তানোরে ঘুরতে এসে মারধরের শিকার কিশোরী

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহীর তানোরে ঘুরতে আসা এক কিশোর-কিশোরীকে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের মাধ্যমে মারধরের শিকার হয়েছেন। মারধরের একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি পোস্ট করেন সারুয়ার হোসেন নামে স্থানীয় একজন। বুধবার দুপুরে উপজেলার তালন্দ-চৌবাড়িয়া প্রধান সড়কে লবাতলা ব্রিজ সংলগ্ন রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
ভিডিওতে দেখা যায়, তালন্দ-সমাসপুর গ্রামের মইনুল ও রাজু নামে দুজন মিলে ঘুরতে আসা অপরিচিত এক কিশোর ও এক কিশোরীর বেধড়ক মারপিট এবং অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করছে। অভিযুক্তরা কিশোর-কিশোরীর বিরুদ্ধে রাস্তার পাশে অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ এনে এই মারধর করে। এ সময় সারুয়ার হোসেনসহ আরও দুই স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় বিষয়টি দেখে বখাটেদের বাঁধা দেন ও মুঠোফোনে তা ভিডিও ধারণ করেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুস সবুর নামে এক গণমাধ্যমকর্মী বলেন, ‘দুপুরে নিউজের কাজে চৌবাড়িয়া বাজারের উদ্যেশে আমরা তিন সংবাদকর্মী যাচ্ছিলাম। এ সময় দেখতে পাই, অপরিচিত এক ছেলে ও এক মেয়েকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে রাস্তার ওপরে দুই বখাটে মারধর করছে। তাৎক্ষণিকভাবে আমরা এর প্রতিবাদ করি এবং মোবাইলে মারধরের ভিডিও ধারণ করি। তবে আমাদের দেখে অভিযুক্ত বখাটেরা ভুক্তভোগী ওই ছেলেমেয়েকে দ্রুত স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর তাসির উদ্দিনের কাছে নিয়ে চলে যায়। তবে অভিযুক্ত ওই বখাটেদের দেখে মনে হচ্ছিল তারা মাদকসেবী।’
এদিকে ধারণকৃত ভিডিওতে মারধরের শিকার দুজনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার ৩টা পর্যন্ত বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। তবে তালন্দ বাজারের কয়েকজন জানান, মারধরের শিকার ওই তরুণ-তরুণীরা সকালের দিকে তালন্দ কলেজের দিকে যায় এবং ঘণ্টাখানেক পর কলেজের রাস্তা থেকে ফিরে হাঁটতে হাঁটতে লবাতলা ব্রিজের রাস্তার দিকে তাদের দুজনকেই যেতে দেখেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে তালন্দ ললিত মোহন কলেজে অধ্যয়নরত কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ‘ভুক্তভোগী ওই তরুণ-তরুণীকে সকালে কলেজ চত্বরের আশপাশে ঘুরতে দেখেছি। হয়তোবা তারা কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত কাজে এসেছিলেন। কিন্তু পরে তারা মাদকসেবীদের হামলার শিকার হয়েছেন। সম্প্রতি ছোটখাটো এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটছে জানিয়ে তারা আরও বলেন, তালন্দ বাজার ও এর আশপাশের এলাকায় বখাটেদের আনাগোনা বেড়েছে।
এদিকে ঘটনার ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত বখাটে মইনুল ও রাজুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। অভিযুক্ত মইনুল বলেন, ‘এই বিষয়ে আপনাদের নিউজ করার প্রয়োজন নেই।’ ঘটনার সময় আপনি সেখানে উপস্থিত ছিলেন কিনা জানতে চাইলে মইনুল বলেন, ‘আমি কিছু বলতে পারব না।’ এ বিষয়ে আরেক অভিযুক্ত রাজু কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। এমনকি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাসির উদ্দীন এ ঘটনার ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলেই ফোন কেটে দেন।
বিষয়টি নিয়ে তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, ‘খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। যেই দোষী হোক না কেন, ওই ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২২ | সময়: ৬:০৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ