চারদফা জানাযা শেষে সমাহিত হলেন এমপি আব্দুল কুদ্দুস

বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি: চার দফা জানাযা নামাজ শেষে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক প্রতিমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনের পাঁচ বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয়, দুপুর ১২ টায় গুরুদাসপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে তৃতীয় এবং তাঁর নিজ গ্রাম গুরুদাসপুরের বিলসা ঈদগাহ মাঠে ৪র্থ দফা জানাযার নামাজ শেষে তার লাশ দাফন করা হয়। এর আগে বুধবার দুপুরে ঢাকায় ন্যাম ভবনের সামনে তাঁর প্রথম জানাযার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
বড়াইগ্রাম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাযার পূর্বে ইউএনও মারিয়াম খাতুনের নেতৃত্বে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এরপর ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু এমপি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক ও নাটোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান, শফিকুল ইসলাম শিমুল এমপি, মরহুমের মেয়ে যুব মহিলা লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি ও একমাত্র ছেলে জেলা আওয়ামীলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহ শোভন এবং বড়াইগ্রাম পৌর মেয়র মাজেদুল বারী নয়ন বক্তব্য রাখেন।
তাঁর জানাযার নামাজে শহিদুল ইসলাম বকুল এমপি, জেলা প্রশাসক আবু নাসের ভূঁঞা, পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম পিপিএম, সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, বড়াইগ্রাম, গুরুদাসপুর ও লালপুর উপজেলা চেয়ারম্যান যথাক্রমে ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, আনোয়ার হোসেন ও ইসাহাক আলী, গুরুদাসপুর পৌর মেয়র শাহনেওয়াজ আলী মোল্লা, বনপাড়া পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন, সাবেক এমপি আবুল কাশেম সরকার, গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম, বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মিয়াজী ও সম্পাদক মিজানুর রহমান, গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনিসুর রহমানসহ হাজার হাজার মুসল্লীরা অংশ নেন। এ সময় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বেগম আখতার জাহান ও গোপালপুর পৌর মেয়র রোখসানা মোর্ত্তজা লিলি উপস্থিত ছিলেন।
জানাজার পূর্বে জেলা প্রশাসন, জেলা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা ও উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অন্যান্য অঙ্গ প্রতিষ্ঠান, প্রেসক্লাব, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষেরা তাঁর মরদেহে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। তাঁর মৃত্যুতে বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুরসহ গোটা জেলা জুড়ে শোকাবহ পরিবেশ নেমে আসে। এ দুই উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা স্বেচ্ছায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে তাঁর জানাযায় অংশ নেন।
তাছাড়া হাট-বাজার ও দোকানপাট অঘোষিতভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তাঁর প্রতিটি জানাজায় আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামায়াত-জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দসহ দল-মত নির্বিশেষে সব শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।
এদিকে, তাঁর মৃত্যুতে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, নাটোর প্রেসক্লাব সভাপতি ফারাজী আহমদ রফিক বাবন, সহ-সভাপতি শহীদুল হক সরকার ও সাধারণ সম্পাদক বাপ্পী লাহিড়ী, নাটোর ইউনাইটেড প্রেসক্লাব সভাপতি রেজাউল করিম ও সম্পাদক এসএম কামাল, ইউনিক প্রেসক্লাব সভাপতি দেবাশীষ রায় ও সম্পাদক বুলবুল আহমেদ এবং বড়াইগ্রাম উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি অহিদুল হক, সম্পাদক আব্দুল মান্নান ও যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ আলী গাজী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
গত বুধবার সকাল ৭টা ২২ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপি মারা যান। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আব্দুল কুদ্দুস বৃহত্তর রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, রাজশাহী কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি, রাজশাহী জেলা আ’লীগের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এবং রাজশাহী মহানগর আ’লীগের সম্পাদক ছিলেন।
তিনি সর্বশেষ নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। সাত বার মনোয়ন পেয়ে পঞ্চম, সপ্তম, নবম, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। ৭ম জাতীয় সংসদে তিনি মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সদস্যও ছিলেন।


প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২৩ | সময়: ৫:০৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর