জ্বালানি তেলের অজুহাতে বাড়ছে দ্রব্যমূল্যের দাম, প্রয়োজন বাজার নিয়ন্ত্রণ

নুরুজ্জামান,বাঘা : জ্বালানি তেলের দামবৃদ্ধির অজুহাতে সকল পন্যের দাম বাড়ানো হয়েছে।এর ফলে বিপাকে পড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষ।পুষ্টি হিসাবে যাদের অনেকটা হাতের নাগালে ছিল ডিম, সেই ডিমের দামও এখন নাগালের বাইরে। অনেকেই বলছেন, এর পেছনে একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। এটি নিয়ন্ত্রনের জন্য প্রয়োজন কঠোর হস্তে বাজার নিয়ন্ত্রন। কিন্তু সেটি হচ্ছে না ।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে জানা গেছে, জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর কাঁচাবাজার এবং ঔষধ থেকে শুরু করে সকল পন্যের দাম বৃদ্ধি করেছে ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বেড়েছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বাজারে। তবে হিসেব করে দেখা গেছে, এক স্থান থেকে আরেক স্থানে এক ট্রাক চাল আনার জন্য ট্রাকের ভাড়া যতটা-বেড়েছে, সে তুলনায় বস্তপ্রতি দাম বাড়ার কথা সর্বচ্চ একশত টাকা। অথচ প্রতি বস্তা চালের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে চার থেকে পাঁচশ টাকা।

বাঘার সাবেক চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট সমাজ সেবক খন্দকার মনোয়ারুল ইসলাম মামুন বলেন, বাঘা উপজেলাকে সবজি ভান্ডার বলা হয়। কারণ এ উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চলে যে পরিমান সবজি উৎপাদন হয়, তা স্থানীয় চাহিদা পুরনের পর আমদানি করা হয় রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে । এ দিক থেকে এখানে কাঁচা বাজার সংক্রান্ত কোন পন্যেরই দাম বাড়ার কথা নয়। অথচ জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার অজুহাতে বাজারে পেঁয়াজ-রসুন ও কাঁচা মরিজ থেকে শুরু করে সকল পন্যে আগুন লেগেছে। এর কারণ ভোক্তা অধিকার এবং উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন তদারকি নেই। তিনি বলেন, প্রতিটা মানুষের জন্য সুসম খাদ্য অত্যাবসক। এ দিক থেকে প্রতি হালি ডিমের দাম বাড়ানো হয়েছে ত্রিশ টাকা। এর ফলে নিম্ন আয়ের মানুষরা চরম বিপাকে রয়েছেন।

তবে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে গত কিছু দিন ধরেই মুরগির খাদ্য উপকরণের দাম বেড়েছে। সেই সঙ্গে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বেড়েছে। এছাড়া করোনা-সহ বিভিন্ন কারণে অনেক খামার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ডিমের উৎপাদন আগের চেয়ে কমেছে। এসবের প্রভাব পড়েছে ডিমের দামের ওপর। তাই ডিমের দাম বাড়ানো হয়েছে।

অপর দিকে খামারিরা বলেছেন, ডিমের দাম বেড়েছে এটা সত্যি। কিন্তু আমরা বাড়তি দাম পাচ্ছি না। এখানে একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। এই সিন্ডিকেট ডিমের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা এ বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।

সরেজমিন শুক্রবার বাঘা উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজির মধ্যে সবচেয়ে কম দামে বিক্রি হচ্ছে পেঁপে। পাঁচ টাকা বেড়ে বর্তমান বাজারে এক কেজি পেঁপের দাম ৩০ টাকা। ৩৫ টাকা কেজির পটল ও ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। অর্থাৎ ১৫ টাকা বেড়েছে। ৪৫ টাকার শশা বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও ৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া চিচিঙ্গা , ধুন্দল, কাঁকরোল ও কচু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। একই দামে বিক্রি হচ্ছে রববটি। ৬০-৭০ টাকার উস্তা-করলা, বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায় এবং কাঁচা মরিজ এর দাম বেড়েছে কেজিতে একশত পঞ্চাশ টাকা।

সার্বিক বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার বলেন, আমি ইতোমধ্যে ব্যবসায়ী এবং বনিক সমিতির নেতাদের সাথে দ্রব্য মূল্যের বাজার নিয়ন্ত্রন রাখার বিষয়ে নিয়ে কথা বলেছি। তার পরেও যদি তারা কথা না রাখে , প্রয়োজনে আমি এবং সহকারি কমিশনার ভূমি পৃথক-পৃথক ভাবে বাজার মনিটরিং করবো।


প্রকাশিত: আগস্ট ২০, ২০২২ | সময়: ১০:২৪ পূর্বাহ্ণ | সানশাইন