ডেঙ্গু: আক্রান্ত, মৃত্যুর সংখ্যায় ভয়াবহ অগাস্ট

সানশাইন ডেস্ক: ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে চলতি অগাস্ট মাস। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৪ হাজার ৫৯৭ জন। দেশে এর আগে কেবল ২০১৯ সালের অগাস্টে ৫২ হাজার ৬৩৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল।
এ মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২৫৫ জনের। এর আগে ২০২২ সালের নভেম্বরে ১১৩ জনের মৃত্যু হয়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে। অগাস্ট মাস শেষ হতে আরও এক সপ্তাহ বাকী, এরমধ্যেই আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে ডেঙ্গু। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে আরো ২০৭০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত। এ সময় মারা গেছে ১৩ জন।
নতুনদের নিয়ে এ বছর মোট ১ লাখ ৬ হাজার ৪২৯ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫০৬ জনের। ভর্তি এবং মৃত্যুর এই সংখ্যাও অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, নতুনদের মধ্যে ঢাকায় ৮৫৭ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ১২১৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। মৃত ১৩ জনের মধ্যে ঢাকায় ৮ জন এবং ঢাকার বাইরে ৫ জন।
বর্তমানে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৭ হাজার ৮২৫ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে ঢাকায় ৩৫৮০ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলায় ৪২৪৫ জন। এ বছর ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্রুত বাড়ছে। জুন মাসে যেখানে পাঁচ হাজার ৯৫৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, জুলাই মাসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮৫৪ জনে। আর অগাস্টের ২৩ দিনে ৫৪ হাজার ৫২৭ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। মাসের হিসাবে, জানুয়ারিতে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন, মে মাসে এক হাজার ৩৬ জন, জুন ৫ হাজার ৯৫৬ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
জুনে সারাদেশে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। জুলাইয়ে ২০৪ জনের মৃত্যু হয়। অগাস্টের ২৩ দিনে সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে, এ মাসে মৃত্যু হয়েছে ২৫৫ জনের। আর জানুয়ারিতে ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এ্প্িরলে ২ জন, মে মাসে ২ জন এবং জুনে ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে।
এ বছর এইডিস মশা শনাক্তে চালানো জরিপে ঢাকায় মশার যে উপস্থিতি দেখা গেছে, তাকে ঝুঁকিপূর্ণ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ অবস্থায় সামনে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়ার আশঙ্কা করেছেন তারা। ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ বছর যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের প্রায় সবাই ডেঙ্গু হেমোরেজিক ফিভারে ভুগছিলেন এবং শক সিনড্রোমে মারা গেছেন।
এইডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এর আগে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। সরকারি হিসাবে সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৭৯ জনের।


প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৩ | সময়: ৪:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ