কর্মশালায় তথ্য : তিনশ মিটার গভীরেও মিলছে না পানি

কামরুজ্জামান বাবু, পোরশা: প্রতি বছরই বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির স্তর অস্বাভাবিক হারে নিচে নামছে। কমেছে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ। কৃষিতেও পড়েছে বিরূপ প্রভাব। শস্য ও দানাজাতীয় আবাদের বিপ্লব ঘটানো বরেন্দ্র অঞ্চলে ব্যাপক হারে গড়ে উঠছে ফলের বাগান। চাষবাদে পরিবর্তন আসলেও কমছে না ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যবহার। খাওয়া থেকে শুরু করে চাষবাদে সব জায়গায় ব্যবহার হচ্ছে ভূ-গর্ভস্থ পানি। দিন যতোই যাচ্ছে জীবন হয়ে পড়ছে বিপর্যস্ত, বিশেষজ্ঞরাও উদ্বিগ্ন। বরেন্দ্র অঞ্চলের পোরশা উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় এ সংকট দিনে দিনে চরমে উঠতে শুরু করেছে।
পোরশা উপজেলার ছাওড়, তেঁতুলিয়া ও গাঙ্গুরিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গায় পরীক্ষামূলক খনন করে দেখা যায় ৩০০ মিটারের মধ্যে খুব ভালো পানির স্তর পাওয়া যায়নি। কোথায় পানি নেই, আবার কোথাও মিলিছে পানির পকেট স্তর। ওয়াটার রিসোর্স প্লানিং অরগানার্জেশন এ পরীক্ষাগুলো চালিয়েছে।
নওগাঁর পোরশায় ভূ-গর্ভস্থ পানির বর্তমান অবস্থা ও করণীয় শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ও ডাসকো সমন্বিত পানি সম্পদ ব্যাবস্থাপনা (আইডাব্লুউআরএম) প্রকল্প এর সহায়তায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় এ তথ্য উঠে আসে। এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সালমা আক্তার।
কর্মশালায় উপস্থিত ডাসকোর এরিয়া সমন্বয়কারী খাইরুল ইসলাম জানান, দিনে দিনে পোরশা অঞ্চলে পানির স্তর যেভাবে নিচে নেমে যাচ্ছে তা চিন্তার বিষয়। অল্প কিছুদিন আগেই পোরশা উপজেলার বেশির ভাগ জায়গায় ৮০ থেকে ১০০ ফিটের মধ্যে পানির স্তর পাওয়া যেত। এখন তা বেড়ে দ্বিগুনের বেশি হয়েছে। এখন পোরশা উপজেলায় খাবার পানির জন্য যেসব সাব মার্সেবল পাম্প বসানো হয় তা ৪৫০ থেকে ৪০০ ফিট গভীবে।
তিনি আরো জানান, পোরশা উপজেলায় যে মাটির গুনগত মান, তাতে বৃষ্টির পানি দিয়ে রিচার্জ ক্ষমতা কম। তাই যে পরিমানে পানি উত্তোলন করা হয় সে পারিমানে পানি রিচার্জ হচ্ছে না। ক্রমেই নেমে যাচ্ছে পানির স্তর।
প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ শাহ্ মঞ্জুর মোরশেদ চৌধুরী। কর্মশালায় উপজেলার ভূ-গর্ভস্থ পানির বর্তমান অবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়। এই সমস্যার সমাধানে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য পানি সম্পদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পানি অপচয় রোধ, ভূ-গর্ভস্থ পানির কম ব্যাবহার এবং ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার বৃদ্ধির উপরে জোর দিতে হবে।
পাশাপাশি জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি ও মানুষকে সচেতন হতে হবে বলেও মনে করছেন তারা। কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান কাজীবুল ইসলাম ও মমতাজ বেগম, ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ডাসকো ফাউন্ডেশনের ম্যানেজার ইসরাত জাহান, ডাসকোর সহকারী প্রকল্প সমন্বয়কারী আনোয়ারা বেগম, এরিয়া সমন্বয়কারী খাইরুল ইসলাম, আইডাব্লিউআরএম কমিউনিটি মবিলাইজার সুপলাল মুর্মু, গোলাম রাব্বানী ও সেলিনা ইয়াসমিন, ইউপি চেয়ারম্যান, বিভিন্ন কর্মকর্তাবৃন্দসহ ৬৫ জন রিসোর্স পার্সন।


প্রকাশিত: আগস্ট ৩১, ২০২৩ | সময়: ৫:২০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ