চট্টগ্রামে করোনায় ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪৫৫ জন আক্রান্ত, ২ জনের মৃত্যু

ঢাকা অফিস: জেলায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিদিন বাড়ছে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ছয় মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪৫৫ জন আক্রান্ত হন। সংক্রমণের হার ৩৪ দশমিক ১১ শতাংশ। এ সময়ে শহর ও গ্রামে একজন করে রোগির মৃত্যু হয়। জেলার করোনা সংক্রান্ত হালনাগাদ পরিস্থিতি নিয়ে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন কার্যালয়ের আজকের রিপোর্ট থেকে এ সব তথ্য জানা যায়। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের রিপোর্টে বলা হয়, ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি, শাহ আমানত বিমানবন্দর ও নগরীর ১১ ল্যাব এবং এন্টিজেন টেস্টে গতকাল চট্টগ্রামের ৪ হাজার ২৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করলে নতুন ১ হাজার ৪৫৫ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। আক্রান্তদের মধ্যে শহরের ১ হাজার ৬০ জন ও ১৫ উপজেলার ৩৯৫ জন। উপজেলায় আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ হাটহাজারীতে ৮৮, রাউজানে ৬৪, আনোয়ারায় ৫৮, রাঙ্গুনিয়ায় ৩৫, বাঁশখালীতে ২৯, বোয়ালখালীতে ২৫, সাতকানিয়ায় ২৩, মিরসরাই ও ফটিকছড়িতে ১৭ জন করে, লোহাগাড়ায় ১৪, পটিয়ায় ১৩, সীতাকু-ে ৫, সন্দ্বীপ ও চন্দনাইশে ৩ জন এবং কর্ণফুলীতে একজন করে রয়েছেন। জেলায় করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা এখন ১ লক্ষ ১৪ হাজার ৯১৫ জন। সংক্রমিতদের মধ্যে ৮৩ হাজার ৮৪০ জন শহরের ও ৩১ হাজার ৭৫ জন গ্রামের। গতকাল করোনায় শহর ও গ্রামে একজন করে রোগির মৃত্যু হয়। মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ হাজার ৩৪৮ জন হয়েছে। এতে শহরের ৭২৯ ও গ্রামের ৬১৯ জন। চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, নতুন বছরের প্রথম দিনে ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয় চট্টগ্রামে। আর সর্বশেষ গতকাল ২৫ জানুয়ারি করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪৫৫ জনের। হিসেবে ২৫ দিনের ব্যবধানে শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৬২ গুণ বেশি। চট্টগ্রামে সর্বশেষ এর চেয়ে বেশি ১ হাজার ৪৬৬ জনের শরীরে ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছিল ঠিক ছয় মাস আগে। ওইদিন ৩ হাজার ৯২৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়। সংক্রমণ হার ছিল ৩৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ। এ সময়ে করোনায় আক্রান্ত ৯ রোগিও মারা যান। ল্যাবভিত্তিক রিপোর্টে দেখা যায়, গতকাল সবচেয়ে বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ফৌজদারহাটস্থ বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস ল্যাবে। এখানে ৭০৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় শহরের ২৯১ ও গ্রামের ১ জন জীবাণুবাহক পাওয়া যায়। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ল্যাবে ২৩৪ জনের নমুনার মধ্যে শহরের ৭০ ও গ্রামের ১৪ জন আক্রান্ত শনাক্ত হন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ১৬১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হলে শহরের ৪৩ ও গ্রামের ৪১ জনের দেহে ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি এন্ড এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাবে ২১৩টি নমুনার মধ্যে শহরের ৭৯ ও গ্রামের ৩৪টিতে ভাইরাস চিহ্নিত হয়। আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতালের আরটিআরএল-এ পরীক্ষিত ৩৮ নমুনায় শহরের ১৯ ও গ্রামের ২টিতে সংক্রমণের প্রমাণ মিলে। নমুনা সংগ্রহের বিভিন্ন কেন্দ্রে ৪৪২ জনের এন্টিজেন টেস্টে গ্রামের ১৫৫ জন সংক্রমিত বলে জানানো হয়।
নগরীর বেসরকারি ক্লিনিক্যাল ল্যাবরেটরির মধ্যে শেভরনে ৬২৩টি নমুনা পরীক্ষা করে শহরের ১৬৪ ও গ্রামের ১৮ টিতে ভাইরাস পাওয়া যায়। ইম্পেরিয়াল হাসপাতাল ল্যাবে ৪৪০টি নমুনা পরীক্ষায় শহরের ৭৩ ও গ্রামের ৪১টিতে জীবাণুর অস্তিত্ব মিলে। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল ল্যাবে ৩২৮ জনের নমুনায় শহরের ৪৩ ও গ্রামের ৪৪ জন পজিটিভ হন। এপিক হেলথ কেয়ার ল্যাবে ৩৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করলে শহরের ১৯৬ ও গ্রামের ১৭টিতে ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত হয়। ল্যাব এইডে ৫টি নমুনার ৩টিতে জীবাণু থাকার প্রমাণ মিলেছে। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ১৫০ জন নমুনা জমা দিলে পরীক্ষায় শহরের ৫১ জন আক্রান্ত বলে জানানো হয়। এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ১৯২টি নমুনার মধ্যে শহরের ৭ ও গ্রামের ২৮টিতে করোনার জীবাণু থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। শাহ আমানত বিমানবন্দর ল্যাবে ৩৭৫ বিদেশগামীর নমুনা পরীক্ষা করা হলে পজিটিভ হওয়ায় শহরের ২১ জনের যাত্রা বাতিল করা হয়। ল্যাবভিত্তিক রিপোর্ট বিশ্লেষণে সংক্রমণ হার পাওয়া যায়, বিআইটিআইডি’তে ৪১ দশমিক ৪১ শতাংশ, চমেকেহা’য় ৩৫ দশমিক ৮৯, চবিতে ৫২ দশমিক ১৭, সিভাসু’তে ৫৩ দশমিক ০৫, আরটিআরএলে ৫৫ দশমিক ২৬, শেভরনে ২৯ দশমিক ২১, ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে ২৫ দশমিক ৯১, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে ২৬ দশমিক ৫২, এপিক হেলথ কেয়ারে ৫৯ দশমিক ৩৩, ল্যাব এইডে ৬০ ও মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ল্যাবে ৩৪ শতাংশ, এশিয়ান স্পেশালাইজড হাসপাতালে ১৮ দশমিক ২৩ এবং শাহ আমানত বিমানবন্দর ল্যাবে ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। অন্যদিকে, এন্টিজেন টেস্টে ৩৫ দশমিক ০৬ শতাংশ সংক্রমণ নির্ণিত হয়।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২২ | সময়: ২:২৫ অপরাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর