স্মার্ট পবা উপজেলা গড়তে চান মানজাল

স্টাফ রিপোর্টার: পবা উপজেলা পরিষদের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯ মে। গত ১৭ এপ্রিল তৃতীয় ধাপে ১১২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র উত্তোলন ও জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২ মে। প্রেক্ষিতে এই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারি প্রার্থিরা মনোনয়ন উত্তোলন ও জমাদানের জন্য শর্তাবলী পূরণ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাশাপাশি তারা গণসংযোগ করে চলেছেন।
এরআগে উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয়েছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। উৎসবের আমেজ শেষ হতে না হতেই এবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। তবে সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় উপজেলা নির্বাচনেও প্রার্থী দেবে না বিএনপি। যারা প্রার্থী হবেন তাদের বিরুদ্ধে দলীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।
এবারে দলীয় প্রতিক (নৌকা) না থাকায় নির্বাচনে প্রার্থী হতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরে ব্যাপক তোড়জোর লক্ষ করা যাচ্ছে। পবা উপজেলায় অন্তত ১০ জন প্রার্থী চেয়ারম্যান পদে মাঠে নেমেছেন। তবে সত্যিকার অর্থে চেয়ারম্যান কতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন জানা যাবে ১২ মে।
প্রাথমিকভাবে দলীয় সমর্থনের জন্য তাদের লড়াই শুরু হচ্ছে। আবার দলীয় প্রতিক থাকবে না-এমন অবস্থায় দলের বাইরের অনেকে এই নির্বাচনে অংশ নিয়ে নিজেদের সামর্থ ও সমর্থন জানান দিচ্ছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এরই মধ্যে শুরু করেছেন গণসংযোগসহ নানান তৎপরতা। সামাজিক নানা কর্মকান্ডে নিজেদের মেলে ধরছেন।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এই উপজেলায় প্রার্থী তালিকায় চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইয়াসিন আলী, ভাইস চেয়ারম্যান শিক্ষক ওয়াজেদ আলী খান, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, সাবেক দপ্তর সম্পাদক ফারুক হোসেন ডাবলু, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ, পারিলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম ভুলু, নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান, পবা উপজেলা যুবলীগ সভাপতি এমদাদুল হক। তবে এখন পর্যন্ত গণসংযোগ ও পরিচিত মুখ নিয়ে এগিয়ে আছেন অধ্যক্ষ এএসএম মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল।
অধ্যক্ষ এএসএম মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল ১৯৮৬ সালে নওহাটা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক, বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও পবা উপজেলা আওয়ামী লীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক, নওহাটা পৌর আওয়ামী লীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক, রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি, পবা উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি সেনা শাসিত তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার কারা মুক্তিতে মিছিল-মিটিং ও অসহযোগ আন্দোলনে অংশ নেন। ১৯৯৬ সালে খালেদা বিরোধী আন্দোলনে বিএনপির নিক্ষিপ্ত বোমাহত হন। এখনো তার বাম হাতের দুটি আঙ্গুল অকার্যকর হয়ে আছে। ১৯৯৭ সালে শেখ হাসিনার উন্নতর চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তা করেন। বিশেষ করে পবা উপজেলায় জঙ্গিবাদ ও মাদক বিরোধী আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষক ফোরাম থেকে শিক্ষকদের নিয়ে গণসচেতনার তৈরীতে জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারপত্র বিলি করেন। পাশাপাশি পবা উপজেলায় শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশ করেন।
অধ্যক্ষ মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল পারিবারিকভাবেই আওয়ামী লীগ ঘরোনার একজন পরিক্ষীত ও প্রশিক্ষিত মানুষ এবং সৎ ও মেধাবী রাজনীতিক হিসেবে এলাকায় পরিচিতি পেয়েছেন। পেশায় তিনি একজন শিক্ষক। এক সময়ে নওহাটা মহিলা ডিগ্রী কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। এরপর কবি নজরুল ডিগ্রী কলেজ এবং বর্তমানে আলহাজ্ব সুজাউদ্দৌলা ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন। পাশাপাশি তিনি রাজশাহী জেলা স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সভাপতি রয়েছেন। তিনি রাজশাহীর রাজনৈতিক ও আওয়ামী লীগ নেতা-নেতৃত্বের কাছে এবং পবা উপজেলাবাসীর নিকট এক পরিচিত মুখ। তিনি স্মার্ট উপজেলা গড়তে উপজেলা বাসীর নিকট তার প্রতিকে ভোট দেয়ার আবেদন করেছেন।
তিনি বলেন, ছাত্র থেকে শুরু এ জীবনের প্রতিটি মূহুর্ত আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতৃত্বে থেকেছি। তবে জনপ্রতিনিধিত্ব করতে কোন নির্বাচনে অংশ নেইনি। এবারে পবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবো। জনগণকে সাথে নিয়ে উপজেলার তৃণমুল থেকে সর্বোচ্চ পর্যন্ত সেবা দিতে চাই।
উল্লেখ, গত ১৭ এপ্রিল বুধবার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে তৃতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের এই তফসিল চূড়ান্ত করা হয়। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২ মে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে। ভোট ২৯ মে।


প্রকাশিত: এপ্রিল ২৮, ২০২৪ | সময়: ৪:২৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ