অতি জনপ্রিয়তা উন্নয়নের অন্তরায়: রাজশাহী ডিসি

স্টাফ রিপোর্টার

যারা রাজনীতি ও সমাজ সেবার সাথে জড়িত তারা যদি অতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। তাঁর পিছনে যদি সার্বক্ষণিক লোকজন গাড়ি বহর নিয়ে থাকে এবং সার্বক্ষণিক তোষামদি করে তাহলে ঐ ধরনের জনপ্রিয় ব্যক্তি সমাজ তথা দেশের কোন উন্নয়নে আসে না। কারণ তিনি তোষামদ গ্রহণে এতটাই ব্যস্ত হয়ে উঠেন যে, কোনটা ভাল এবং কোন খারাপ, কোনটা করতে হবে আর কোনটা বাদ দিতে হবে সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদ পরিকল্পনায় টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অন্তর্ভূক্তকরণ কৌশল বিষয়ক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাজশাহী জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল এই কথাগুলো বলেন।

তিনি বলেন, শুধুমাত্র বিভিন্ন ধরনের বিচার, অফিসে এসে আড্ডামারা, বিভিন্ন স্থানে দাওয়াত খাওয়া ও প্রকল্পের টাকা আত্মস্বাত করে নিজের পকেট ভারী করার দিন শেষ হয়ে গেছে। কোন প্রকার অনিয়ম ও দূর্নীতি করে কেউ অতিতে করে পার পায়নি, ভবিষ্যতেও পাবেনা বলে বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন।

জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের নির্ধারিত কর সঠিকভাবে উঠছে কিনা, পরিষদ এলাকায় কোথায় কোথায় কোন কোন সমস্যা আছে সেগুলো তোষামদকারী বা চাটুকর সাথে আলোচনা না করে স্ব স্ব ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যদের সাথে আলোচনা করে বের করতে হবে বলে জানান তিনি।

প্রধান অতিথি আরো বলেন, যতদিন সেবা করার জন্য থাকবেন সঠিক ভাবে সেবা প্রদান করবেন। তাহলে আপনাকে সারাজীবন মানুষ মনে রাখবে। তিনি বলেন, দেশকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যেতে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি লক্ষমাত্রা বাস্তবায়ন করতে হবে। এসডিজি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলে বর্তমান সরকারের ঘোষিত ২০৪১ সালের মধ্যে দেশ একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আর এই উন্নত রাষ্ট্রে দেশকে পরিণত করতে সবাইকে সততা, জবাবদিহিতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করতে হবে বলে বক্তব্যে উল্লেখ করেন জেলা প্রশাসক।

তিনি বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের (এসডিজি) মূল্য লক্ষ্য হচ্ছে এমন উন্নয়ন সাধন করা যাতে কেউ পিছিয়ে না থাকে, সবাই যাতে সমান তালে এগিয়ে যায়। অর্থাৎ আমাদের সকলের জীবনমানের সামগ্রিক পরিবর্তন করতে হবে। এই চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নে আমাদের প্রত্যেককেই দায়িত্ব নিতে হবে। পারস্পরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে হবে। সম্পর্ককে সম্পদে রূপান্তরিত করতে হবে। সকলে মিলে গ্রামের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে। তবেই টেকসই উন্নয়ন অর্জন করা সম্ভব। আর ইউনিয়ন পরিষদ এক্ষেত্রে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করবে বলে জানান জেলা প্রশাসক। বক্তব্য শেষে দিনব্যাপি প্রশিক্ষণের উদ্বোধন করেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক  স্থানীয় সরকার (ইএএলজি) প্রকল্প, স্থানীয়সরকার বিভাগ এর সহযোগিতায় ও স্থানীয় সরকার শাখা, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় রাজশাহীর আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক শাহানা আখতার জাহান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডিএফ, ইএএলজি, ইউএনডিপি এর আবু হেনা মস্তফা কামাল ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আঞ্জুমান আরা। এছাড়াও বাঘা, গোদাগাড়ী, পবা ও বাগমারা উপজেলার গড়গড়ি, মনিগ্রাম, বাসুদেবপুর,মোহনপুর, পারিলা ও নরদাশ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ পরিষদের সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সানশাইন  / শামি


প্রকাশিত: জুন ২৩, ২০২২ | সময়: ১১:২৮ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine