সোমবার, ১৬ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১লা আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
মোহনপুর প্রতিনিধি: সম্প্রতি আলোচিত কেশরহাট উচ্চবিদ্যালয়ের নানান অনিয়মের পর ১৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার সংস্কার কাজ খতিয়ে দেখেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ। পরিদর্শন শেষে বিদ্যালয়ের কম্পাউন্ডে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি।
এসময় বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজে যেসব অনিয়ম ধরা পড়ে সে বিষয়ে অভিযোগ এনে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, পরিচালনা কমিটির সভাপতি, প্রকৌশলী ও ঠিকাদারের যোগসাজশে এসব অনিয়ম হয়েছে বলে জানান তিনি। পরিদর্শন শেষে সংসদ সদস্য বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেন। ফ্যাসিলিটিজ বিভাগের এই সংস্কার কাজটি বাস্তবায়ন করছেন মেসার্স আলখেল্লা নামক একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
এ ঘটনার পরদিন রবিবার সকালে বিদ্যালয়ে আসেন ফ্যাসিলিটিজ বিভাগের মোহনপুর জোনের সহকারী প্রকৌশলী তৌহিদুর রহমান। পরিদর্শনে সংস্কার কাজের অনিয়ম দেখতে পান তিনিও। যদিও তিনি সকলের সামনে পাশ কাটিয়ে উঠতে টালবাহানা করতে থাকেন।
তিনি বলেন, রঙের কাজ শেষ হয়নি। এর উপর ফাইনাল রঙের কাজ বাকি রয়েছে। যা শুনে রীতিমত অবাক হতে হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে অনেকটা সাফাই গেয়েছেন তিনি। রঙের আগে ঘসা মাজা পুটিং না করলেও তা চোখেই পড়েনি এই প্রকৌশলীর। জানালা ও দরজার ঘসা মাজা ও সংস্কার না করেই শুধু রঙের কাজ করেছেন ঠিকাদার। এটাও চোখে পড়েনা প্রকৌশলীর।
তারপরও স্থানীয় সংবাদকর্মী ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের প্রশ্নের জবাব দিতে না পেরে মোবাইল ফোনে দ্রুত অনিয়ম কাটিয়ে পুনরায় কাজ করতে নির্দেশ দেন ঠিকাদারকে।
বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটি সহ স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতিতে কাজগুলো তদারকি করেন সহকারী প্রকৌশলী তৌহিদুর রহমান। এসময় উপস্থিত জনসাধারণের নানান প্রশ্নের জবাবে প্রকৌশলী বলেন, সংস্কার কাজ এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি এবং চলমান রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সহিদুজ্জামান কাজ শেষের ফাইনাল কাগজে স্বাক্ষর করেননি এমনকি ঠিকাদার তার বিল উত্তোলনও করতে পারেননি।
সিডিউলের আওয়াতার কোনো কাজ বাকি রেখে বিল পাস হবে না। বৃষ্টির জন্য রংয়ের কাজ বন্ধ রয়েছে। রোদ খরা হলেই কাজ শুরু করা হবে। তবে ফ্যাসিলিটিজ বিভাগের প্রকৌশলী আরো বলেন, স্থানীয় কোন্দলের রেশ ধরে এ উদ্ভুত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান শিক্ষক বা সভাপতি একাজে কোনো টাকা পয়সা দাবী করেন নি বরং তারা জানিয়েছেন এটি ঝন্ঝাটে জায়গা কাজটা যেন ভাল হয়। আশাকরি টেন্ডার অনুযায়ী সঠিক ভাবে কাজটি সম্পন্ন হবে।
জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সহিদুজ্জামান বলেন, এমপি মহোদয় বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন। কাজ দেখে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করেন। কাজ সঠিক ভাবে হয়নি তাই ইঞ্জিনিয়ারকে অভিযোগ দিয়েছি। কাজটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি জমসেদ আলী জানান, এমপি আকষ্মিক ভাবে বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে সংস্কার কাজ দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এ কাজ সরকারী ভাবে হচ্ছে এসব সম্পর্কে আমাদের করনীয় ছিল না। ফ্যাসিলিটিজ ইঞ্জিনিয়ার এবং ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসব বিষয়ে জানে। তবে একাজের টাকা উত্তোলন হয়নি বলে জেনেছি। বাকি কাজ সুষ্ঠভাবে শেষ করার আহব্বান জানান তিনি।