সর্বশেষ সংবাদ :

বিশ্বকাপের ভুল এশিয়া কাপেও করল বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক: মন্থর উইকেট। সহজে বল আসছে না ব্যাটে। একটু থেমে যাওয়ায় ভুগতে হচ্ছে ব্যাটসম্যানদের। সঙ্গে বল নিচু হয়ে যাওয়ায় চ্যালেঞ্জ আরও বেশি। অনেকটা ‘মিরপুরের মতো উইকেটে’ বাড়তি একজন স্পিনার খেলানোই স্বাভাবিক। কিন্তু বাংলাদেশের একাদশে দেখা গেল বাড়তি পেসার! ম্যাচ হারার পর এটিকে সঠিক দাবি করে দলের সিদ্ধান্তের হয়ে ব্যাট করলেন মোসাদ্দেক হোসেন।
ব্যর্থতায় ঘেরা গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শারজাহর এই মাঠে দুই ম্যাচেই ‘ভুল একাদশ’ গড়েছিল বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বাড়তি পেসার দরকার ছিল, দল নেমেছিল তিন স্পিনার নিয়ে। যেখানে চার পেসার খেলিয়ে সফল হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। আবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন স্পিনার দরকার ছিল, সেই ম্যাচ খেলতে নেমেছিল দুই জন নিয়ে।
এবার আটঘাট বেঁধেই খেলতে এসেছিল বাংলাদেশ। ম্যাচের আগের দিন স্টেডিয়ামে ঘুরে গিয়েছিলেন টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ ও টেকনিক্যাল ডিরেক্টর শ্রীধরন শ্রীরাম। এরপরও গড়া গেল না ‘সঠিক একাদশ।’
৭ উইকেটে হেরে যাওয়া ম্যাচে বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুতেই বোঝা যায় স্পিনারদের জন্য বেশ সহায়তা আছে। পাওয়ার প্লেতে তিন উইকেট নেন রহস্য স্পিনার মুজিব উর রহমান।
ম্যাচে আফগানিস্তানের ৩ স্পিনার ১২ ওভারে ৭১ রান দিয়ে নেন ৬ উইকেট। নবির বলে মোসাদ্দেক হোসেনের ক্যাচ ধরার চেষ্টায় আজমতউল্লাহ ওমরজাই ছক্কা বানিয়ে না দিলে আরও উজ্জ্বল হতে পারতো পরিসংখ্যান। পরে ভালো করেন বাংলাদেশের তিন স্পিনারও। সাকিব আল হাসান ৪ ওভারে ১৩ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। অফ স্পিনার শেখ মেহেদি হাসান ৪ ওভারে দেন ২৬ রান। অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মোসাদ্দেক হোসেন ২.৩ ওভারে ১২ রান দিয়ে নেন এক উইকেট। সব মিলিয়ে ১০.৩ ওভারে ৫১ রান দিয়ে ২ উইকেট।
তিন পেসারের কারও একজনের বদলে এই ম্যাচে অনায়াসেই তাদের সঙ্গী হতে পারতেন নাসুম আহমেদ। স্পিনে অধিনায়কের হাতে থাকত বাড়তি অস্ত্র। উইকেটের আশায় সাকিব পাওয়ার প্লেতেই শেষ করে ফেলেন তার ৩ ওভার। আঁটসাঁট বোলিংয়ে ১০ রানে নেন ১ উইকেট। সে সময়ই প্রকট হতে থাকে নাসুমের অভাব।
পাওয়ার প্লের পর আর মাত্র ১ ওভার বাঁহাতি স্পিন ব্যবহার করতে পারেন সাকিব। পরে পেসারদের উপর চড়াও হয়ে ম্যাচ বের করে নেন নাজিবউল্লাহ জাদরান। মুস্তাফিজুর রহমান, মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন ও তাসকিন আহমেদ মিলিয়ে ৮ ওভারে ৭৯ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। শেষ দিকে মুস্তাফিজ ও সাইফের দুই ওভারে ৩৯ রান নিয়েই ম্যাচ ঘুরিয়ে দেয় আফগানরা।
ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিন পেসার নিয়ে খেলার পক্ষে বলতে গিয়ে মোসাদ্দেক বললেন বোলিং বৈচিত্র্েযর ঘাটতির কথা। “বিশ্ব ক্রিকেটের সবাই জানে, আফগানিস্তানের স্পিন আক্রমণ কতটা শক্তিশালী। সেদিক থেকে চিন্তা করলে, আমাদের অমন বড় টার্ন করানোর মতো বোলার নেই। রিস্ট স্পিনারও নেই, সবাই অর্থোডক্স। এভাবে বিশ্লেষণ যদি করেন, বোলারদের জন্য ম্যাচ হেরেছি, ব্যাপারটা আসলে অমন না। এখানে হার্ড লেংথের বল খেলা কঠিন। ১২৭ পর্যন্ত গেছি, সেটি যথেষ্ট ছিল না।”
বোলিংকে হারের জন্য দায় দিতে রাজি নন মোসাদ্দেক। তাই বাড়তি স্পিনার খেলালেও খুব একটা পার্থক্য হতো বলে মনে করেন না তিনি। এই অলরাউন্ডার কাঠগড়ায় তুললেন ব্যাটসম্যানদেরই। “হেরে যাওয়ার পর মনে হয়, অনেক কিছু করা যেত। তবে আমার মনে হয়, সবকিছুই ঠিক ছিল। ব্যাটিংয়ে আরেকটু ভালো করলে তাহলে ম্যাচ আমাদের পক্ষে থাকত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেটি করতে পারিনি।”


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২২ | সময়: ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ