সর্বশেষ সংবাদ :

রাশিয়ার তেল নিয়ে তথ্য গোপন করছে ভারত, উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের

সানশাইন ডেস্ক: রাশিয়ার ট্যাঙ্কার থেকে সমুদ্রে তেল নিয়ে একটি জাহাজ গুজরাটে যায়, সেখানে পরিশোধনের পর সেটির নতুন গন্তব্য হয় ‘নিউ ইয়র্ক’। রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল এনে পরিশোধনের পর ভারত তা খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই রপ্তানি করছে।
এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তাদের চোখ এড়াতে ভারতীয় জাহাজ গভীর সমুদ্রে তেল হাতবদল করছে। ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের এ উদ্বেগের বিষয়টি প্রকাশ্যে আনেন বলে জানায় বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার ডেপুটি গভর্নর মাইকেল পাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ভারতকে বলা হয়েছে যে, একটি ভারতীয় জাহাজ গভীর সমুদ্রে রাশিয়ার একটি ট্যাঙ্কার থেকে তেল নিয়েছে এবং ওই তেল নিয়ে ভারতের পশ্চিমের রাজ্য গুজরাটের একটি বন্দরে গেছে। সেখানে পরিশোধনের পর ওই পরিশোধিত পণ্য নিয়ে আবার সমুদ্রে পাড়ি জমিয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেইনে রুশ আগ্রাসনের জেরে রাশিয়ার জ্বালানির উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। যার ফলে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল, পরিশোধিত তেল, ডিসটিলেট, কয়লা এবং গ্যাসসহ রাশিয়া থেকে সব ধরনের জ্বালানি পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ হয়ে যায়।
ভারতের ৭৫তম স্বাধীনতা দিবসের উদযাপন উপলক্ষ্যে এক অনুষ্ঠানে মাইকেল পাত্র বলেন, ‘‘পরিশোধিত তেলজাত পণ্য পুনরায় ওই জাহাজটিতে ভরা হয় এবং সেটি কোনো নির্দিষ্ট গন্তব্যস্থল ছাড়াই সমুদ্র পথে রওয়ানা হয়। মাঝ সমুদ্রে গিয়ে জাহাজটি জানতে পারে সেটিকে কোথায় যেতে হবে এবং সেটি তার গন্তব্যে পৌঁছায়। সেটি নিউ ইয়র্ক গেছে।” ডেপুটি গভর্নরের এই বক্তব্যের বিষয়ে দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে তাৎক্ষনিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের তেল কেনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের উদ্বেগ জানানোর বিষয়ে এই প্রথম ভারতীয় কোনো কর্মকর্তা প্রকাশ্যে কথা বললেন। যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার জ্বালানির উপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে তাতে অবশ্য দিল্লি অংশ নেয়নি বা সম্মতি দেয়নি। এমনকি ইউক্রেইনে রুশ আগ্রাসনের কারণে মস্কোর নিন্দা জানাতেও রাজি হয়নি ভারত। ফলে রাশিয়া থেকে তেল কিনতে তাদের কোনো বাধা নেই।
নিজের বক্তব্যের বিষয়ে মাইকেল বলেন, ‘‘আমি বলেছি রাশিয়ার ক্রুড পরিশোধনের পর সেটিকে ডিসটিলেটে রূপান্তর করা হয়েছে।” একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক উৎপাদন করতে ডিসটিলেটের প্রয়োজন হয়। তবে কোন ভারতীয় জাহাজে বা কোনো শোধনাগারে ওই তেল পরিশোধন করা হয়েছে তা তিনি জানাতে পারেননি।
বলেন, ‘‘আসলে যুদ্ধ এভাবেই কাজ করে। এটা খুবই অদ্ভুত পথে কাজ করে।” ভারতে বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ তেল আমদানিকারক ও ভোক্তা দেশ। ইউক্রেইন যুদ্ধের আগে তারা রাশিয়া থেকে খুব সামান্য পরিমাণ জ্বলানি তেল আমদানি করতো। কিন্তু যুদ্ধ শুরুর পর ভারতের তেল শোধনাগারগুলো পাল্লা দিয়ে রাশিয়া থেকে ছাড় মূল্যে তেল কিনছে।


প্রকাশিত: আগস্ট ১৫, ২০২২ | সময়: ৫:৪৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ