রাজশাহী-১ আসনে বাদ ডালিয়া : হেভিওয়েট ফারুকের সঙ্গে লড়বেন নায়িকা মাহি

স্টাফ রিপোর্টার : শেষ পর্যন্ত রাজশাহী-১ আসন থেকে ছিটকে পড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী আয়েশা আখতার জাহান ডালিয়ার মনোনয়ন আপিলেও বাতিল হয়ে গেছে। তিনি আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণির্জ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের সহধর্মীনি।
শুক্রবার দুপুরে নির্বাচন কমিশনে আপিল শুনানি শেষে আয়েশা আখতার জাহান ডালিয়ার প্রার্থীতা বাতিলের আদেশ বহাল রাখা হয়। এর আগে গত ৩ ডিসেম্বর যাচাই বাছাই শেষে ভোটারদের নমুনা স্বাক্ষর ও তথ্যের গড়মিল থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটানিং কর্মকর্তা।
রাজশাহী-১ আসনে বর্তমান এমপি ওমর ফারুক চৌধুরী আওয়ামী লীগের প্রার্থী রয়েছেন। তিনি তিনবারের এমপি। একবার প্রতিমন্ত্রীও হয়েছিলেন। হেবিওয়েট এ প্রার্থীর সঙ্গে এখন লড়বেন ঢাকাই সিনামার আলোচিত নায়িকা মাহিয়া মাহি। ফলে এবার হেভিওয়েট প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে ভোটের মাঠে ছুুটতে শুরু করেছেন তিনি।
গত ৩ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মহিরও প্রার্থীতা বাতিল করে রাজশাহী জেলা রিটানিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ। পরে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনে আপিল আবেদন করলে গত ১১ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশন মাহির প্রার্থীতা বৈধ ঘোষাণা করেন।
এর আগে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন বঞ্চিত দুই নেতা আখতারুজ্জামান আখতার ও গোলাম রাব্বানী স্বতন্ত্রী প্রার্থী হয়ে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়ন জমা দিলে গত ৩ ডিসেম্বর জেলা রিটানিং অফিসারের কার্যালয় থেকে প্রার্থীতা বাতিল করে। পরে ইসিতে আপিল আবেদন করলে গত ১৩ ডিসেম্বর শুনানিতে তাদের দুজনেরেই প্রার্থীতা বাতিল করে দেন। এই দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী হাইকের্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
এদিকে, চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি প্রার্থীতা ফিরে পাবার পর নির্বাচনী এলাকা গোদাগাড়ী-তানোর উপজেলার বিভিন্ন প্রার্থী দিন রাত সাধারণ মানুষের সাথে দেখা সাক্ষাৎ করে কুশল বিনিময় ও দোয়া চাইছেন। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার মাহি গোদাগাড়ী উপজেলার চরআষাড়িয়াদহ ইউনিয়নে ভোটারদের সঙ্গে সাক্ষাত করে কুশল বিনিয়ম করেন। একারনে তিনিও কারণ দর্শানোর নোটিশ পেয়েছেন।
নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে চিত্রনায়িকা শারমিন আক্তার নিপা ওরফে মাহিয়া মাহিকে তলব করা হয়েছে। আগামী রবিবার বেলা ১১টায় নিজ কার্যালয়ে সশরীরে হাজির হয়ে ব্যাখা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন, রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসনে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আবু সাঈদ। শুক্রবার এই নোটিস জারি করা হয়েছে।
এদিকে ওই নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতীক বরাদ্দের আগেই আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রাজশাহী-১ (গাদাগাড়ী-তানোর) আসনের প্রার্থী মাহিয়া মাহি বৃহস্পতিবার গোদাগাড়ী উপজেলার চরআষাঢ়িয়াদহ ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় ব্যাপক জনসমাগম করেন এবং নির্বাচনী প্রচার শুরুর মাধ্যমে নিজের জন্য ভোট চান। এরপর নিজের ফেসবুকেও সেই ছবি প্রকাশ করেন। এই আচরণের মাধ্যমে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক ও প্রার্থীর আচরণবিধিমালা ২০০৮ এর বিধি (ঘ) ও বিধি ১২ লঙ্ঘন করেছেন। এ অবস্থায় তার বিরুদ্ধে কেন নির্বাচন কমিশনে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হবে না- তার ব্যাখা প্রদানের জন্য মাহিকে সশরীরে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যদিও ভিডিও বার্তায় মাহি সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে বলেন, কিছু কিছু নিউজ পোর্টাল খবর প্রকাশ করেছে যে আমি (মাহি) আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মাঠে প্রচারণা শুরু করে দিয়েছি। তবে বিষয়টি এমন নয়। তিনি বলেন, আমি সবার উদ্দেশে বলতে চাই, ফেসবুকে আমি একটি পোস্ট করেছি। ক্যাপশনে লেখা গোদাগাড়ী উপজেলা, চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়ন, রাজশাহী। মূলত গোদাগাড়ী উপজেলার চর আষাড়িয়াদহ ইউনিয়নের সাধারণ মানুষের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম আমি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এটি বিচ্ছিন্ন একটি গ্রাম। সেখানের কেউ আমাকে চেনে না। আমি তাদের সঙ্গে পরিচিত হতেই সেখানে গিয়েছিলাম। তবে সেখানে গিয়ে আমি কোনো ভোট চায়নি। মাহি যোগ করেন, আমি যে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ভোট চাইব আমারতো কোনো প্রতীকই নেই। আমি কীভাবে ভোট চাইব?


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৬, ২০২৩ | সময়: ৭:১৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ