সর্বশেষ সংবাদ :

বাঘায় অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ !

স্টাফ রিপোর্টার,বাঘা : দেশ অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে চলেছে । বেশকিছু মেগা প্রকল্প এবং ভবন নির্মান-সহ যোগাযোগ অবকাঠামো খাতের উন্নয়নে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে সরকার। গত এক দশকে লক্ষ-লক্ষ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে এবং হচ্ছে। এদিক থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের ঘোষনা দিলেও রাজশাহীর বাঘায় সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছেনা। এখানে দু’টি পৌর সভা, উপজেলা এলজিইডি এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে যে সকল উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে তার অধিকাংশ কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ করেছেন স্থানীয় লোকজন।তারা এ সকল উন্নয়ন কাজ দেখভালের জন্য সরকারের দুর্ণীতিদমন কমিশন দু’দকের দৃষ্টি কামনা করেছেন।

বাঘার সুশীল সমাজের লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান সরকার আমলে রাজশাহীর বাঘার পদ্মা নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের বসত বাড়ী রক্ষার জন্য বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ৭২০ কোটি টাকা ব্যয়ে নদী ডেজিং এবং ব্লক বাধায় কাজ চলমান সহ দু’টি পৌর সভা, উপজেলা এলজিইডি এবং প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস এর মাধ্যমে কোটি-কোটি টাকা অর্থায়নে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মান,কালভাট-ব্রিজ এবং রাস্তা ও ড্রেনের কাজ চলমান রয়েছে। আর এসব কাজের মধ্যে দু’একটি বাদে অধিকাংশ কাজে রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্ণীতি।তাঁদের মতে, সরকার অবকাটামো উন্নয়ন খাতে কোটি-কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও কয়েক বছরের মধ্যেই তা ভেঙ্গে একাকার হচ্ছে।

তাঁরা বলেন, ইতোমধ্যে সরকারি স্থাপনায় রডের বদলে বাঁশ ব্যাবহারের ঘটনাও উদঘাটিত হয়েছে । এমনকি প্রকল্পের কাজ চলমান অবস্থায় আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধনের আগেই বিভিন্ন স্থানে ধসে পড়ার অসংখ্য ঘটনা-ঘটেছে। আর এসব ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করতে গিয়ে অনেক সময় চাঁদাবাজি মামলার শিকার হয়েছেন গনমাধ্যম কর্মীরা।অথচ এগুলো বাস্তবায়নের সাথে যে সকল প্রতিষ্ঠান সম্পৃক্ত তারা এ বিষয়ে কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করছেন না। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক মাত্রায় বিরূপ ধারণা সৃষ্টির পাশা-পাশি সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের প্রতি ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।

বাঘার ১ নং বাজুবাঘা ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান ও সমাজ সেবক খন্দকার মনোয়ারুল ইসলাম মামুন বলেন, প্রতি বছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির বৃহত্তম অংশ ব্যয় করা হচ্ছে সড়ক ও সেতু বিভাগ এবং সড়ক পরিবহন খাতে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ উপজেলা পর্যায়ে পৌরসভার মত স্থানীয় সরকারের নিজস্ব উদ্যোগে নির্মিত প্রকল্পের সর্বত্রই অনিয়ম-দুর্নীতি লক্ষনীয় । শুধু রাস্তা, ব্রীজ-কালভার্টই নয়, স্কুল-কলেজের ভবন, হাসপাতাল, ঘুর্নীঝড় আশ্রয় শিবির থেকে শুরু করে সরকারের বিশেষ প্রকল্প হিসেবে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মত প্রকল্পেও লুটপাট-অনিয়মের চিত্র দেখা গেছে। তিনি বলেন, দেশে আমলাতান্ত্রিক দুর্নীতির পাশা-পাশি স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ইঞ্জিনিয়ার ঠিকাদারদের যোগসাজশে গড়ে ওঠা লুটপাটের সিন্ডিকেট দেশের সম্পদ ব্যবহার করে প্রত্যাশিত উন্নয়নের সুফল থেকে মানুষকে বঞ্চিত করে সম্পদের পাহাড় গড়ার প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়েছে। তাঁর মতে, এ গুলো বন্ধ হওয়া খুবই জরুরী ।

সুধীজনদের মতে, আমাদের দেশে জনগণের রাজস্বের টাকার এমন অপচয় বিশ্বের আর কোথাও হয়না। সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ করে সবচেয়ে খারাপ মানের রাস্তা ও সেতু নির্মান করা হয় বাংলাদেশে। দেশের সম্পদের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতেহলে দুর্ণীতিবাজ সরকারি কর্মকর্তাদের ছাঁটাই এবং অবকাঠামো উন্নয়ন খাতের দুর্নীতিবাজ ঠিকাদারি চক্রের লইসেন্স বাতিল সহ উভয় চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তাঁরা বাঘায় যে সকল উন্নয়ন কাজ চলমান সেগুলি কঠর ভাবে দেখভালের জন্য সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।


প্রকাশিত: মে ৩০, ২০২২ | সময়: ৫:৩৯ অপরাহ্ণ | সানশাইন