সশস্ত্র বাহিনী আধুনিকায়নে সহায়তার আগ্রহ যুক্তরাষ্ট্রের

ঢাকা অফিস: বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী আধুনিকায়নে এবং প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ সংক্রান্ত দুটি চুক্তি জিসোমিয়া (জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট) এবং আকসা (অ্যাকুজিশান অ্যান্ড ক্রস-সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট) নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। বুধবার (৬ এপ্রিল) ওয়াশিংটনে দিনভর বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সংলাপের অষ্টম বৈঠকে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সহযোগিতা, সন্ত্রাসবাদ ও বেসামরিক নিরাপত্তা সহযোগিতা, আঞ্চলিক বিষয় এবং শান্তিরক্ষা সংক্রান্ত চারটি সেশনে আলোচনা হয়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন মাসুদ বিন মোমেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ওই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আর্মস কন্ট্রোল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি আন্ডার সেক্রেটারি বনি ডেনিস জেনকিনস। এর আগে দুই দেশের মধ্যে সাত বার নিরাপত্তা সংলাপ হলেও এবারেই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহে এই সংলাপ পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে হচ্ছে। বাংলাদেশের পক্ষে প্রিন্সিপ্যাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব মো. কামরুল হাসান, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারসহ অন্য কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া, পররাষ্ট্র সচিব এবং প্রিন্সিপ্যাল স্টাফ অফিসার পৃথকভাবে আর্মস কন্ট্রোল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি আন্ডার সেক্রেটারির সঙ্গে  বৈঠক করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা সহযোগিতা সেশনে সামরিক প্রশিক্ষণ, সুনীল নিরাপত্তা, প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা চুক্তি, সমরাস্ত্র ক্রয় এবং সক্ষমতা বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হয়। অন্যদিকে, আঞ্চলিক সহযোগিতা সেশনে রোহিঙ্গা ও ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। শান্তিরক্ষা সেশনে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীদের সাফল্য ও নেতৃত্বের প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্র। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের ভূমিকার জন্য ভূয়সী প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্র এবং এ বিষয়ে সমর্থন অব্যাহত রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয়। অন্যদিকে, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনকে গণহত্যা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সন্তোষ প্রকাশ করে বাংলাদেশ।

দায়িত্বশীল দেশ

বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র এবং বৈশ্বিক সংকট ও সমস্যা সমাধানে অংশগ্রহণ করছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি দল। উভয় পক্ষ সন্ত্রাসবাদ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ দমনে একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছে। বাংলাদেশের আইনশৃংখলা বাহিনী এবং বিচার বিভাগের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা

র‌্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জন্য বাংলাদেশ চরম উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং সিদ্ধান্তটি পুর্বিবেচনা করার অনুরোধ জানায়। বিস্তারিত আলোচনায় সন্ত্রাসবাদ, উগ্রবাদ ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ দমনে র‌্যাবের কর্মকাণ্ড ব্যাখ্যা করে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল। এ বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত রাখতে উভয়পক্ষ একমত হয়। এছাড়া, ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে গঠনমূলক আলোচনা হয়। ঢাকা-নিউ ইয়র্ক সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়। নবম নিরাপত্তা সংলাপ ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।


প্রকাশিত: এপ্রিল ৭, ২০২২ | সময়: ৩:৪৩ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine