সর্বশেষ সংবাদ :

দুর্গাপুরে মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিল দাবিতে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার, দুর্গাপুর: রাজশাহীর দুর্গাপুরের যুগিশো গ্রামের বয়েন উদ্দিন খামারুকে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দিয়ে তার সনদ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার যুগিশো তোতারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন যুগিশো গ্রামবাসী। মানববন্ধনে ওই গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে নওপাড়া ইউনিয়নের এক নম্বর যুগিশো ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সাত্তার মন্ডল বলেন, আমি ২৯ বছর ধরে এই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। বয়েন খামারু আমার সমবয়সী।
তিনি কখনো মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেননি। হঠাৎ শুনছি বয়েন প্রতারণা করে টাকার বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়েছে। তার দুই সন্তানকেও প্রতারণা করে চাকুরি পাইয়ে দিয়েছেন। আমরা তার মুক্তিযোদ্ধার সনদ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।
এছাড়াও কোনো ব্যাক্তি যেন মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিতে না পারে সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আলামিন হোসেন বলেন, বয়েন মুক্তিযোদ্ধা না হয়েও তিনি এখন মুক্তিযোদ্ধা। এটা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য লজ্জার ও অপমানজনক। কারণ বয়েন উদ্দিন রাজাকার পরিবারের সন্তান। বয়েনের বড় ভাই তালিকাভুক্ত রাজাকার ও বাবা মহসিন খামারু শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা না হয়ে কীভাবে সরকারি ভাতা নেয় ও সন্তানদের চাকরি দেয়। সেটা তদন্ত সাপেক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহব্বান জানাচ্ছি।
মানববন্ধনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, দেলুয়াবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, একনম্বর যুগিশো ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মকলেছুর রহমান, স্থানীয় বাসিন্দা আবু কালাম, রবিউল ইসলাম।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল করিম বলেন, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ এসেছে অফিসে। অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারি উভয়ের তথ্য পর্যবেক্ষণ করা হবে। তারপর এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে জামুকা সুপারিশ করা হবে।
এ ব্যাপারে নতুন করে তালিকায় নাম আসা অভিযুক্ত দুই মুক্তিযোদ্ধার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রেরিত তথ্যমতে দুর্গাপুর উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকার ৬৫ নম্বর ক্রমিকে বয়েন উদ্দিনের নাম এসেছে। বেসামারিক গেজেটে তার ক্রমিক নম্বর ২২৭৮।
একই ভাবে বেসামরিক গেজেটের ২২৭৭ নম্বরে এসেছে কাশিপুর গ্রামের আমিরুল ইসলামের নাম। তার ক্রমিক নম্বর ৬৪। এই দুজনকে নতুন করে তালিকায় স্থান দেয়া হয়েছে। যাতে করে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম আসায় বয়েন উদ্দিন খামারুর মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে নাম বাতিলের দাবিতে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক, দুর্গাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দপ্তরের লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আলামিন হোসেন।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৩ | সময়: ৫:০৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর