রাজশাহী কলেজে মাইকেল মধুসূদনের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী উদ্যাপিত

স্টাফ রিপোর্টার : বুধবাররাজশাহী কলেজ-এ বাংলা বিভাগের আয়োজনে কবি মাইকেল মধুসূদনের দ্বিশত জন্মবার্ষিকী উদ্যাপিত হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০ রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল খালেক-এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা শুরু হয়। সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক কবি ও প্রাবন্ধিক প্রফেসর চৌধুরী জুলফিকার মতিন, আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী কলেজের বাংলা বিভাগের প্রাক্তন অধ্যাপক, বিশিষ্ট কলামিস্ট ও রবীন্দ্র গবেষক অধ্যাপক গোলাম কবির।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক, বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড.শিখা সরকার, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ, নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মোঃ ইব্রাহিম আলী, রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধানগণ, বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীবৃন্দ।
কবি মাইকেল মধুসূদন বাংলা সাহিত্যে আধুনিকতার পথিকৃৎ। মুখ্য আলোচকের বক্তৃতায় কবি জুলফিকার মতিন বলেনÑমাইকেল মধুসূদনের কাব্যের প্রতিফলন ঘটাতে হবে আমাদের প্রাত্যহিক জীবনচর্চায়। সাহিত্য ও সংস্কৃতির সুষ্ঠু বিকাশ ছাড়া জাতিকে আধুনিক ও উন্নত করা সম্ভব নয়। সভাপতির ভাষণে প্রফেসর মোহাঃ আব্দুল খালেক বলেন, মাইকেল মধুসূদন ছিলেন একজন দেশপ্রেমিক কবি। বাংলা ভাষার প্রতি অকৃত্রিম শ্রদ্ধা প্রকাশিত হয়েছে তাঁর রচিত সনেটগুলোতে। অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তন করে তিনি বাংলা কবিতায় নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। অধ্যাপক গোলাম কবির মাইকেল মধুসূদনের কবিতার বিভিন্ন বাস্তবতা উল্লেক করে দীর্ঘ আলোচনা করেন। তিনি বলেন, অবক্ষয়ের এ যুগে মাইকেলের কাব্য চর্চা খুব বেশি প্রয়োজন। শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক প্রফেসর আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, সংস্কৃতিবান প্রজন্ম সৃষ্টি করতে মাইকেল মধুসূদনের সাহিত্যকর্মের প্রতি শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা তৈরি করতে হবে।
বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. শিখা সরকার মাইকেল মধুসূদন দত্তের সাহিত্যের নানা দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, মধুসূদন তাঁর কাব্যে নারীকে অত্যন্ত শক্তিশালী চরিত্র হিসেবে গড়ে তুলেছেন। বাংলা কবিতা, নাটক, মহাকাব্যে তিনি নতুন আবহ সৃষ্টি করে বাংলা সাহিত্যকে গতানুগতিকতার হাত থেকে মুক্তি দিয়েছেন। প্রফেসর ড.মোঃ ইব্রাহিম আলী তাঁর বক্তব্যে বলেন, মাইকেল মধুসূদন দত্ত বাংলা সাহিত্যের প্রথম বিদ্রোহী কবি। মধুসূদনের বিদ্রোহ কাজী নজরুলের মতো নয়। কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহ ছিল রাজনৈতিক বিদ্রোহ। আর মাইকেল মধুসূদনের বিদ্রোহ ছিল সাহিত্যিক বিদ্রোহ। মানুষের মনন চেতনার বৈপ্লবিক পরিবর্তনই ছিল যার মূল উদ্দেশ্য।
অনুষ্ঠানের শেষ প্রান্তে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কবি হাজেরা খাতুন রচিত ‘কাঠ গোলাপ’ কাব্যগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
সবশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রফেসর মোহাঃ আব্দুল খালেক কবির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন এবং উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানান।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৫, ২০২৪ | সময়: ৬:৫২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ