বাগমারায় খাস পুকুরের দখল নিয়ে প্রতিপক্ষের মারধরে ১ জন নিহত

স্টাফ রিপোটার, বাগমারা: রাজশাহীর বাগমারায় সরকারি খাস পুকুরের দখল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের মারপিটে যশোর জেলার মনিরামপুর উপজেলার সোহাগ (২৪ নামে) এক যুবক নিহত হয়েছে।
খবর পেয়ে বাগমারা থানার পুলিশসহ ভাগনদী ও ঝিকরা ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাসস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনের করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুটি সিএনজি ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন জনকে আটক করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ঝিকরার ডাঙ্গাপাড়া এলাকার নুরুল ইসলাম একই এলাকার দুটি সরকারি খাসপুকুর বাংলা ১৪২৯ সাল থেকে ১৪৩১ সাল পর্যন্ত একতা মৎসজীবি সমবায় সমিতির নামে লীজ নিয়ে মাছ চাষ শুরু করে। পরে সেখানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ছোটভাই আসাদুলসহ স্থানীয় একটি পক্ষ বাঁধা দেয়। তারা পুকুরে মাছ চাষ করলে মারাত্বক পরিনতি ভোগ করতে হবে বলেও হুমকি দেয়।
এ ঘটনায় নূরুল ইসলাম তাদের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে ক্রমেই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ওই ঘটনার জের ধরে গত শুক্রবার বেলা ১১ টার দিকে নুরুল ইসলামের ভাতিজা মনোয়ার ওই পুকুরের পাশ দিয়ে বিলে সরিষা তুলতে যাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে ধাওয়া করে ব্যাপক মারপিট করে। এতে তার একটি হাত ভেঙ্গে যায়।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পাশ্ববর্তী আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। মনোয়ারের পিতা আনিছার রহমান জানান, তারে দুই ছেলে মনোয়ার ও ইমরান একই সাথে ঢাকায় একটি বেসরকারি কোম্পানীতে নিহত সোহাগের সাথে চারকুরী করতো। মনোয়ার আহত হওয়ার খবর পেয়ে নিহত সোহাগ তাকে দেখতে আত্রাই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে আসে। তাকে দেখার পর ওই দিন রাত রাত নয়টার দিকে তারা মনোয়ারের গ্রামের বাড়ি ঝিকরার উদ্দেশ্যে রওনা হলে পথিমধ্যে ডাঙ্গাপাড়া নামক স্থানে পৌছালে পতিপক্ষের লোকজন এলাকায় চরমপন্থীর আগমন ঘটেছে এমন প্রচারণা চালিয়ে নিজেরাই তাদের উপর হামলা করে মনোয়ারের বন্ধু সোহাগকে ঘটনাস্থলেই পিটিয়ে হত্যা করে। এখন তারা এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার পাঁয়তারা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ বিগত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের পর থেকে স্থানীয় আ’লীগ দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। শুক্রবারের এই হত্যাকন্ডের সাথে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে তারা বাদী করেন।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের মধ্যে কোন বিরোধ নেই। তবে একটি মহল এলাকায় অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য চক্রান্ত করছে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন আ’লীগর সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মানিক জানান, নির্বাচনের পর থেকে একটি মহল এলাকায় প্রভাব বিস্তারের তৎপরতা শুরু করেছে। তারাই সংঘাত ও সহিংসতাকে উসকে দিচ্ছে। তবে অপরাধি যারাই হোক সঠিক তদন্তের মাধ্যমে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হোক এটাই এলাকাবাসীর দাবী। নিরীহ নিরপরাধ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়।
এ ব্যাপারে বাগমারা থানায় যোগাযোগ করা হলে ঝিকরা আইসি ক্যাম্পের ইনচার্জ বিকাশ চন্দ্র জানান, ঘটনা জানান সাথে সাথেই আমি সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে একজনকে রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় উপুড় হয়ে পড়ে থাকতে দেখি। পরে তাকে উদ্ধার করে বাগমারা স্থাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে দুটি সিএনজিসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়।
অপরদিকে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ সরকারের সাথে সরকারী মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোনটি রিসিভ না করায় কথা বলা সম্ভব হয়নি।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৪ | সময়: ৫:৫০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ