রুয়েট ছাত্রলীগের চতুর্থ সম্মেলন কাল পদে আসতে ছাত্রত্ব ধরে রেখেছেন অনেকে

রাবি প্রতিনিধি: প্রায় সাড়ে ছয় বছর পর আগামীকাল (১৯ সেপ্টেম্বর) রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের চতুর্থ বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে সম্মেলকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়টির কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে মঞ্চসজ্জাসহ সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
শাখা ছাত্রলীগ সূত্রে জানা গেছে, রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইসফাক ইয়াসশির ইপু’র সভাপতিত্বে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন। শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী মাহাফুজুর রহমান তপুর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
সম্মেলনে প্রধান বক্তা থাকবেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান। বিশেষ অতিথি থাকবেন রাজশাহী মহাগনর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ কামাল এবং বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডা. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা। এছাড়াও সম্মেলনে বিশেষ বক্তা থাকবেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আবু সাঈদ কনক এবং সহ-সভাপতি এনামুল হক তানান।
এদিকে সম্মেলনকে সামনে রেখে রুয়েট ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসতে স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছেন অনেকেই। ক্যাম্পাসে নিয়মিত শোডাউনও দিচ্ছেন পদপ্রত্যাশীরা। নেতৃত্বে আসতে পারেন এমন কিছু পদপ্রত্যাশী ছাত্রলীগ নেতার নাম এরই মধ্যে আলোচনায় উঠে এসেছে ক্যাম্পাসে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন নেতৃত্বে আসার দৌড়ে এগিয়ে আছেন বর্তমান কমিটির উপ দফতর সম্পাদক লাশিউর রহমান নাহিদ, ছাত্রলীগ কর্মী আশেফ মোর্শেদ সাইফ, মুনেম শাহরিয়ার, কার্যনির্বাহী সদস্য সৌমিক সাহা, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. ছালাতিজ্জোহা ইফতি, সহ-সভাপতি মো. ফাহমিদ লতিফ (লিয়ন) ও এমএম ওসমান হায়দার তমাল। এদের মধ্যে সাইফ ও মুনেম বিএসসি চূড়ান্ত বর্ষের নিয়মিত ছাত্র বলে জানা গেছে।
এদের মধ্যে সৌমিক কম্পিউটার কৌশল বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। একই শিক্ষাবর্ষের ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী ছালাতিজ্জোহা। নাহিদ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। সহ-সভাপতি লিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের শিক্ষার্থী। একই শিক্ষাবর্ষে যন্ত্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী তমাল। নিয়ম অনুযায়ী ইতোমধ্যে তাদের পড়াশোনা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সম্মেলনকে কেন্দ্র করে তারা ছাত্রত্ব ধরে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালগুলোর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই শাখায় সৎ, যোগ্য, দক্ষ, নেতৃত্বের গুণাবলি সম্পন্ন এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে স্বোচ্চার থাকবেন এমন নেতৃত্ব চান শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি জাতীয় রাজনীতিতে ভূমিকা রাখতে স্থানীয় ও বাইরের যোগ্য পদপ্রত্যাশীদের সম্মিলিত নেতৃত্ব দেখতে চান তারা।
রুয়েট শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্র কল্যান দপ্তরের পরিচালক রবিউল আউয়াল বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদেরকে পাশে নিয়ে রুয়েট ক্যাম্পাসে সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখার মতো যাদের যোগ্যতা রয়েছে তাদের হাতেই নেতৃত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি নাঈম রহমান নিবির বলেন, রাজশাহীতে একসময় শিবিরের আস্তানা ছিলো। এখনো কিছুটা প্রভাব রয়েছে। সামনে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিবিরসহ অন্য অপশক্তি মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তাদেরকে দমন করে ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে যারা রাজনীতি করে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণে ভূমিকা রাখবে এমন নেতৃত্বই দায়িত্ব পাবে বলে আশা করি।
রুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি ইসফাক ইয়াসশির ইপু বলেন, আলোচনায় যারাই থাকুক না কেন রুয়েট ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে তাদেরই আসা উচিত, যারা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করবে। একটি স্মার্ট ছাত্রলীগের ম্যান্ডেট নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করবে। তবে পরিচ্ছন্ন ইমেজ এবং সততা থাকতে হবে।
জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, রুয়েটের প্রগতিশীল শিক্ষার্থীদের কাছে যারা গ্রহণযোগ্য, শিক্ষার্থীদেরকে সাথে নিয়ে একটি আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার জন্য যাদের দক্ষতা, ব্যক্তিত্ব ও স্বচ্ছ ইমেজ রয়েছে এবং যারা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি আপসহীন দুর্গ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবে—তারাই রুয়েট ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসবে।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৩ | সময়: ৪:১৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ