মেসি এখন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলোয়াড়

স্পোর্টস ডেস্ক: বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে বিষয়টা ভিন্ন। সেখানে ফুটবল অতটা জনপ্রিয় নয়। ফলে এই খেলার খেলোয়াড়রাও জনপ্রিয়তায় অনেক পিছিয়ে। এমনকি ডেভিড ব্যাকহাম, জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচরাও পারেননি চিত্রটা বদলাতে। তবে লিওনেল মেসি পেরেছেন।
প্রথম ফুটবলার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। ‘এসএসআরএস’-এর ওয়েবসাইটে এ বিষয়ক জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। ক্রীড়া গবেষণা বিষয়ক জরিপ প্রতিষ্ঠানটি ৩০ বছর ধরে এ কাজ করে আসছে। জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয় প্রতি মাসেই। তবে এক মাস নয়, ২০২৩ সালের পুরো চতুর্থ কোয়ার্টার (অক্টোবর-ডিসেম্বর) ধরে শীর্ষে ছিলেন মেসি।
এবারই প্রথম এই জরিপে শীর্ষস্থান পেলেন কোনো ফুটবলার। মেসির আগে এনবিএ সুপারস্টার মাইকেল জর্ডান, স্টেফ কারি, লেবরন জেমস ও কোবে ব্রায়ান্ট, গলফের কিংবদন্তি টাইগার উডস, এনএফএল তারকা পেটন ম্যানিং ও টম ব্র্যাডিরা পুরো এক কোয়ার্টার শীর্ষে ছিলেন। গত কোয়ার্টারে জর্ডান ও ব্র্যাডিকেই পেছনে ফেলেছেন মেসি। তবে মেসি আমেরিকায় অনেক আগে থেকে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবলার। এমনকি জনপ্রিয়তায় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর চেয়েও আমেরিকায় অনেক এগিয়ে তিনি। জরিপে প্রায় ৪ গুণ বেশি মানুষ মেসিকেই পছন্দের শীর্ষে রেখেছেন।
ইউরোপের ফুটবলে অনেক ইতিহাস গড়েছেন লিওনেল মেসি। তার কারণেই বার্সেলোনা সাফল্যের শীর্ষে উঠেছিল। জনপ্রিয়তার বিচারেও কাতালান জায়ান্টদের নিয়ে গিয়েছিলেন অনন্য উচ্চতায়। লা লিগার সবচেয়ে স্বর্ণালী অধ্যায়ের অন্যতম রচয়িতা আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। এখন তার ছোঁয়ায় বদলে যাচ্ছে এমএলএস-ও।
২০২২ সালে বিশ্বকাপ জেতার পর ফুটবলের ইতিহাসেই সর্বকালের সেরাদের কাতারে নাম লিখিয়েছেন মেসি। এতে তার জনপ্রিয়তা যে আগের চেয়ে বেড়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এমনকি ইউরোপের ফুটবল ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলে নাম লেখানোর পরও মেসির জনপ্রিয়তায় বিন্দুমাত্র ভাঁটা পড়েনি। বরং তুলনামূলক দুর্বল ফুটবল টুর্নামেন্ট মেজর লিগ সকারের ক্লাব ইন্টার মায়ামিতে নাম লিখিয়ে আমেরিকার ফুটবল ইতিহাসই বদলে দিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবল কখনোই অত জনপ্রিয় ছিল না। তবে মেসি যোগ দেওয়ার পর দৃশ্যপট বদলে গেছে। ধীরে ধীরে ফুটবলের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। এর কারণ অবশ্যই মেসি। তার মতো জীবন্ত কিংবদন্তিকে খেলতে দেখার জন্যই হাজারো মানুষ স্টেডিয়ামে ভিড় করে, টিকিট-জার্সি বিক্রি হয় রেকর্ড দামে। সম্প্রচারেও বিশেষ গুরুত্ব পায় ইন্টার মায়ামির খেলা। মেসির পর সেখান পাড়ি জমিয়েছেন লুইস সুয়ারেস, সের্হিও রবের্তো ও সের্হিও বুসকেতসের মতো সাবেক বার্সা তারকারাও। এতে এমএলএসের জৌলুশও বেড়েছে।
মেসির আগমনে ইন্টার মায়ামিও জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছে গেছে। গত বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় ভাগে ক্লাবটির জনপ্রিয়তা বেড়েছে পাঁচ গুণ। মেজর লিগ সকারের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাব এখন সাবেক ইংলিশ ফুটবল তারকা ডেভিড ব্যাকহামের মালিকানাধীন এই ক্লাব। যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফুটবল ক্লাবের তালিকাতেও চতুর্থ স্থানে আছে তারা (বাকি তিন ক্লাব- বার্সেলোনা, রিয়াল মাদ্রিদ ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড)।
মেজর লিগে জনপ্রিয়তার বিচারে দ্বিতীয় স্থানে নেমে গেছে ব্যাকহামের সাবেক ক্লাব এলএ গ্যালাক্সি। এই এলএ গ্যালাক্সির বিপক্ষেই এমএলসএস-এর নতুন মৌসুমে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে ইন্টার মায়ামি। এর আগে প্রথম ম্যাচে মেসিরা ২-০ গোলে হারিয়েছেন রিয়াল সল্টলেককে।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪ | সময়: ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ