এলপিজির মুনাফাখোরদের আর ছাড় নয়

সানশাইন ডেস্ক: বাজারে এলপিজির দাম সরকার নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু ভোক্তা সেই দামে এলপিজি পায় না। ডিলার, পাইকারি আর খুচরা ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা করার প্রবণতায় ঠকছে গ্রাহক। দীর্ঘদিন থেকে এমন অভিযোগ করা হলেও কোনও ফল হচ্ছিল না। এবার বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সরাসরি মাঠে নেমেছে। কমিশন চেয়ারম্যান হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, পাইকারি বিক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা অথবা কোম্পানি—যেই বেশি দাম নেবে তাকেই জরিমানা করবো।
সম্প্রতি এই অভিযান শুরু করেছে তারা। প্রতিমাসে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দেয় কমিশন। কিন্তু বাজারে বেশিরভাগ সময় নির্ধারিত দামে এলপিজি পাওয়া যায় না। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এবার মাঠে নেমেছে তারা। শনিবার গাজীপুরে একজন খুচরা এবং একজন পাইকারি দোকানদারকে জরিমানা করেছে বিইআরসি গঠিত কমিটি। গত কয়েক দিনে ৬ জনকে জরিমানা করা হয়। গত সপ্তাহে নারায়ণগঞ্জে দুইজনকে, আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহে চাঁদপুরে দুইজনকে জরিমানা করেছে তারা।
বিইআরসি নির্ধারিত দাম পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা মানছে না। তারা নিজেদের মতো করে গ্রাহকদের কাছ থেকে দাম আদায় করছে। এজন্য বিইআরসির একটি মনিটরিং কমিটিও রয়েছে। চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, এখন থেকে নিয়মিতভাবেই আমরা অভিযান পরিচালনা করবো। পাইকারি বিক্রেতা, খুচরা বিক্রেতা অথবা কোম্পানি—যেই বেশি দাম নেবে তাকেই আমরা জরিমানা করবো। আজকেও দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে। মানুষ যদি আইনকানুন না মানে তাহলে কঠোর না হয়ে উপায় কী। তিনি জানান, আমরা এই কাজের জন্য একটি কমিটি করেছি। এই কমিটি নিয়মিত অভিযান শুরু করেছে। একইসঙ্গে আমরা ভোক্তা অধিকারকে চিঠি দিয়েছি তারাও যেন অভিযানে নামে। এ ছাড়া ডিসিদের মাধ্যমেও প্রতিটি জেলায় বিইআরসি ঘোষিত দাম বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেশি দামে বিক্রি করায় ইতোমধ্যে ইউনাইটেড, বসুন্ধরা, ওমেরা ও প্রিমিয়ার এলপিজি কোম্পানিকে শোকজ করেছি। তারা জবাব দেওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের শুরুতে আদালতের নির্দেশে কমিশন এলপিজির দাম নির্ধারণে গণশুনানি করে। এরপর ওই বছরের এপ্রিল মাসে প্রথমবারের মতো সরকারি-বেসরকারি এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দেয় কমিশন। বেসরকারিভাবে সৌদি সিপি (কন্ট্রাক্ট প্রাইস) অনুযায়ী বাংলাদেশ এলপিজি আমদানি করে। প্রতিমাসেই বদলে যায় এই দাম। সেই দামের ওপর নির্ভর করে চলতি মাস পর্যন্ত প্রতিমাসেই এলপিজির দাম নির্ধারণ করে দেয় কমিশন।
সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর এই দাম ঘোষণা করে তারা। প্রতি কেজি এলপিজির দাম ১০৭ টাকা ০১ পয়সা হিসেবে ১২ কেজি সিলিন্ডারের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১২৮৪ টাকা, যা আগস্ট মাসে ছিল ১১৪০ টাকা। এর আগের মাসে অর্থাৎ গত জুলাই মাসে ছিল ৯৯৯ টাকা। অপরদিকে একইভাবে অটোগ্যাসের দামও বাড়ানো হয়েছে। ৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) হল রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে সেপ্টেম্বর মাসের জন্য নতুন এ দাম ঘোষণা করা হয়-যা ওইদিন থেকেই কার্যকর হয়েছে।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৩ | সময়: ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ