সর্বশেষ সংবাদ :

বাঘায় বাঁধ নির্মান এলাকায় চলছে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন

স্টাফ রিপোর্টার,বাঘা: রাজশাহীর চারঘাট-বাঘা এলাকায় ৭ শ’কোটি টাকা ব্যায়ে নদীর তীর প্রতিরক্ষা মূলক কাজে ব্যবহারের জন্য ব্লক তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। এখন দরকার নদীর পাড়ে স্লোপিং করে ব্লক, সেটিক করা। কিন্ত তার আগে কতিপয় প্রভাবশালী পাড় সমান করে দেয়ার নামে তিনটি ড্রেজার নামিয়ে বালি (ভরাট) উত্তলন করে ব্যবসা শুরু করছেন। সোমবার দুপুরে উপজেলার মীরগঞ্জ ভানুকর এলাকায় গেলে এ দৃশ্য চোখে পড়ে।

সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর ৬ আসনের স্থানীয় সাংসদ ও বর্তমান সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আলহাজ শাহরিয়ার আলম নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের দু:খ দুর্দশা ও বন্যার কথা চিন্তা করে গত বছর তাঁর নির্বাচনী এলাকা চারঘাটের ইউসুপপুর থেকে বাঘার গোকুলপুর ঘাট পর্যন্ত নদীর তীর রক্ষায় ৭ শ কোটি টাকায় ১২ কিলো মিটার বাঁধ এবং বাঘার চকরাজাপুর এলাকায়া নদী ড্রেজিং করার জন্য আরো প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ অনুমোদন করেন।

সরজেমিন সোমবার দুপুরে উপজেলার মীরগঞ্জ ভানুকর গ্রামের নদী এলাকায় গিয়ে দেখো গেছে, অত্র এলাকার প্রভাবশালী আব্দুর রহমান ও সোহেল নামে দুই ব্যক্তি সহ আরো কিছু লোকজন নদীতে তিনটি ভেকু নামিয়ে দেদারছে ভরাট বালি উত্তোলন করে বাইরে বিক্রী করছেন। যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন ঐ এলাকার আ’লীগ নেতা ফজলুল হক ও স্থানীয় ইউপি সদস্য বাবু-সহ স্থানীয় ভুমি অফিসের জনৈক তৌশীলদার।

নাম প্রকাশ না করার সর্তে মীরগঞ্জ এলাকার একাধিক ব্যবসায়ী ও সাধারণ লোকজন অভিযোগ করে বলেন, শুনেছি নদীর তীর রক্ষার জন্য ১০ টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৭ শ’কোটি টাকা প্রকল্প অনুমোদ পেয়েছেন। তারা ব্লক তৈরীর পাশা-পাশি নদীর পাড় স্লোপিং করবেন এবং যতোটুকু মাটি তোলার দরকার সেটি পাড়ের উপরে এনে পাড় বাধায় করবেন। এতে করে একসাথে দুটি কাজ সম্পন্য হবে। কিন্ত এখানে সেটি হচ্ছে না।

এখানে কতিপয় প্রভাবশালী রাত-দিন সমাজে নদী থেকে প্রতিদিন গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাক বালি উত্তোলন করে মানুষের কাছে বিক্রী করছেন। এর ফলে একদিকে পাকা রাস্তা নষ্ট হচ্ছে। অন্য দিকে সঠিক নিয়মে নদীর পাড় বাধায় করা হচ্ছে না।

এ বিষয়ে খন্দকার কনকষ্টাকশান এর ম্যানেজার নুরুনবী বলেন, নদীর পাড় থেকে ২৫ মিটার স্লোপ এবং ৩৫ মিটার ডামপিং হবে। আর ডামপিং থেকে কিছু মাঠি এনে পাড় বাধায় হবে। এ কাজ গুলো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান করে থাকে। কিন্তু এখানে কতিপয় ব্যক্তি নিজেদের সার্থে তারা এ কাজ গুলো করছে।
এ বিষয়ে বালি উত্তোলনকারী ব্যাক্তি আব্দুর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি ভারত থেকে আনা গরুর ব্যবসা করতাম। এটায় সবাই জানে। বর্তমানে করিডোর বন্ধ থাকায় কিছু লোকজন নিয়ে এই বালি তোলার কাজটি করছি।

এদিকে এলাকাবাসী সহ খোদ বাঁধ রক্ষনা-বেক্ষন কমিটির সদস্যা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি মনিরুজ্জামান, বাঘা উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মেজাজুল ইসলাম মেরাজর অভিযোগ করে বলেন, ব্লক নির্মানে ডোমার বালুর পরিবর্তে নদীর মাটি মিশ্রিত বালু, ছোট উন্নত পাথরের স্থলে নিম্নমানের বড় পাথর এবং বেশি পরিমাণে সিমেন্ট এর স্থলে কম পরিমান সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। তারা বলেন, এসব ব্লক নদীর তীরে ব্যবহার করা মাত্রই নষ্ট হয়ে যাবে। তাঁরা এ বিষয়ে সরকারের উর্ধতন কতৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন।

সার্বিক বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার পাপিয়া সুলতানা বলেন, ব্লক নির্মানে কিছুটা অনিয়মের কথা শুনেছি। কিন্তু বালি উত্তোলনের খবরটি পাইনি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩০, ২০২২ | সময়: ৬:৪৪ অপরাহ্ণ | সুমন শেখ