সর্বশেষ সংবাদ :

অবশেষে পঞ্চাশ ছুঁলেন গেইল, তবু অচেনাই রইলেন

স্পোর্টস ডেস্ক: ১৯ ওভার খেলে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে প্রায় ১৭০ ছুঁয়ে ফেলার নজির আছে ক্রিস গেইলের। সেঞ্চুরি তো কতগুলোই করেছেন এর চেয়ে অনেক কম ওভার খেলে। ৩০ বলে, ৪৪ -৪৫ বলে সেঞ্চুরির কীর্তিও আছে। সেই গেইল এবার ফিফটির দেখা পেলেন ১৯তম ওভারে, ৪৩ বল খেলে! সময়ের থাবা এমনই প্রবল যে, এমন ফিফটির পরও স্বস্তি পাওয়ার কথা তার। দীর্ঘ অপেক্ষার পর যে এলো এই পঞ্চাশ!
ফরচুন বরিশালের হয়ে মঙ্গলবার সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে বিপিএলে পুরো ২০ ওভার খেলে ৪৫ বলে ৫২ রান করে অপরাজিত থাকেন গেইল। সেরা সময়ের ছায়া হয়ে থাকা এই ইনিংসে ঘুচেছে তার লম্বা এক খরা। টি-টোয়েন্টিতে একসময় ব্যাটিং করতে নামলেই তার ব্যাটে রান দেখা যেত বানের জলের মতো, তার ব্যাটে ভাটার টান অনেক দিন ধরেই। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ২৮ ইনিংস পর এই সংস্করণে ফিফটি পেলেন তিনি।
২০ ওভারের ক্রিকেটে চোখ কপালে তোলা সব সংখ্যার জন্ম দিয়েছেন যিনি, একটি ফিফটি পেতে তার এই দীর্ঘ অপেক্ষা কম বিস্ময়কর নয়। কিংবা, হয়তো এটিই স্বাভাবিক। ৪২ বছল বয়সে গেইল এখন এমনই! যে বিপিএলে তিনি রাজত্ব করেছেন একটা সময়, বোলারদের ওপর স্রেফ ছড়ি ঘুরিয়েছেন ইচ্ছেমতো, সেই টুর্নামেন্টেও এবার প্রথম পঞ্চাশের স্বাদ পেলেন সপ্তম ইনিংসে।
ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে ব্যাটিং দুরূহ উইকেটে তার ৫১ বলে ফিফটি, ৪৭ বলে ফিফটিও আছে। কিন্তু সিলেটের এমন ব্যাটিং উইকেটে ফিফটি পেতে ৪৩ বল লেগে গেলে, তিনি আর গেইল কেন! আর ১০ জনের চেয়ে বরাবরই আলাদা বলেই তো তিনি টি-টোয়েন্টির মহারাজা। অথচ এখানে নবীন মুনিম শাহরিয়ারের ব্যাটে ঝড় ওঠে, সাকিব আল হাসান বোলারদের কচুকাটা করেন, শেষ দিকে তাণ্ডব চালান তার দীর্ঘদিনের ক্যারিবিয়ান সতীর্থ ডোয়াইন ব্রাভো। অথচ গেইল আরেকপ্রান্তে স্রেফ দর্শক হয়ে সঙ্গ দিয়ে যান, এটিই হয়তো সময়ের প্রতিবিম্ব।
বিপিএলে এবার শুরুতে গেইলকে টপ অর্ডারে খেলানোর মতো আস্থা পায়নি বরিশাল। শুরু করেন তিনি পাঁচ নম্বরে খেলে। মিডল অর্ডারে ২ ইনিংস খেলে করেন ৩৬ ও ৭। তৃতীয় ম্যাচে ওপেনিংয়ে ফিরে নিজেকে ফিরে পাওয়ার আভাসও দেন কিছুটা। ৩৪ বলে করেন ৪৫। এরপর আবার ঘুমিয়ে যাওয়া। পরের তিন ম্যাচে করেন ৪, ২৫ ও ১০। অবশেষে এই ম্যাচে উল্লেখযোগ্য একটা ইনিংস খেলতে পারলেন। এতটা সময় উইকেটে কাটাতে পারা, আউট না হয়ে ফেরা, ছোট হলেও একটি মাইলফলকের দেখা পাওয়া, তার জন্য হতে পারে আত্মবিশ্বাসের জ্বালানি।
এমন বাজে সময়ের চক্রে থাকার কারণেই হয়তো এই ইনিংসটি প্রয়োজন ছিল গেইলের জন্য। তার ক্যারিয়ারে গোধূলি বেলা দীর্ঘায়িত হচ্ছে ধারণার চেয়েও অনেক বেশি। ক্যারিয়ার সূর্য ডুবে যাওয়ার আগে আলোর তেজ একটু-আধটু সময়ের জন্য তীব্র হলেও তিনি বিশ্বাস পাবেন মিটমিট করে আরও কিছুদিন জ্বলতে থাকার। তাতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের উপকার কতটা হবে, তা বলা মুশকিল তবে নিজের মনের খোরাক অন্তত আরও কিছুদিন মেটাতে পারবেন তিনি।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৯, ২০২২ | সময়: ৬:০৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ