সর্বশেষ সংবাদ :

৭.১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল ফিলিপিন্স

সানশাইন ডেস্ক: দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ভূমিকম্পে অন্তত চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। আহত অর্ধশতাধিক। প্রবল কম্পনে বিভিন্ন ভবন ও ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। ফিলিপিন্সের উত্তরাঞ্চলীয় লুজন দ্বীপে শক্তিশালী ভূমিকম্পে হাসপাতাল ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে, কম্পন অনুভূত হয়েছে রাজধানী ম্যানিলা থেকেও।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস এর তথ্য অনুযায়ী, স্থানীয় সময় বুধবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৭ দশমিক ১। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ডলোরেস শহর থেকে ১১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে, ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। দেশটির কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এর মধ্যে বেনগুইত প্রদেশে দুইজন, আবরা প্রদেশে একজন এবং অন্য এক প্রদেশে আরেকজনের মৃত্যু হয়েছে, সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই বলেছেন ফিলিপিন্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বেনজামিন আবালোস। ভূমিকম্পে আহতের সংখ্যা ৬০ বলেও তিনি জানিয়েছেন। প্রবল কম্পনে দেশটির একাধিক প্রদেশে বিভিন্ন ভবন ও ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। আবরা প্রদেশে একটি হাসপাতাল ভবন আংশিক ধসে পড়ার পর সবাইকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আবরার ভাইস গভর্নর জয় বের্নোস তার ফেইসবুকে ক্ষতিগ্রস্ত ওই হাসপাতাল ভবনের ছবি প্রকাশ করেছেন। সেখানে দেখা গেছে, হাসপাতালের সামনের অংশে দেয়ালে গর্ত তৈরি হয়েছে ভূমিকম্পের ফলে। সোশাল মিডিয়ায় আসা আরও কিছু ছবিতে রোগীসহ হাসপাতালের বেড রাস্তা দিয়ে সরিয়ে নিতে দেখা যায়। যে ৬০ জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে তার ৪৪ জনই আবরার; ভূমিকম্পে ১৭৩টি ভবনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ৫৮টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবালোস।
“ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির বেদনাদায়ক খবরাখবর এলেও প্রাকৃতিক এ বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিচ্ছি,” ফেইসবুকে বলেছেন ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস। প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ারের’ মধ্যে অবস্থিত ফিলিপিন্সে নিয়মিতই প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা যায়। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এ দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প হয়, গড়ে প্রতিবছর ২০টি টাইফুনও আঘাত হানে, যার কোনো কোনোটি ডেকে আনে প্রাণঘাতী ভূমিধস।
উত্তরাঞ্চলের ইলোকোস সুর প্রদেশের কংগ্রেস সদস্য এরিক সিংসন তাদের প্রদেশেও ৩০ সেকেণ্ডের বেশি সময় ধরে কম্পন অনুভূত হয়েছে বলে জানিয়েছেন। প্রবল কম্পনে লুজনের পশ্চিম উপকূলে ভিগান শহরের অনেক ঐতিহ্যবাহী ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। শহরটি পুরনো স্পেনিশ রীতির ঔপনিবেশিক স্থাপত্যের জন্য পরিচিত।
স্থানীয় এক রেডিওকে এডিসন এডুকুল নামের এক পর্যটক বলেছেন, ভূমিকম্পের সময় ভিগানের বান্টে চার্চ বেল টাওয়ার প্রায় তিন মিনিট ধরে কেঁপেছে। সেনেটর ইমি মার্কোস জানান, ভূমিকম্পে বেশ কয়েকটি গির্জা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। “বান্টে বেল টাওয়ার থেকে প্রাচীন ইট ও প্রবাল পাথর খুলে পড়েছে,” বলেছেন তিনি। কম্পন অনুভূত হওয়া রাজধানী ম্যানিলার বেশ কয়েকটি উঁচু ভবনও তাৎক্ষণিকভাবে খালি করে ফেলা হয়, ব্যস্ত সময়ে শহরের মেট্রো রেল ব্যবস্থাপনাও থমকে পড়ে।


প্রকাশিত: জুলাই ২৮, ২০২২ | সময়: ৫:৫৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ