সোমবার, ৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
তানোর প্রতিনিধি :
রাজশাহীর তানোর পৌরসভায় অবস্থিত কালিগঞ্জহাট। এই হাটটি প্রতি মঙ্গলবার ও শুক্রবার বসে। সেই নিয়ম অনুযায়ী আজ (৫ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার ভোরে হাট বসে। কিন্তু টোল বা খাজনা আদায়ের নামে হাট ইজারাদারের ব্যাপক চাঁদাবাজিতে ব্যবসা বন্ধ করে পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা ধর্মঘটে বসে। এতে ক্রেতা ও বিক্রেতারা উভয় সংকটে বিপাকে বেকায়দায় পড়ে। এক পর্যায়ে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে ইজারদারের লোকজনকে মারার জন্য তেড়ে ধরে। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি ইউএনওকে মোবাইলে অবগত করে। ইউএনও ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি বেগতিক লক্ষ্য করে ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী টোল আদায়ের নির্দেশ দেন হাট ইজারাদারকে। এহেন নির্দেশ মোতাবেক ব্যবসায়ীরা ধর্মঘট তুলে নিলে সকাল ১০টার দিকে হাটে কেনা বেচা স্বাভাবিক ও শান্ত হয়।
জানা গেছে, তানোর পৌরসভা এলাকাজুড়ে তানোর সদর গোল্লাপাড়া, তালন্দ ও কালিগঞ্জহাট মিলে ৩টি হাটবাজার রয়েছে। এরমধ্যে কালিগঞ্জহাট ও বাজার পৌরসভার অন্যতম আয়ের উৎস। এই হাটবাজার প্রতিবছর পয়লা বৈশাখ থেকে ৩০ চৈত্র পর্যন্ত এক বছরের জন্য নিলাম বা ইজারা দেওয়া হয়। এবারে হাটটি প্রায় ৫২ লাখ টাকায় নিলামে নিয়েছেন কালিগঞ্জহাট এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা মৃত আনিসুর রহমানের পুত্র মো: মিজানুর রহমান রনি।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছর এই হাটটি ইজারা নিয়েছিলেন বুরুজ গ্রামের বাসিন্দা রামিল হাসান সুইট ও চাপড়া গ্রামের আয়েন উদ্দিন। সুইট বর্তমানে রাজশাহী শহরের বাসিন্দা। তিনি হাট ইজারার আয়করের সাড়ে ৭ লাখ টাকা আজও দেননি। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর দেবেন বলে মেয়রের কাছে সময় নিয়েছেন।
এবিষয়ে পৌরসভার জিওল মহল্লার বাসিন্দা কুতুব উদ্দিন বলেন, তিনি মঙ্গলবার সকালে সংসারের চাহিদা মোতাবেক তরি তরকারি কেনার জন্য কালিগঞ্জহাটে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন পটল ও বিভিন্ন তরকারি পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা কেনা বেচা বন্ধ করে ধর্মঘটে বসে আছেন। পরে সবজি পট্টিতে হৈচৈ শুরু হয়। ইজাদারের টোল আদায়কারী লোকজন প্রতিমণ পটলে পাইকারি ক্রেতার কাছ থেকে ৩০ টাকা ও বিক্রেতার কাছ থেকে ৫০ টাকা সর্বমোট ৮০ টাকা আদায় করে। টোলের নামে এভাবে এতো টাকা চাঁদা দিতে না চাইলে টোল আদায়কারী লোকজন ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে তর্কবিতর্কের এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি হয়। তিনি এসব দেখে দিশেহারা হয়ে তানোর সদরের গোল্লাপাড়া হাটে বাজার করেন। একই তথ্য জানান মুদি দোকানি ধলা। তবে, হাটইজারাদার মিজানুর রহমান রনির মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও রিসিভ হয়নি।
এনিয়ে তানোর পৌসভার মেয়র ইমরুল হক বলেন, খাজনা আদান প্রদানে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়। বিষয়টি তিনি জেনে সমাধানের উদ্যোগ নেন। তবে, হাট-ইজারাদার নিয়মের বাইরে টোল আদায় করলে বিধিমতে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর সুইট ও আয়েন গত বছরে হাট ইজারার আয়করের সাড়ে ৭ লাখ টাকা আজও দেননি। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর আয়করের টাকা দেবেন বলে সময় নিয়েছেন।
এব্যাপারে তানোর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিল্লাল হোসেন বলেন, কালিগঞ্জহাটে ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট নয়, অতিরিক্ত টোল আদায় নিয়ে পাইকারি ও খুচরা কেনা বেচা কিছুক্ষণ বন্ধ ছিল। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে সব জেনে যেভাবে ভাল হয়, সেভাবে সমাধান করা হয় বলে এড়িয়ে গেছেন ইউএনও।
সানশাইন/সোহরাব