সাগরে ঘূর্ণিঝড় জোয়াদ, ২ নম্বর সংকেত

সানশাইন ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-পশ্চিমে সরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার সাইক্লোন সংক্রান্ত আঞ্চলিক সংস্থা এসকাপের তালিকা অনুযায়ী এ ঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে জোয়াদ। সৌদি আরব এসকাপে এ নাম প্রস্তাব করেছিল।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের কাছে সাগর উত্তাল থাকায় দেশের সমুদ্র বন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে সাবধানে চলাচল করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, বর্তমান গতিধারা অব্যাহত থাকলে এ ঘূর্ণিঝড় আরও শক্তিশালী হয়ে শনিবার প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ পেতে পারে।
বর্তমান অবস্থান থেকে উত্তর উত্তরপশ্চিমে এগিয়ে অন্ধ্র প্রেদেশ ও ওড়িশার মাঝামাঝি এলাকায় উপকূলের কাছে পৌঁছে উত্তর উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নিতে পারে। এরপর উপকূল ধরে এগিয়ে শনিবার মধ্যরাত নাগাদ ওড়িশা রাজ্যের পুরি উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছাতে পারে। এরপর আরও উত্তর উত্তর-পূর্বে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকে এগিয়ে যেতে পারে ঘূর্ণিঝড় জোয়াদ।
বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত কোন এলাকা দিয়ে এ ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম করবে, তার ওপরই নির্ভর করবে বাংলাদেশের ওপর এর প্রভাব কতটা পড়বে। সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা জানান, শুক্রবার বেলা ১২টায় গভীর নিম্নচাপটি চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১০৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার; যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ আবহাওয়াবিদ বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে খুলনা-বরিশাল অঞ্চলে হালকা বৃষ্টি হতে পারে আজ রাতে আর কাল।” সবশেষ সেপ্টেম্বরে ওড়িশা উপকূলে ঘূর্ণিঝড় ‘গুলাব’ আর মে মাসে ‘ইয়াস’ ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানে। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে গত বছর মে মাসে বাংলাদেশে যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছিল, তার নাম ছিল ‘আম্পান’।
আবহওয়ার দীর্ঘমেয়াদী পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ডিসেম্বর মাসের শেষার্ধে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। শীতের এ মৌসুমে দিন ও রাতের তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমবে। মাসের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিক থাকতে পারে। দেশের নদী অববাহিকায় ভোররাত থেকে সকাল পর্যন্ত থাকতে পারে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডিসেম্বরের শেষার্ধে দেশের উত্তর, উত্তর পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে একটি বা দুটি মৃদু কিংবা মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। বড় এলাকাজুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে গেলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়। আর তাপমাত্রা ৬-৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং তাপমাত্রা ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৪, ২০২১ | সময়: ৬:২৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ