বীরশ্রেষ্ঠ মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের শাহাদাৎ বার্ষিকী আজ

স্টাফ রির্পোটার, শিবগঞ্জ: আজ ১৪ ডিসেম্বর সোমবার। শহীদ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীরের ৫০ তম শাহাদৎ বার্ষিকী এবং শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস। সারা দেশের ন্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জেও যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও বিভিন্ন সংগঠন।
দিবসটি উপলক্ষে সোমবার ভোরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের রেহাইচরে সড়ক ভবন চত্বরে বীরশ্রেষ্ঠের শহীদ হওয়ার স্থানে নির্মিত স্মৃতি সৌধে পুস্পস্তবক অর্পন করে জেলা সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম ও জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুস্পার্ঘ অপনের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো সহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে।
বেলা ১০টার দিকে শিবগঞ্জের ঐতিহাসিক সোনামসজিদ চত্তরে অবস্থিত শহীদ জাহাঙ্গীরের সমাধিতে পুস্পার্ঘ অর্পণ, মাজার জিয়ারত ও দোয়া শেষে তাঁর মাগফেরাত কামনা করে দোয়ার আয়োজন করা হবে। পরে সোনামসজিদ জিরো পয়েন্টে অবস্থিত জেলার একমাত্র বালিয়াদিঘী গনকবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়ার আয়োজন করা হয়।
এছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা সহ বিভিন্ন পেশাজীবি সংগঠনগুলোর শ্রদ্ধা নিবেদনের কর্মসূচি হাতে নিয়েছে জেলা ও শিবগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড।
প্রসঙ্গত, বাঙলা মায়ের দামাল সন্তান বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্বর শিবগঞ্জকে মুক্ত অঞ্চল ঘোষনা করে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মুক্তিযোদ্ধারা একত্রিত হয়ে ১৩ ডিসেম্বর বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর শহর মুক্ত করতে কয়েকটি নৌকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে রেহায়চর এলাকায় যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন।
১৪ ডিসেম্বর রাতের আধার কেটে সকালে সূর্য ওঠার আগেই এই দিনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের পার্শ্বে মহানন্দা নদীর তীরবর্তী গ্রাম রেহায়চর এলাকায় মুক্তিবাহিনী নিয়ে তিনি এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লিপ্ত হন। সম্মুখযুদ্ধে একের পর এক পরাস্ত করতে থাকেন শত্রু বাহিনীকে। নির্ভিক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর সহযোদ্ধাদের নিয়ে বীরদর্পে এগিয়ে চলেন এবং ধ্বংস করে দেন শত্রু বাহিনীর ১৮টি ট্রেঞ্চ ও ২০ থেকে ২২ টি বাংকার।
তাঁর দুসাহসিক ও দুরন্ত আক্রমণে শত্রু বাহিনী তাদের আস্তানা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। রেহায়চর ঘাটের কাছেই শত্রু বাহিনীর সর্বশেষ বাংকারটি দখল করতে অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে এগোতে থাকার সময় হটাৎ একটি গুলি এসে লাগে বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীরের কপালে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন বাংলার এই বীর সন্তান এবং সেখানেই শাহাদাত বরণ করেন।
এদিন মুক্তিবাহিনী চাঁপাইনবাবগঞ্জকে শক্রুমুক্ত করে পরের দিন ১৫ ডিসেম্বর শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গির কে দাফন করা হয় শিবগঞ্জ উপজেলার হযরত শাহ নেয়ামত উল¬াহ (রহঃ)-এর পুণ্যভূমি বাংলার পুরাতন রাজধানী গৌড়ের ঐতিহাসিক সোনামসজিদ চত্বরে। আর শত্রু মুক্ত চাপাইনবাবগঞ্জকে মুক্ত ঘোষণা করা হয়।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০২১ | সময়: ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ