ্যাম্পিয়ন ভারত। চারবার রানার্সআপ নেপাল। ২০১৬ সালে একবারই ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ, সেবার ভারতের কাছে হেরে রানার্সআপ হয়েছিল ছোটনের দল।
গ্রুপ পর্বেই এবার ভারতের সঙ্গে দেখা হবে বাংলাদেশের। ‘এ’ গ্রুপের বাকি দুই দল মালদ্বীপ ও পাকিস্তান। ৭ সেপ্টেম্বর মালদ্বীপের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ দল। পরের দুই ম্যাচ ১০ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান ও ১৩ সেপ্টেম্বর ভারতের বিপক্ষে। ছোটন আপাতত মালদ্বীপ ও পাকিস্তানের ম্যাচের ছক কষছেন।
“সেমি-ফাইনাল খেলতে হলে শুরুর দুই ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই ম্যাচে আমরা আপাতত মনোযোগ দিচ্ছি। যখন আমরা সেমিতে যাব, সেটা নিয়ে তো আমাদের পরিকল্পনা আছেই, সেটা তখন পুরোপুরি বাস্তবায়ন করব। ট্রেনিংয়েও আমাদের সেটা নিয়ে কাজ হয়েছে। আপাতত আমরা মালদ্বীপ ও পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে কাজ করছি।”
পাকিস্তান দলে আছেন বেশ কয়েকজন প্রবাসী খেলোয়াড়। তবে এ নিয়ে ভাবনার কিছু দেখছেন না বাংলাদেশ কোচ। গত জুনে মালয়েশিয়ার বিপক্ষে খেলা দুই প্রীতি ম্যাচ, এর আগে সাফে প্রবাসী খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দেওয়ার অভিজ্ঞতা থাকায় কিছুটা নির্ভার তিনি।
ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে ৯০তম স্থানে থাকা মালয়েশিয়ার বিপক্ষে দুই ম্যাচ ‘সিরিজের’ প্রথমটিতে ৬-০ গোলে জিতেছিল বাংলাদেশ, পরের ম্যাচ হয়েছিল গোলশূন্য ড্র। আফগানিস্তানকে ২০১৪ সালের সাফে ৬-১ এবং ২০১৬ তে ৬-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল দল।
“সূচি ঘোষণার পর ৬ সপ্তাহ অনুশীলন করেছি। মেয়েরা মাঠে এবং জিমে কঠিন অনুশীলনের মধ্যে ছিল। প্রতিদিন তাদের যে হার্ড ওয়ার্কের রুটিন ছিল, সেটা পালন করেছে। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে যে দুইটা ম্যাচ আমরা খেলেছিলাম, সেখানে আমাদের যে শক্তি, দুর্বলতা ছিল, তা নিয়ে মূলত কাজ করেছি। আমি মনে করি, মেয়েরা এই টুর্নামন্টের জন্য তৈরি। প্রথম ম্যাচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, জয় দিয়ে প্রথম ম্যাচ শুরু করব।”
“আফগানিস্তানকে আমরা দুইটা সাফে পেয়েছি, ওদের দলে ইউরোপিয়ান খেলোয়াড় ছিল। সেখানে ওদের বিপক্ষে সাবিনাদের খেলার ভালো একটা অভিজ্ঞতা আছে। দুই সাফেই ওদের বিপক্ষে আমরা ভালো মার্জিনে জিতেছি। এখানে আশা করি, সাবিনারা তাদের সর্বোচ্চ দিয়ে খেলবে এবং ভালো করবে।”
২৩ জনের দলে বয়সভিত্তিক দলের খেলোয়াড়ই ১৯ জন। তবে সবার বয়সভিত্তিক এবং জাতীয় পর্যায়ে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। সবশেষ ২০১৯ সালের আসরে খেলা দলের ১৫ জন আছেন এই দলে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারাও পরিণত হয়েছেন অনেক। ছোটন তাই আরও বেশি আশাবাদী। তবে তিনিও মেনে নিচ্ছেন ভারত ও নেপালের সিনিয়র দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে মারিয়া-শামসুন্নাহারদের বয়সের পার্থক্যটা।
“(২০১৯ চ্যাম্পিয়নশিপ) তখন অন্যদের সঙ্গে আমাদের বয়সের একটা পার্থক্য ছিল। এখনও সেই পার্থক্যটা আছে। এটা সিনিয়র টুর্নামেন্ট। এই দলের অনেকে অনূর্ধ্ব-১৯ খেলেছে। জামশেদপুরে যারা গেছে, তারাও অনূর্ধ্ব-১৮ দলের খেলোয়াড়। অধিকাংশ প্লেয়ারই বয়সভিত্তিক দলের। তবে এই তিন-চার বছরে তারা অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে। শারীরিক সামর্থ্য বেড়েছে। মানসিকভাবেও তাদের অনেক পরিবর্তন এসেছে। সেটার প্রমাণ যদি বলিৃর‌্যাঙ্কিংয়ে মালয়েশিয়া আমাদের চেয়ে অনেক এগুনো ছিল, ফিজিক্যালিও এগিয়ে ছিল, কিন্তু তাদের বিপক্ষে পারফরম্যান্স দেখাচ্ছে আমরা প্রতিনিয়ত উন্নতির দিকে যাচ্ছি।”
বাংলাদেশ দল: রুপনা চাকমা, ইতি রানী, সাথী বিশ্বাস, মাসুরা পারভীন, আঁখি খাতুন, শামসুন্নাহার (সিনিয়র), শিউলি আজিম, নিলুফা ইয়াসমিন নীলা, আনাই মগিনি, মারিয়া মান্ডা, মনিকা চাকমা, শামসুন্নাহার (জুনিয়র), সোহাগী কিসকু, স্বপ্না রানী, ঋতুপর্ণা চাকমা, সানজিদা আক্তার, মার্জিয়া, সাবিনা খাতুন, কৃষ্ণা রাণী সরকার, সিরাত জাহান স্বপ্না, তহুরা খাতুন, আনুচিং মোগিনি ও সাজেদা খাতুন।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২, ২০২২ | সময়: ৫:৪০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ