এবার আতপ চালে ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ ভারতের

সানশাইন ডেস্ক: এবার আতপ চালের ওপর ২০ শতাংশ রপ্তানি শুল্ক আরোপ করেছে ভারত। এর আগে গত মাসে বাসমতি চাল ব্যতীত সব ধরনের সেদ্ধ চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলো প্রতিবেশী দেশটি। স্থানীয় সময় শুক্রবার ভারতের কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এক নির্দেশনায় রপ্তানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেওয়া হয়। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক দেশ ভারতের এই পদক্ষেপের ফলে সারাবিশ্বে চাল সরবরাহ কমে যেতে পারে এবং চালের দাম আরও বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে যে দামে চাল বিক্রি হচ্ছে, তা গত ১২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। গত মাসে সেদ্ধ চাল রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বব্যাপী চালের দাম ২৫ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। তবে গত কয়েকদিনে তা কিছুটা কমে আসলেও নতুন করে শুল্ক আরোপের কারণে দাম আবারও বাড়বে।
গত ২০ জুলাই বাসমতি ব্যতিত সব ধরনের চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় ভারত। মূলত অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। এর প্রভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় ভারতীয় চালের সংকট দেখা দেয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, মানুষ আতঙ্কিত হয়ে চাল কিনছেন। যার প্রভাবে বেড়ে গেছে এ পণ্যের দামও।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ চাল রপ্তানিকারক দেশ হলো ভারত। বিশ্বের মোট চাহিদার ৪০ ভাগই আসে এ দেশ থেকে। চাল রপ্তানির শীর্ষে থাকা অন্য দেশগুলো হলো থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর, অর্থাৎ ২০২২ সালে ভারত ২ কোটি ২০ লাখ টন চাল রপ্তানি করে। এছাড়া গত বছর ভারত ৭৪ লাখ টন আধা সেদ্ধ চাল রপ্তানি করেছে।
আতপ চালে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ শুল্কি আরোপের ফলে আন্তর্জাতিক বাজারে ভারতীয় আতপ চালের দাম এখন থাইল্যান্ড ও পাকিস্তানের চালের সমপর্যায়ে চলে যাবে। তাই বেশি দামে চাল কেনা ছাড়া ক্রেতাদের সামনে আপাতত আর কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। ভারত এখন বাসমতি ছাড়া সব ধরনের চালের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। কিন্তু আফ্রিকা এবং এশিয়ার দরিদ্র লোকজন এধরনের চালই বেশি কেনে। এখন এসব ক্রেতারা বেশ বিপাকে পড়ে যাবেন।
এদিকে ভারতের পর চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে মিয়ানমার। আগামী দেড় মাস এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে বলে জানিয়েছে দেশটির চাল ব্যবসায়ী ও রপ্তানিকারীদের সংগঠন মিয়ানমার রাইস ফেডারেশন (এমআরএফ)। এ প্রসঙ্গে এআরএফের এক জেষ্ঠ্য সদস্য বলেন, অভ্যন্তরীণ বাজার স্থিতিশীল রাখতে কিছু দিনের জন্য চাল রপ্তানি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের শেষ থেকে আগামি ৪৫ দিন এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচারের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমার বিশ্বের পঞ্চম বৃহৎ চাল রপ্তানিকারী দেশ। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, প্রতি বছর বিভিন্ন দেশে ২০ লাখ টন চাল রপ্তানি করে মিয়ানমার।


প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৩ | সময়: ৫:০২ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ